তিউনিসিয়ার জলসীমায় গাজামুখী ফ্লোটিলার একটি নৌযানে ড্রোন হামলার অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত
এবার গাজামুখী ফ্লোটিলার একটি নৌযান তিউনিসিয়ার জলসীমায় ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মানবিক সহায়তা নিয়ে যাত্রা শুরু করা ওই ফ্লোটিলা ৭ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়ায় পৌঁছায়। এই তথ্য প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। বলা হচ্ছে ওই নৌযানটির নিচতলার সংরক্ষণাগারে আগুন লেগে গিয়েছিল। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা একটি আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা মিশন, যার উদ্দেশ্য গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত জনগণের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া। এ অভিযানে অংশগ্রহণ করেছেন ৪৪টি দেশের প্রতিনিধিরা।
ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (জিএসএফ)-এর সদস্যরা দাবি করেছেন, পর্তুগালের পতাকাবাহী ওই নৌযানটি তিউনিসিয়ার সমুদ্রসীমায় আক্রমণের মুখে পড়ে। নৌযানটি নোঙর করে থাকা অবস্থায় ড্রোন হামলার শিকার হয়। তবে নৌযানের ৬ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্যরা নিরাপদে রয়েছেন।
এদিকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ প্রতিনিধি ও তিউনিসিয়ার নাগরিক ফ্রান্সেস্কা আলবানিজে বলেন, যদি এই অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়, তবে তা তিউনিসিয়ার সার্বভৌমত্বে একটি আঘাত হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে তিউনিসিয়ার ন্যাশনাল গার্ডের একজন মুখপাত্র ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, কোন ড্রোন শনাক্ত হয়নি। পুরো ঘটনার বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, বিস্ফোরণটি নৌযানের ভেতর থেকেই ঘটেছে। এ ঘটনার পর তিউনিসিয়ার ওই বন্দরে জমায়েত হন শতাধিক মানুষ। সেসময় ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে তারা ফ্রি প্যালেস্টাইন স্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে গাজার ইউপকূলীয় অঞ্চলে নৌ অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরাইল। ইসরাইলের দাবি, এই অবরোধের উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকানো। এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলি সামরিক অভিযানে ৬৪,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া, গাজার কিছু এলাকায় ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে দুর্ভিক্ষ।
এদিকে ফ্লোটিলা আয়োজকরা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য গাজায় ইসরাইলের আরোপিত অবরোধ ভেঙে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো। তবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে তারা নানারকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। গত জুন মাসে ইসরাইলি বাহিনী একটি ত্রানবাহী নৌযানে অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের ভেতর গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন। এদিকে, গাজাগামী এ ধরনের ত্রাণ পাঠানোর প্রচেষ্টাকে প্রচারণামূলক কৌশল বলে আখ্যা দিয়েছে ইসরাইল।
এর আগেও গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজে ড্রোন হামলার অভিযোগ উঠেছে। গত মে মাসে ফ্রিডম ফ্লোটিলা দাবি করে, তাদের একটি নৌযান মাল্টার উপকূলের কাছে ড্রোন হামলার শিকার হয়। এছাড়া, ২০১০ সালে গাজা অভিমুখে একটি ত্রাণবাহী বহর পাঠানোর সময় একটি তুর্কি নৌযানে ইসরাইলি বাহিনী হামলা চালালে ১০ জন প্রাণ হারান।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: