মালয়েশিয়ার রাস্তায় হাজারো মানুষের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ (ভিডিও)
সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২২ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ার ক্ষমতায় আসেন আনোয়ার ইব্রাহিম। কিন্তু জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়নে ব্যর্থতার অভিযোগে বাড়তে থাকে জনসাধারণের অসন্তোষ। আর সেই জনরোষ এবার রূপ নিয়েছে আনোয়ার ইব্রাহিমের পদত্যাগের আন্দোলনে।
২৬ জুলাই মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ। বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই কালো টি-শার্ট ও মাথায় ‘তুরুন আনোয়ার’ লেখা ব্যান্ডানা পরেছিলেন, যার অর্থ ‘সরে দাঁড়াও আনোয়ার’। ২০২২ সালে আনোয়ার ইব্রাহিম ক্ষমতায় আসার পর এটিই ছিল প্রথম বড় জনসমাবেশ।
বিক্ষোভকারী বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে কুয়ালালামপুরে দেশটির জাতীয় মসজিদ নেগারার সামনে জড়ো হন। এরপর শহরের স্বাধীনতা স্কয়ারে শীর্ষ বিরোধী নেতারা বক্তৃতা দেন। পুলিশের ধারণা, কমপক্ষে ১৮ হাজার বিক্ষোভকারী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। চলতি মাসে ১০০ বছর বয়স পূর্ণ করা দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদও এতে অংশ নেন। মাহাথির মোহাম্মদ আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ করেন।
আনোয়ার ইব্রাহিম দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও গোষ্ঠীপ্রীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ—তিনি কেবল আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন, বাস্তবে কিছুই করছেন না। বিক্ষোভকারীরা মনে করেন, আনোয়ার তার প্রতিশ্রুত সংস্কার ও স্বচ্ছতা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আনোয়ার ইব্রাহীম গত প্রায় তিন বছর ধরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তার মেয়াদকালে দেশটিতে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি সরকারঘনিষ্ঠ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে।
দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ হঠাৎ বন্ধ করার ইস্যুতে আনোয়ার ইব্রাহিমের দুর্নীতিবিরোধী প্রতিশ্রুতিও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে সহ-প্রধানমন্ত্রী আহমাদ জম্বিদ হামিদ-এর ৪৭টি মামলা হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় সরকারের অভ্যন্তরেই সমালোচনার মুখোমুখি হন তিনি।
সম্প্রতি মেরডেকা সেন্টার ফর ওপিনিয়ন রিসার্চ কর্তৃক পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, মালয়েশিয়ার ৫৫ শতাংশ ভোটার আনোয়ার ইব্রাহিমের কাজের প্রতি সন্তুষ্ট। তবে রাজনৈতিক নেতাদের সমর্থন এবং জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ মালয়েশিয়ার সরকারবিরোধী এই আন্দোলনের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করেছে। যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পথ সুগম করতে পারে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: