• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

কোন প্রযুক্তিতে ইসরাইল নাগাল পাচ্ছে ইরানের শীর্ষ কমান্ডারদের, খুঁজছে খামেনিকে? (ভিডিও)

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ১৭ জুন ২০২৫

আপডেট: ২০:৪৫, ১৭ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ

সম্প্রতি ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন মোড় নিয়েছে। ইসরায়েল যেভাবে ইরানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিখুঁতভাবে খুঁজে বের করে লক্ষ্যবস্তু করছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠছে, কোন প্রযুক্তি এবং কৌশলের মাধ্যমে ইসরায়েল এই অসম্ভবকে সম্ভব করছে? 

চলমান সংঘাতে ইরানের শীর্ষ ১৫ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে ইসরাইল। ইসরাইলীদের নিখুঁত এই ছকে বেডরুমে অবস্থানকারী সেনাপ্রধানও রক্ষা পাননি। সোমবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ইরানের সর্ব্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির হত্যাই এই সংঘাতের শেষ। এখন প্রশ্ন: খামেনিকেও কি খুঁজে বের করবে পারবে ইসরাইল? যদি সম্ভব হয়, তাহলে কিভাবে? কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসরাইলীরা এমন নির্ভুল লক্ষ্যবস্তু নির্ণয় করছে? 

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ কাজে ইসরায়েল ব্যবহার করছে একটি বহুমাত্রিক প্রযুক্তিগত কাঠামো—যেখানে সিগন্যালস ইন্টেলিজেন্স (SIGINT), স্যাটেলাইট নজরদারি, সাইবার গোয়েন্দাগিরি এবং ম্যান-মেইড অপারেশন একত্রে কাজ করছে। 

                                        এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ইসরাইলীদের ব্যবহৃত প্রযুক্তি:

(ইউনিট ৮২০০): তথ্যের ভান্ডার

বিশ্বজুড়ে তথ্য গোয়েন্দাগিরিতে ইসরাইলের “ইউনিট ৮২০০” সমধিক পরিচিত। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ইন্টেলিজেন্স শাখার অধীনে পরিচালিত এই ইউনিটটি মূলত সিগন্যালস ইন্টেলিজেন্স (SIGINT) ও সাইবার অপারেশনস চালানোর জন্য গঠিত, কিন্তু বাস্তবে এটি একটি প্রযুক্তিনির্ভর গুপ্তচর বাহিনী। ইউনিট ৮২০০ মোবাইল কল, ইমেইল, রেডিও সিগন্যাল, স্যাটেলাইট যোগাযোগ—সবকিছু নজরে রাখে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা চিহ্নিত করে সম্ভাব্য হুমকি, শত্রুদের অবস্থান ও তাদের পরিকল্পনা। ইউনিট ৮২০০ তাদের বিশাল তথ্য ভাণ্ডার বিশ্লেষণে ব্যবহার করে উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং মেশিন লার্নিং। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ফোনকল ও মেসেজ স্ক্যান করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সন্দেহজনক কথোপকথন বা বিপজ্জনক পরিকল্পনা সনাক্ত করে ইসরাইল। এই ইউনিট শুধু নজরদারিই নয়, প্রয়োজনে বিদেশি সাইবার নেটওয়ার্ক হ্যাক করতেও সক্ষম। বলা হয়ে থাকে, ইরানের পরমাণু প্রকল্পে নাশকতা চালানো ‘Stuxnet’ ম্যালওয়্যার অপারেশনেও ইউনিট ৮২০০ জড়িত ছিল।

স্যাটেলাইট ও ড্রোন নজরদারি:

ইসরাইল ‘Ofek’ সিরিজের উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, গোপন মিটিং ও গতিবিধি নজরে রাখা হয়। একই সঙ্গে উচ্চ ক্ষমতার ড্রোন এবং ডেটা-সংগ্রাহক (unmanned arial vehicle) বা UAV দিয়ে নিরব্বিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ চালায়। 

আইএসআর প্রযুক্তি:

ISR (Intelligence, Surveillance, and Reconnaissance) এমন একটি প্রযুক্তি যা ইন্টেলিজেন্স, নজরদারি এবং গোয়েন্দা তথ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়। ISR বিভিন্ন উৎস থেকে ডেটা সংগ্রহ করে সেই ডেটা বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর মধ্যে সেন্সর, ক্যামেরা, রাডার, এবং অন্যান্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোনো পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা, তথ্য সংগ্রহ করা এবং বিশ্লেষণ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয় ইসরাইলীরা। 

মানব গোয়েন্দা (HUMINT):

ইরানের অভ্যন্তরে ইসরায়েলের গভীর অনুপ্রবেশ এই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানের ভেতরে এজেন্ট ও সহযোগী তৈরি করেছে। এই মানব গোয়েন্দা তথ্য ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গতিবিধি, বাসস্থান, এবং গোপন বৈঠকের স্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। এমনকি, ইরানের সরকারবিরোধী নাগরিকদেরও গোয়েন্দা কার্যক্রমে ব্যবহার করার খবর রয়েছে। এই দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি ইসরায়েলকে তাদের লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করে। ইসরায়েল ইরানের ভেতরে দূরনিয়ন্ত্রিত আক্রমণ প্ল্যাটফর্ম, যেমন বিস্ফোরক ডিভাইস এবং অস্ত্র ব্যবস্থা স্থাপন করেছে বলে জানা যায়। এই ডিভাইসগুলো অত্যন্ত নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ব্যবহৃত হয়। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) এবং মোসাদ এই জটিল অভিযানগুলো কার্যকর করার জন্য সমন্বয় সাধন করে।

সম্মিলিত যুদ্ধ কৌশল:

সিগন্যালস ইন্টেলিজেন্স থেকে শুরু করে স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ, ড্রোন নজরদারি, এবং মাঠপর্যায়ের গুপ্তচরবৃত্তি—সব মিলিয়ে তৈরি হয় এক নিখুঁত অপারেশন প্ল্যান। তারপর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরু হয় আকাশপথে বা মাটির নিচে নিখুঁত হামলা। বিশ্লেষকদের মতে, এই পূর্ণাঙ্গ প্রযুক্তিগত কাঠামোর কারণে ইসরায়েল আজ বিশ্বের অন্যতম কার্যকর টার্গেট হান্টিং নেশনে পরিণত হয়েছে। 

বিভি/ এসআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2