ইউটিউব, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করছে নেপাল

নিয়ম না মানার কারণে ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ও এক্স’সহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে নেপাল সরকার।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) নেপালের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় দেশটির ‘নেপাল টেলিকমিউনিকেশন অথরিটি’কে নির্দেশ দিয়েছে, তারা যেন ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহকারীদের ২৬টি সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, এসব মাধ্যম দেশটির স্থানীয় নিবন্ধন নিয়ম মেনে চলেনি।
টেকক্রান্স বলছে, নেপালের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম অধিকার সংগঠন এবং এতে দেশটিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সেন্সরশিপ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
নেপাল সরকার যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার তালিকায় রয়েছে ডিসকর্ড, ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার, উইচ্যাট, রেডিট, স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব ও এক্স।
এর আগে নেপাল সরকার, ২৫ আগস্ট বিদেশি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোম্পানিকে সাত দিনের মধ্যে নেপালে তাদের কার্যক্রম নিবন্ধন করতে ও একজন স্থানীয় যোগাযোগ প্রতিনিধি নিয়োগ করতে বলেছিল।
গণমাধ্যম সুরক্ষা ও নাগরিক সমাজের বিভিন্ন সংগঠন নেপালের এ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে। নিউ ইয়র্কভিত্তিক অলাভজনক সংগঠন ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস’ বলেছে, এ সিদ্ধান্ত ‘সাংবাদিকদের কাজের মারাত্মক ক্ষতি করবে এবং সাধারণ মানুষের খবর ও তথ্য পাওয়ার অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করবে।”
গত মাসে সরকারের স্থানীয় নিবন্ধন নীতিকে বৈধ ঘোষণা করে নেপালের সুপ্রিম কোর্ট। ওই সময় আদালত বলেছিল, এ নিয়মের উদ্দেশ্য হল ভুল তথ্য বা গুজব নিয়ন্ত্রণ করা।
তবে ওই সময় আদালত সরাসরি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের নির্দেশ দেয়নি, বরং আদালত সরকারকে বলেছিল, “আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে উপযোগী ব্যবস্থা নিতে হবে”।
টিকটক ও ভাইবার অ্যাপ দুটি নেপাল সরকারের সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েনি। কারণ নেপাল সরকার বলেছে, এ দুটি এরইমধ্যে নেপালের নিয়ম মেনে চলেছে এবং দেশটিতে নিবন্ধনও সম্পন্ন করেছে।
যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী প্রিথ্বী সুব্বা গুরুঙ্গ সাংবাদিকদের বলেছেন, সরকার বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নেপালে নিবন্ধন করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিয়েছিল এবং বারবার অনুরোধও করেছিল, বিশেষ করে ফেইসবুকের মূল কোম্পানি মেটাকে। কিন্তু তারা সরকারি নিয়ম মানেনি।
তবে এ বিষয়ে টেকক্রাঞ্চের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি মেটা, মার্কিন সার্চ জায়ান্ট গুগল ও স্ন্যাপ।
নেপাল টেলিকমিউনিকেশন অথরিটির তথ্য অনুসারে, নেপালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৯০ শতাংশেরও বেশি। এদিকে, ওয়েব অ্যানালিটিক্স কোম্পানি ‘স্ট্যাটকাউন্টার’-এর সর্বশেষ তথ্য বলছে, নেপালের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে ফেইসবুক ব্যবহার করেন ৮৭ শতাংশ, এক্স ব্যবহার করেন ছয় শতাংশ এবং ইউটিউব ব্যবহার করেন পাঁচ শতাংশ মানুষ।
বিভি/ এসআই
মন্তব্য করুন: