ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে চান না পুতিন

ছবি: সংগৃহীত
দুই প্রান্তের দুই শক্তি—একদিকে প্রাচীন পারস্যের উত্তরাধিকার, অন্যদিকে আগ্রাসিভাবে গড়ে ওঠা ইসরাইলি দখলদার। ইরান ও ইসরাইলের দ্বন্দ্ব যেন মধ্যপ্রাচ্যের বুকে জমে থাকা এক প্রাচীন অগ্ন্যুৎপাতের মতো উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে ইসরাইল আধুনিক এফ-৩৫১ যুদ্ধবিমানের সহায়তায় ইরানের রাজধানী তেহরানসহ করাজ এবং আরাক-খন্ডাব অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় হেভি ওয়াটার রিঅ্যাক্টরসহ অন্যান্য কৌশলগত অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়।
এই অভিযানে ইসরাইলের প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। এদিকে আরাক ও খন্ডাবের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোর সাধারণ বাসিন্দাদের এলাকা দ্রুত খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।
অন্যদিকে জেরুজালেম ও তেল আবিবে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইসরাইলকে পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরান। এসব হামলায় ইসরাইলে কমপক্ষে ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরাইলের চালানো হামলায় ইরানে ৬৩৯ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আরও প্রায় ১,৩০০ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে, এই যুদ্ধে ইরানকে পরাজিত করতে গভীর আগ্রহ প্রদর্শন করেছে ইসরাইলের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে রাশিয়া ও চীনকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মনে করা হয় ইরানের। ফলে এই বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে, রয়টার্সের তথ্যমতে, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার সম্ভাবনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় খামেনিকে হত্যা করলে তিনি কী প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, এর জবাবে পুতিন বলেন, তিনি এই ধরনের পরিস্থিতি নিয়ে কোনো আলোচনা করতে আগ্রহী নন। আরও চাপ প্রয়োগ করা হলে তিনি বলেন, এ-সম্পর্কে শুনেছেন তিনি, তবে আলোচনায় যেতে চান না।
ইরানের শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পুতিন বলেন, কোনো উদ্যোগ নেওয়ার আগে এটা মূল্যায়ন করা জরুরি যে চূড়ান্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নযোগ্য কি না। তিনি আরও জানান, তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। মস্কোর পক্ষ থেকে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের অধিকারও সুরক্ষিত থাকে এবং ইসরাইলের নিরাপত্তাও অক্ষুণ্ণ থাকে।
রাশিয়া কি ইরানকে আধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করবে কি না—এই প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত রাশিয়া-ইরান কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তিতে সামরিক সহযোগিতার কথা অন্তর্ভুক্ত নেই, এবং এই বিষয়ে ইরানের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক অনুরোধও আসেনি। এর আগে রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করছে যেন তারা ইরানে কোনো ধরনের হামলা না চালায়।
এদিকে ইরানের রাজধানী তেহরানে টানা ছয় দিন ধরে চলা বিমান হামলার কারণে শহর ছাড়তে শুরু করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: