যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন মাস্ক? (ভিডিও)
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের সম্পর্কটা যেনো পুরোনো হলিউড সিনেমার মতো। বন্ধুত্ব আছে আবার দ্বন্দ্বও আছে। কিন্তু এরপরও সবসময় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন তারা। ২০১৬ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। তবে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের ভোট দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত হন মাস্ক। এমনকি ট্রাম্প তাকে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’–র প্রধান পদেও নিয়োগ দেন।
তবে সম্প্রতি ট্রাম্প ও মাস্কের সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে অবনতি ঘটেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দায়িত্ব থেকে ইলন মাস্ক পদত্যাগের পর রীতিমত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন তারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইলন মাস্ককে কটাক্ষ করে বলেছেন, তার সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ। এমনকি মাস্কের প্রতিষ্ঠান টেসলাকে আর সরকারি ভর্তুকি না দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। তবে ইলন মাস্কও হাল ছাড়বার পাত্র নন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের দুই দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিলেন মাস্ক।
গত ৫ জুন মাস্ক তার সামাজিক মাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি জরিপ চালান। তিনি ২২ কোটি অনুসারীর কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘আমেরিকায় এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সময় কি এসেছে, যা আসলে মাঝামাঝি অবস্থানরত ৮০ শতাংশ মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করবে?
মাস্কের এই জরিপে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোটার এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন। পরদিন মাস্ক জানান, তার নতুন দলটির সম্ভাব্য নাম হতে পারে: ‘দ্য আমেরিকা পার্টি'। এই নামটি তার গঠিত সুপার পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি বা ‘আমেরিকা পিএসি’-এর সঙ্গেও মিলে যায়। যা ২০২৪ সালে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে গঠিত হয়েছিল। সেসময় প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী দাতাদের একজন হয়ে উঠেছিলেন মাস্ক।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন সহজ কাজ নয়। নতুন দলের জন্য অঙ্গরাজ্যভিত্তিক জটিল নিয়ম পেরিয়ে প্রার্থিতা নিশ্চিত করতে হয়। প্রতিটি রাজ্যে নতুন দলকে ভোটের ব্যালটে নাম লেখানোর জন্য কঠোর নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। যা একইসাথে সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল।
১৯১২ সালে থিওডোর রুজভেল্টের -'প্রগ্রেসিভ পার্টি' তৃতীয় দল হিসেবে সবচেয়ে সফল হয়েছিলো। দলটি মোট ভোটের প্রায় ২৭% পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলো। ১৯৬৮ সালে জর্জ ওয়ালেস আমেরিকান ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্টির প্রার্থী হিসেবে পাঁচটি রাজ্যে বিজয়ী হন। ১৯৯২ সালে রস পারোট স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে ১৯% ভোট পান, কিন্তু কোনো নির্বাচনী ভোট পাননি। ১৯৯৬ সালের পর থেকে কোনো তৃতীয় দলীয় প্রার্থী ৫% এর বেশি জাতীয় ভোট পাননি।
মাস্কের বিপুল সম্পদ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় দল হিসেবে সফল হওয়ার ঘটনা খুবই দুর্লভ। ফলে অনলাইনে ব্যাপক সাড়া পেলেও মাস্কের এই অভিপ্রায় বাস্তবে আলোর মুখ দেখবে কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: