ভারতের স্বাধীনতা দিবস ও জন্মাষ্টমীতে মাংস বিক্রি বন্ধ!

ফাইল ছবি
স্বাধীনতা দিবস ও জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ভারতের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষ কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এ নিয়ে ভারতে বড় ধরনের রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ আগস্ট জন্মাষ্টমীতে সব কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ থাকবে।
এমন সিদ্ধান্তকে সরাসরি মানুষের খাদ্যাভ্যাসের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। এই ইস্যুতে সমালোচনায় সরব হয়েছেন হায়দরাবাদের এমপি ও অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি থেকে শিবসেনা নেতা আদিত্য ঠাকরে।
১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের, বিভিন্ন এলাকায় মাংস নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিল্লি পৌরসভা জানিয়েছে, ওই দিন সব মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। কসাইখানাগুলোও ওইদিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজীনগরেও একই ভাবে মাংস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই নির্দেশ দিয়েছে থানের কল্যাণ-দোম্বিভ্যালি পৌরসভা।
গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (জিএইচএমসি) এমন নির্দেশনার তীব্র সমালোচনা করেছেন আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘মাংস খাওয়া আর স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের মধ্যে সম্পর্ক কী? তেলেঙ্গানার ৯৯ শতাংশ মানুষ মাংস খান। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা মানুষের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, জীবিকা, সংস্কৃতি, পুষ্টি ও ধর্ম পালনের অধিকার লঙ্ঘন করে।’
মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভোজনগরে জারি হওয়া একই ধরনের মাংস বিক্রয় নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। তিনি বলেন, ‘এভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঠিক নয়। বড় শহরে নানা বর্ণ ও ধর্মের মানুষ থাকেন। যদি বিষয়টি আবেগের হয়, মানুষ হয়তো এক দিনের জন্য মেনে নেয়। কিন্তু মহারাষ্ট্র দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসে এমন আদেশ জারি করলে তা কঠিন হয়ে যায়।’
মুম্বাইয়ের কাছের থানেতে কল্যাণ-ডোম্বিওয়ালি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনও একই নির্দেশ দিয়েছে। এ নিয়ে শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা আদিত্য ঠাকরে বলেছেন, পৌর কমিশনারের দায়িত্ব নয় কে কী খাবেন তা নির্ধারণ করা। তার মতে, কমিশনারকে বরখাস্ত করা উচিত।
আদিত্য বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে আমরা কী খাব, তা আমাদের অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা। তারা আমাদের বলতে পারে না কী খাব। আমাদের ঘরে এমনকি নবরাত্রিতেও প্রসাদে চিংড়ি ও মাছ থাকে, কারণ এটাই আমাদের ঐতিহ্য। এটাই আমাদের হিন্দুত্ব। কেন আপনারা আমাদের ঘরে ঢুকছেন? পৌর করপোরেশনকে বরং রাস্তায় গর্তের মতো সমস্যায় মনোযোগ দেওয়া উচিত।’
সূত্র: এনডিটিভি
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: