• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইরানে ৯ মাসে এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, আইএইচআরের নিন্দা

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৭:৪২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ইরানে ৯ মাসে এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, আইএইচআরের নিন্দা

ছবি: সংগৃহীত

ইরানে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত অন্তত এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নরওয়ে-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এই তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটি ইরানে মাত্র ৯ মাসে এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে ফাঁসি কার্যকরের ঘটনাকে দেশটির কারাগারে চালানো ‘গণহত্যার অভিযান’ হিসাবে অভিহিত করেছে।

আইএইচআর বলেছে, ইরানে কেবল গত সপ্তাহেই অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। অর্থাৎ দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ৯ জনেরও বেশি মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের আরও তিন মাসের বেশি সময় বাকি থাকলেও দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ইতোমধ্যে আইএইচআরের রেকর্ডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।  সংস্থাটি ২০০৮ সাল থেকে ইরানে ফাঁসি কার্যকরের রেকর্ড সংরক্ষণ করে আসছে। এর আগে, ইরানে ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ ৯৭৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিলো।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব এবং ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর ১৯৮০’র দশক ও ১৯৯০’র দশকের শুরুর দিকে ইরানে বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, দেশটিতে গত তিন দশকে এতো ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা নজিরবিহীন।

দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির নেতৃত্বাধীন ইরানের বর্তমান সরকার গত জুনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধ নিয়ে চাপের মুখে রয়েছে। এর মাঝেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বৃদ্ধির এই ঘটনা ঘটেছে।

আইএইচআরের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত কয়েক মাসে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের কারাগারগুলোতে এক ধরনের গণহত্যা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের কার্যকর প্রতিক্রিয়া না থাকায় এই অভিযানের মাত্রা প্রতিদিনই বাড়ছে।

আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের নেতাদের সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ভোট দেওয়ার পর দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি সেখানে আলোচনার মূল বিষয় হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে আমিরি-মোগাদ্দাম বলেছেন, ইরানে চলমান মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল এবং এটিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আলোচ্যসূচির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে রাখতে হবে।

তিনি বলেন, যেসব দেশ মানবাধিকারের মূলনীতির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ তাদের সঙ্গে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের যেকোনো সংলাপে যদি ইরানের মৃত্যুদণ্ড সঙ্কটকে অন্তর্ভুক্ত না করা হয়, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

আইএইচআর বলেছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই সংখ্যা কেবল ‘ন্যূনতম হিসাব’। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ দেশটিতে তথ্যের স্বচ্ছতার ঘাটতি এবং সংবাদ প্রচারে বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ রয়েছে।

বর্তমানে ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় কেবল ফাঁসির মাধ্যমে। যদিও অতীতে অন্য পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়েছে। অধিকাংশ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় কারাগারের ভেতরে। তবে মাঝে মাঝে প্রকাশ্যেও ফাঁসি দেওয়া হয়।

ইরানে হত্যা, মাদকপাচার, ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনসহ বড় ধরনের অন্যান্য অপরাধের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের সাজার বিধান রয়েছে। যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, বিশ্বে প্রত্যেক বছর চীনের পর সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান। যদিও দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্ভরযোগ্য কোনও পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না।-সূত্র: এএফপি।

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2