বৈশ্বিক নিরাপত্তা সংকট: দ্রুত পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার বৃদ্ধি করছে নর্থ কোরিয়া

ছবি: সংগৃহীত
নতুন করে আবারও সাউথ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন নর্থ কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। সম্প্রতি এই দুই দেশের যৌথ সামরিক মহড়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। মহড়াটিকে উস্কানিমূলক ও শত্রুতাপূর্ণ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কিম জং উন।
নর্থ কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন জানান, নর্থ কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডারের দ্রুত সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও সাউথ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়াকে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছেন। কিমের মতে, এটি অঞ্চলটিতে যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে। ১৯ আগস্ট নর্থ কোরিয়ার এক সরকারি সংবাদমাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।
এই সপ্তাহেই সাউথ কোরিয়া ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করে। নর্থ কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির মোকাবেলায় একটি উন্নত কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। কেসিএনএ-এর ইংরেজি সংস্করণ ও কেআরটি-এর একটি প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত ১৮ আগস্ট একটি নৌবাহিনীর বিধ্বংসী জাহাজ পরিদর্শনের সময় কিম জং উন বলেন, এই মহড়াগুলো নর্থ কোরিয়ার বিরুদ্ধে স্পষ্ট বৈরিতা ও সংঘর্ষমূলক মানসিকতা দেখিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নর্থ কোরিয়াকে দ্রুত পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার বাড়াতে বাধ্য করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও সাউথ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ায় পারমাণবিক উপাদান অন্তর্ভুক্ত ছিল। এদিকে পিয়ংইয়াং এসব মহড়াকে নিয়মিতভাবেই আগ্রাসনের প্রস্তুতি হিসেবে আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করে থাকে। প্রায়ই তারা এসবের প্রতিক্রিয়ায় অস্ত্র পরীক্ষাও চালায়। তবে সিউল এবং ওয়াশিংটনের দাবি, এসব মহড়া শুধুমাত্র প্রতিরক্ষামূলক উদ্দেশেই পরিচালিত হয়েছে।
গত ১৮ আগস্ট সাউথ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি থাকলেও তাদের লাইভ-ফায়ার মহড়া স্থগিত করার কোনো পরিকল্পনা নেই। এদিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র লি কিয়ুং-হোও এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, সীমান্তবর্তী দ্বীপগুলোতে লাইভ-ফায়ার মহড়া বন্ধ করার বিষয়ে কোনো পর্যালোচনা হয়নি। সাউথ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক যৌথ সামরিক মহড়া উলচি ফ্রিডম শিল্ড শুরু হওয়ার দিনেই এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা পিয়ংইয়াংয়ের সম্ভাব্য জবাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। এছাড়া শান্তি স্থাপন ও উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন সাউথ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং। ২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত আন্তঃকোরীয় সামরিক চুক্তি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে লি বলেন, বর্তমানে তিনি এ বিষয়ে কোনো নতুন তথ্য শেয়ার করতে পারছেন না। তবে তিনি জানান, মন্ত্রণালয় কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।
এদিকে গত বছরের মতোই আছে মহড়ার পরিসর। তবে অত্যন্ত গরম আবহাওয়ার কারণে এবং বছরব্যাপী এটি বজায় রাখতে প্রায় ৪০টি নির্ধারিত ফিল্ড ট্রেনিংয়ের অর্ধেকই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: