আইএইএ-র সাথে ইরানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: আরাঘচি
গত ২৫শে জুন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ-এর সাথে সহযোগিতা স্থগিত করার একটি বিল অনুমোদন করে ইরানের পার্লামেন্ট। যে বিলের মাধ্যমে আইএইএ-এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলো ইরান।
কিন্তু এক মাস না পেরোতেই নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসলো ইরান। ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছিলো, আইএইএ-এর পরিদর্শকরা শুধু ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমতি পেলেই দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু সেই সুর পালটে এখন ইরান বলছে, আইএইএ-র সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে দেশটি।
১২ জুলাই তেহরানে অবস্থিত বিদেশি মিশন প্রধান ও রাষ্ট্রদূতদের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। সেখানে তিনি বলেন, আইএইএ-এর সাথে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে কিন্তু তা হবে ‘নতুন রূপে’।
জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত থাকলে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও আলোচনায় ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন আরাঘচি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করে অসংখ্য বার্তা এসেছে উল্লেখ করে আরাঘচি বলেছেন, ইরানের জনগণের স্বার্থ এবং সুবিধা সুরক্ষিত থাকলে আলোচনায় কোনও ভয় বা দ্বিধা নেই তেহরানের। কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন এতো জলদি নিজেদের শক্ত অবস্থান থেকে সরে আসলো ইরান?
বিশ্লেষকদের মতে, বিভিন্ন কৌশলে হুমকি দেওয়া ইরানের রাজনৈতিক কাঠামোর একটি পরিচিত বৈশিষ্ট্য। ইরানি পার্লামেন্ট বহুবার এমন কড়া বিল পাস করেছে যেগুলো মূলত ছিল পশ্চিমাদের রাজনৈতিক বার্তা পাঠানোর হাতিয়ার। কিন্তু বাস্তবে সেগুলো কার্যকর হয়নি। এর আগে কাসেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ডের পর “সন্ত্রাসী আমেরিকা আইন” পাস করেছিলো ইরান। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও পেন্টাগনকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে সেটি ছিল একটি প্রতীকী আইন, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া এবং ইরানের জাতীয়তাবাদী আবেগকে শামাল দেওয়া।
এছাড়াও ইরান বর্তমানে তেল রপ্তানি, ব্যাংকিং এবং অর্থনীতির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপে আছে। এই মুহুর্তে আইএইএ-এর সাথে সহযোগিতা স্থগিত করলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও তীব্র সমালোচনা ও নতুন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তো ইরান। মাসুদ পেজেশকিয়ানের প্রশাসন এমন চাপ এড়িয়ে চলতে চাইছেন। ফলে বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, কূটনীতিকদের মাধ্যমে সম্ভবত কোনো সমঝোতার ইঙ্গিত পেয়েছে ইরান।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: