• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

ইসরাইল ও পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে কে এই খামেনি?

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ১৮ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৩:৫৬, ১৮ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ইসরাইল ও পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে কে এই খামেনি?

ছবি: সংগৃহীত

ইরান ও ইসরাইলের সংঘাত বর্তমানে এক চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইরানের নেতৃত্বে রয়েছেন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তবে কে এই খামেনি, যিনি দীর্ঘদিন ধরে জায়োনিস্ট শক্তি ও সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরোধিতায় দৃঢ় অবস্থান নিয়ে আসছেন? জনসমক্ষে খুব বেশি না এলেও, তিনিই ইরানের সামরিক ও কূটনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রধান নীতিনির্ধারক। ইসলামি বিপ্লবের আদর্শ ও ধর্মভিত্তিক শাসনব্যবস্থার ধারক হিসেবে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইরানের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন। তাঁর নেতৃত্বেই পশ্চিমা বিশ্বের রাজনৈতিক ও সামরিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব গ্রহণ করেছে ইরান।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ১৯৩৯ সালের ১৯ এপ্রিল একটি সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাশহাদের এক সাধারণ শিয়া আলেম পরিবারের সন্তান। ধর্মীয় শিক্ষার জন্য তিনি খোরাসান, নাজাফ এবং কুম শহরে অধ্যয়ন করেছেন। কুম শহরে ধর্মীয় ছাত্র হিসেবে শিয়া ইসলাম ও আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেইনির বিপ্লবী ভাবধারায় গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন তিনি। 

মোহাম্মদ রেজা পাহলভীর শাসনামলের সময় তিনি বিভিন্ন প্রতিবাদ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যার ফলে তাকে অনেকবার গ্রেপ্তার ও নির্বাসিত হতে হয়েছিল। ইরান ইরাক যুদ্ধের সময় তিনি ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড কর্পস-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৮১ সালে তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেইনির মৃত্যুর পর ১৯৮৯ সালে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ঠিক তখন থেকেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি দেশের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামরিক ও সব দিকেই সর্বোচ্চ ক্ষমতা ধারণ করেন। ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এবং কুদস ফোর্সের নিয়ন্ত্রণ তাঁর হাতে থাকায় তিনি আঞ্চলিক স্তরে শক্তিশালী প্রভাব ধরে রাখার চেষ্টাও করে থাকেন।

এদিকে লেবানন, ইয়েমেন এবং অন্যান্য প্রক্সি সংগঠনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সক্ষমতা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। এই কৌশলের মাধ্যমে ইরান আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টায় সক্ষমতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। 
 
অন্যদিকে ইরানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেও তাদের দমিয়ে রাখতে পারছেনা যুক্তরাষ্ট্র। নিজেই আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে ইরান, যেখানে অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো শুধুই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে চলছে। সম্প্রতি খামেনিকে উদ্দেশ্য করে সম্ভাব্য হত্যার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। 

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গাজায় ইসরাইলের হামলার পর ইরান ও ইসরাইলের উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ইসরাইল যখন গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, তখন অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া ছিল বেশ হতাশাজনক। তবে অন্যদিকে একমাত্র ইরানই তার মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দ্বারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বাকিরা কেবল মুখে প্রতিবাদ জানিয়ে বা আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েই দায়িত্ব সাড়ে। এর মধ্যেই গাজায় ইসরাইলি হামলায় বিপুলসংখ্যক নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

এদিকে বর্তমান ইরান ইসরাইল সংঘাতে সরাসরি যুক্ত হওয়ার পথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অনেকটা সেইভাবে, যেভাবে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ. বুশ মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ চালিয়েছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরান ও ইসরাইলের চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি বিবেচনায় রেখেছেন।

এদিকে ট্রাম্প ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণও দাবি করেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিষয়ে ইঙ্গিত করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে হুমকি দিয়ে বলেন, তারা ঠিক জানেন তথাকথিত সর্বোচ্চ নেতা কোথায় লুকিয়ে আছেন। তবে এখনই তাকে হত্যা করা হবে না বলেও যোগ করেন তিনি।

তবে ট্রাম্পের এই হুমকিতে ভয় পাননি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ইরান কখনও জায়োনিস্টদের সঙ্গে আপস করবে না। এক্সে তাঁর অফিসিয়াল প্রোফাইল থেকে প্রকাশিত এক পোস্টে জানানো হয়, জায়োনিস্টদের প্রতি কোনও সহানুভূতি নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্প আলী খামেনির অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করলে তিনি এ বিষয়ে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানান।

বিভি/আইজে

মন্তব্য করুন: