নিজ দেশেই স্বস্তি পাচ্ছে না মানুষ, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশত্যাগ

ছবি: সংগৃহীত
জীবনের নিরাপত্তা উপেক্ষা করে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়ার প্রবণতা যেন অনেকের ভেতর স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে, কেউ অভাব-অনটনের কারণে, আবার কেউ একটি ভালো ভবিষ্যতের স্বপ্নে ত্যাগ করছে দেশ। মানুষ তার নিজের দেশেই আর স্বস্তি অনুভব করতে পারছে না। ভালো জীবনযাপন করতে সবাই এখন উন্নত দেশের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে, যেন সেখানেই তাদের জীবনের নতুন সুযোগ ও আশা লুকিয়ে রয়েছে।
সম্প্রতি স্পেনের উত্তর আফ্রিকার ছিটমহল সেউতায় সাঁতরে আসার চেষ্টা করেছে মরক্কোর নাগরিকরা। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুকনো সমুদ্র ও ঘন কুয়াশার ভেতর দিয়েই বিপদ উপেক্ষা করে মরক্কো থেকে সেউতায় প্রবেশ করেছে কমপক্ষে ৫৪ শিশু ও প্রায় ৩০ জন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক। শনিবার (২৬ জুলাই) স্পেনের একটি টেলিভিশন চ্যানেল এই খবর প্রকাশ করেছে।
টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সিভিল গার্ডের নৌকা একাধিকবার তাদের উদ্ধার করতে চেষ্টা করেছে। কিছু মরক্কোর নাগরিককে তারা উদ্ধার করতেও সক্ষম হয়। তবে বেশ কিছু মানুষ সাঁতারে ভর করে সেউতায় পৌঁছে গেছেন।
এই শিশুরা মূলত মরক্কোর নাগরিক। তাদের সেউতার একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে এই শিশুদের দেখভালে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় পুলিশের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের ২৬ আগস্ট মরক্কো থেকে শত শত অভিবাসী ঘন কুয়াশার আড়ালে সেউতায় সাঁতরে ঢোকার চেষ্টা করে। ২০২১ সালে একটি শিশু ফাঁকা প্লাস্টিকের বোতলের সহায়তায় ভেসে সেউতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিল। এই ঘটনা তখন ব্যাপক আলোচিত হয়।
মরক্কোর ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত স্পেনের দুইটি ছিটমহল সেউতা ও মেলিলা। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আফ্রিকার একমাত্র স্থলসীমান্ত ভাগ করে। এসব ছিটমহল প্রায়ই ইউরোপে পৌঁছোতে চাওয়া অভিবাসীদের ভিড়ের মুখে পড়ে।
এদিকে মরক্কোর নাগরিকরা যদি সীমান্ত পার হওয়ার সময় ধরা পড়ে তাহলে সাধারণত তাদেরকে মরক্কোতেই ফেরত পাঠানো হয়। যদি না তারা নাবালক বা আশ্রয়প্রার্থী হয়। অন্য দেশ থেকে আগতদের হেফাজত কেন্দ্রে রাখা হয়। সেখানে কয়েকদিন রাখার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রায় ৩ বছর আগে মেলিলার সীমান্তে একযোগে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালীন সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। সেসময় অন্তত ২৩ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: