ডাইনি সন্দেহে স্বামী-স্ত্রীকে ঘরের ভেতরে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা
ডাইনি সন্দেহে ও জাদুবিদ্যার পাশাপাশি তন্ত্রমন্ত্র চর্চার অভিযোগে এক দম্পতিকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে এমন ঘটনা সৃষ্টি।
মূলত জাদুবিদ্যা চর্চা করে এমন সন্দেহে স্থানীয়রা তাদের ওপর চড়াও হয়। প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে এবং এরপর ঘরে আগুন লাগিয়ে ওই দম্পতিকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি রাজ্যে আবারও ‘উইচ-হান্টিং’ বা ডাইনির অভিযোগে মানুষ হত্যার আতঙ্ক ফিরিয়ে এনেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, আসামের কার্বি আংলং জেলায় ডাইনি সন্দেহে ওই দম্পতিকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। মঙ্গলবার হাওরাঘাট এলাকার ১ নং বেলোগুরি মুন্ডা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে এনডিটিভি সূত্র। নিহত দুজন হলেন গার্ডি বিরোয়া (৪৩) ও মিরা বিরোয়া (৩৩)। হামলাকারীরা প্রথমে তাদের বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরে পুরো ঘরে আগুন ধরিয়ে দিলে দম্পতি সেখানেই দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে এবং সংশ্লিষ্ট সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এ এলাকাটির মানুষ বহুদিন ধরেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন। তিনি বলেন, ‘এখনও লোকজন নানা গুজবে বিশ্বাস করে, যার ফলে অনেকে ভোগান্তির শিকার হয়’।
এদিকে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি আসামে আবারও ডাইনির অভিযোগে নির্যাতন–হত্যার শঙ্কা সামনে এনেছে। যদিও উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে এ বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর আইন রয়েছে। ২০১৫ সালে চালু হওয়া ‘আসাম উইচ হান্টিং (প্রহিবিশন, প্রিভেনশন অ্যান্ড প্রোটেকশন) অ্যাক্ট’-এর মাধ্যমে কাউকে ‘ডাইনি’ আখ্যা দেয়া এবং এ কারণে হত্যা করার জন্য কঠোর শাস্তি ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
গত ১০ বছরে এ ধরনের ‘উইচ-হান্টিং’–এর ঘটনায় আসামে ১০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: