বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ১০ ভূমিকম্প যখন, যেখানে হয়েছিল
বাংলাদেশে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার খুব কাছে, নরসিংদীর মাধবদীতে। তাই কাঁপুনিটা বেশি বোঝা গেছে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। অনেকেই ঘর, অফিস ও ভবনে স্পষ্ট ঝাঁকুনি টের পেয়েছেন।
এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসে রাশিয়ার ক্যামচাটকা উপদ্বীপে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে কাঁপুনিটি লাগে। এর পরই সুনামি তৈরি হয়। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ প্রশান্ত মহাসাগরের চারপাশে সতর্কতা জারি হয় এবং মানুষকে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়।
ভূকম্পবিজ্ঞানের তথ্য বলছে, ১৯০০ সালের পর থেকে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার চেয়ে বেশি শক্তিশালী মাত্র পাঁচটি ভূমিকম্প হয়েছে। সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল ১৯৬০ সালের চিলির ভালডিভিয়া ভূমিকম্প। এর মাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানায়, এতে ১ হাজার ৬৫৫ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
২০১১ সালের জাপানের গ্রেট তোহোকু ভূমিকম্পের পর রাশিয়ার এবারের ভূমিকম্পই সবচেয়ে শক্তিশালী। তোহোকু ভূমিকম্প ভয়াবহ সুনামি তৈরি করেছিল এবং ফুকুশিমা পারমাণবিক বিপর্যয়ের কারণ হয়েছিল। সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের তালিকায় এটি তিন নম্বরে রয়েছে।
দ্বিতীয় স্থানে আছে ১৯৬৪ সালের আলাস্কা ভূমিকম্প, যার মাত্রা ছিল ৯ দশমিক ২। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ২০০৪ সালের সুমাত্রা ভূমিকম্প। এর মাত্রা ছিল ৯ দশমিক ১। ক্যামচাটকায় ১৯৫২ সালে ৯ মাত্রার আরেকটি বড় ভূমিকম্প হয়েছিল, যা তালিকায় পঞ্চম।
এবারের ভূমিকম্প আসার আগে তালিকায় পরের অবস্থানে ছিল ২০১০ সালের চিলির এবং ১৯০৬ সালের ইকুয়েডর উপকূলে হওয়া ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প। রাশিয়ার জুলাইয়ের ঘটনা সেগুলোকে পিছিয়ে দিয়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসেও শক্তিশালী ভূমিকম্প আছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটি হয়েছিল ১৭৬২ সালে, টেকনাফে। টেকনাফ থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত প্রায় ৪০০ কিলোমিটার লম্বা ফল্ট লাইনে ৮ দশমিক ৫ মাত্রার বেশি কাঁপুনি হয়। এতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ তিন মিটার ওপরে উঠে আসে। এর আগে এটি ছিল নিচু ও প্রায় ডুবন্ত দ্বীপ।
একই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের একটি দ্বীপ ছয় মিটার ওপরে উঠে যায়। সীতাকুন্ড পাহাড়ে শক্ত পাথর ভেদ করে নিচ থেকে কাদা ও বালু বের হয়ে আসে। বঙ্গোপসাগরে সুনামি হয়। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর পাশের অনেক ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে যায়। ঐ ঘটনায় প্রায় ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: