হঠাৎ বোরকা ও নিকাব নিষিদ্ধের পথে হাঁটছে ইতালি, হতে পারে আইন

হঠাৎ মুসলিম নারীদের বোরকা ও নিকাব পরা নিষিদ্ধ করার জন্য নতুন একটি আইন পাসের পরিকল্পনা করছে ইতালি। দেশটির ক্ষমতাসীন দল ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ এ সংক্রান্ত একটি বিল সংসদে উত্থাপন করতে যাচ্ছে।
পলিটিকোর বরাত দিয়ে বুধবার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন এ পদক্ষেপকে ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছে ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’।
প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বাধীন এই ডানপন্থী দলটি প্রস্তাবিত বিলটি আইন হিসেবে পাস হয়ে গেলে দোকান, বিদ্যালয়, অফিসসহ সব ধরনের পাবলিক স্পেসে মুখ পুরোপুরি ঢেকে রাখার পোশাক নিষিদ্ধ হবে। এ আইন লঙ্ঘনকারীদেরকে ৩০০ ইউরো থেকে ৩ হাজার ইউরো পর্যন্ত (প্রায় ৪৩ হাজার থেকে ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা) জরিমানা গুনতে হতে পারে।
বিলের অন্যতম প্রস্তাবক ও আইনপ্রণেতা আন্দ্রেয়া দেলমাস্ট্রো বুধবার তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা পবিত্র, তবে এটি অবশ্যই প্রকাশ্যে, আমাদের সংবিধান এবং ইতালীয় রাষ্ট্রের নীতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে অনুশীলন করতে হবে। প্রস্তাবিত এই আইনটি সরকারের বৃহত্তর ‘বিচ্ছিন্নতাবাদবিরোধী উদ্যোগের’ অংশ, যার লক্ষ্য ইতালির সামাজিক ঐক্য ও ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো সংরক্ষণ করা।
‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ দলের অভিবাসন বিষয়ক প্রধান সারা কেলানি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই বিলের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মসজিদগুলোর অর্থায়ন ও ধর্মীয় তহবিলের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি মুখ সম্পূর্ণ ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ করা, জোরপূর্বক বিবাহ প্রতিরোধ করা এবং রাষ্ট্রের অনুমোদনবিহীন ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর বিদেশি তহবিলের উৎস প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা—এই তিনটি দিককে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে এ বিল।
বোরকা হলো এমন একটি পোশাক যা একজন নারীকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে আচ্ছাদিত রাখে, যেখানে চোখের অংশে জালির মতো একটি আবরণ থাকে। অন্যদিকে, নিকাব মুখের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখলেও চোখের চারপাশের অংশটি উন্মুক্ত থাকে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পূর্বেও নিরাপত্তা ও সামাজিক সংহতির কারণ দেখিয়ে এ ধরনের পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এই প্রস্তাবের মাধ্যমে ইতালিতে ধর্মীয় পোশাক ও প্রভাবের সীমা নির্ধারণ করে তথাকথিত ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদ’ নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে মেলোনি সরকার। তবে, মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আশঙ্কা, ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে এই আইনটি।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: