গাজাগামী সহায়তা জাহাজ আটক, ইসরাইলের হাতে রুদ্ধ ১২ দেশের ২১ নাগরিক

ছবি: সংগৃহীত
একদিকে ক্ষুধার কষ্ট, অন্যদিকে তাজা বোমার বিস্ফোরণ। ইসরাইল যেন গাজায় সমস্ত সীমা অতিক্রম করে দমন-পীড়নে মেতে উঠেছে। এদিকে ফ্রিডম ফ্লোটিলার হানডালা নামের একটি জাহাজ গাজায় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। তবে ইসরাইলি বাহিনী ওই জাহাজটি জব্দ করে নিয়েছে। জাহাজে থাকা ১২টি দেশের ২১ জনকে আটক করা হয়। এই জাহাজটি গাজায় আরোপিত অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করছিল।
গাজায় সহায়তা পাঠানোর প্রচেষ্টায় থাকা হানডালা নৌযানটিকে ইসরাইলি বাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় জোরপূর্বক আটক করেছে বলে জানিয়েছে এই মিশনের আয়োজক ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)। বিবৃতিতে বলা হয়, প্যালেস্টাইনের জলসীমার বাইরে ইসরাইলি বাহিনী এই অভিযানটি চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মের বিরুদ্ধ।
বিবৃতিতে তারা আরও জানায়, ইসরাইলি বাহিনী রাতের সময় জাহাজের ক্যামেরাগুলো বন্ধ করার পর থেকে হানডালার সঙ্গে তাদের সবরকম যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
জাহাজটি গাজায় ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সাহায্য নিয়ে যাচ্ছিল। জাহাজে শিশুদের ফর্মুলা, ডায়াপার, খাদ্য সামগ্রী ও বিভিন্ন ওষুধপত্র ছিল। তবে ইসরাইলি বাহিনী জাহাজটিতে তল্লাশি চালিয়ে যাত্রীদের আটক করে এবং সব পণ্য জব্দ করে নেয়।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৬ জুলাই-ই ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজায় অন্তত ৭১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ৪২ জন ছিলেন ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া একদম সাধারণ মানুষ। এদিকে গাজায় ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর সাড়ি বেড়েই চলেছে। ত্রাণ সংগ্রহ করার সময় এখন পর্যন্ত ১,০০০-এর বেশি মানুষ ইসরাইলি সেনাবাহিনী ও মার্কিন ভাড়াটে বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন।
এদিকে গাজার উত্তরাঞ্চলে স্বল্প পরিমাণে ত্রাণ বিমান থেকে ফেলে লোক দেখানো সহায়তা প্রদর্শনের চেষ্টা করেছে ইসরাইল। এসম ত্রাণের ব্যাগের আঘাতে ১১ জন আহত হয়েছেন। এটি ইসরাইলের পরিকল্পিত হামলা বলেও মনে করা হচ্ছে। এই ধরনের ত্রাণ বিতরণকে অকার্যকর ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য প্রাণঘাতী বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জাতিসংঘ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্বের নানা দেশের সরকার গাজায় ইসরাইলের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে আসছে। এদিকে গাজায় সহায়তা প্রেরণে নির্ধারিত স্থানগুলোও মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। সিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, তারা কখনোই এটি মেনে নিতে পারবেন না যে অসংখ্য মানুষ বিশেষ করে শিশুদের বড় একটি অংশ অনাহারে মারা যাচ্ছে।
এর আগে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। এই সিদ্ধান্তের পর ফ্রান্স জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের ভেতর ১৪২টি দেশের সঙ্গে একমত হবে, যারা ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে বা সেরকম পরিকল্পনা করছে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: