পানির ন্যায্যতা নিয়ে বৈষম্যের ভয়াবহ বাস্তবতা

ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বব্যাপী নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধিত হলেও এখনও অসংখ্য মানুষ নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধির মতো মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সম্প্রতি ইউনিসেফের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, এসব সুবিধা না থাকায় কোটি কোটি মানুষ নানা ধরনের রোগ এবং সামাজিক বৈষম্যের বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
২০২৫ সালের বিশ্ব জল সপ্তাহে ডাব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফের যৌথভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রোগ্রেস অন হাউসহোল্ড ড্রিঙ্কিং ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন ২০০০-২০২৪: স্পেশাল ফোকাস অন ইনইকুয়ালিটিজে বলা হয়েছে বিগত দুই দশকে কিছুটা আগ্রগতি দেখা দিলেও এখনও গৃহস্থালি পানি ও স্যানিটেশন ক্ষেত্রে বৈষম্যজনিত কারণে উল্লেখযোগ্য সংকট বিদ্যমান রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) এবং ইউনিসেফের মতে, এই বৈষম্য সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা গেছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ও গ্রামীণ অঞ্চলে। এছাড়া সংকটাপূর্ণ পরিস্থিতিতে বসবাসকারী মানুষ, শিশু এবং প্রান্তিক ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এখনও ২.১ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদভাবে ব্যবস্থাপিত পানযোগ্য পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। একইভাবে, ৩.৪ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ স্যানিটেশন বা পয়ঃনিষ্কাশনের পর্যাপ্ত সুবিধা পাচ্ছে না। এছাড়া ১.৭ বিলিয়ন মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি, যেমন হাত ধোয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ সুবিধার বাইরে রয়েছে। এসব সংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হচ্ছেন স্বল্পোন্নত ও সংকটপূর্ণ এলাকার মানুষ। এক্ষেত্রে গ্রামের বাসিন্দারা, কিশোরী মেয়েরা এবং নারীরা অধিকতর কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে। তাদের অনেককেই দূরদূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয় এবং ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সমস্যা সামাল দিতে হয় সীমিত সুবিধার মধ্যে। ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য এসব মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হলে অবিলম্বে এবং ব্যাপকভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
তাদের মতে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী যেমন নারী ও শিশুরা যাতে সহজে ও দ্রুত সাহায্য পেতে পারে সেজন্য বিশ্বকে আরও দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইউনিসেফ জানায়, গত দশ বছরে কিছুটা অগ্রগতি পরিলক্ষিত হলেও, এখনও কোটি কোটি মানুষ নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধির মতো মৌলিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। তারা নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক বৈষম্যের দুষ্টচক্রে আটকে যাচ্ছে। নিম্ন-আয়ের দেশ, দুর্যোগ বা সংঘাতপীড়িত অঞ্চল, গ্রামীণ এলাকা, শিশু, সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী এবং আদিবাসীরা এই সমস্যাগুলোর কারণে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: