• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

গোপালগঞ্জে ৬ শ’ ম্যাজিক জাল ধ্বংস

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
গোপালগঞ্জে ৬ শ’ ম্যাজিক জাল ধ্বংস

গোপালগঞ্জে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জলজ জীববৈচিত্র রক্ষায় কাজ করছে সদর উপজেলা প্রশাসন। খাল,বিল ও জলাশয়ে নিয়মিত চায়না ম্যাজিক জাল উদ্ধারে উপজেরা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করছে। এতে গ্রাম পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যান ও মৎস্য অধিদপ্তর সহযোগিতা করছে। প্রতিদিনই জলাশয় থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে বিপুল পরিমান চায়না ম্যাজিক জাল। এসব  জাল প্রকাশ্যে অগ্নি সংযোগ করে ধ্বংস করা হচ্ছে। গত ৪ আগস্ট থেকে ম্যাজিক জাল ধ্বংসে গ্রাম পুলিশ সদর উপজেলার ২১ টি ইউনিয়নে অভিযান শুরু হয়। ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ শ’ কারেন্ট জাল উদ্ধার করে ধাবংস করেছে গ্রাম পুলিশ। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জীব বৈচিত্র রক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মাঝিগাতী ইউপি চেয়ারম্যান কে.এম হাফিজুর রহমান মুকুল বলেন, চায়না ম্যাজিক জালে মাছ, কুচে, ব্যাংঙ, শামুক, সাপসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী উজার হয়ে যাচ্ছে। ধাবংস হচ্ছে জলজ জীব বৈচিত্র। এটি পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এগুলো সংরক্ষণে উপজেলা আইন-শৃংখলা সভায় ইউপি চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন এ ব্যাপারে গ্রাম পুলিশকে অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে রেজুলেশন করেন। সেখানে আমাদের এ ব্যাপারে দতারকির দায়িত্ব দেন। এটি  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। এটি সারাদেশের মডেল হতে পারে। সারাদেশ এটিকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করলে দেশীয় প্রজাতির মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্র রক্ষা পাবে।

মাঝিগাতী ইউপির গ্রাম পুলিশের প্রধান মানু খান বলেন, আমরা জানি ইউনিয়নের কোন কোন পয়েয়েন্টে অবৈধ চায়না ম্যাজিক জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। আমরা সবচেয়ে বেশি ম্যাজিক জাল উদ্ধার করে ধ্বংস করেছি। ইউনিয়নের সরকারি কাজের পাশাপাশি ম্যাজিক জাল জব্দে আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আমাদের ইউনিয়নকে চায়না ম্যাজিক জাল মুক্ত করে মাছ, কুচে,সাপ সহ অন্যান্য জলজ প্রাণী রক্ষা করব।

গোপালগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বলেন, আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। তারপরও দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় আমরা নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। এটি  দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় যথেষ্ট নয়। এই সুযোগে অসাধু মৎস্যজিবি ও মৎস্য শিকারীরা চায়না ম্যাজিক জাল ব্যবহার করে মৎস্য সম্পদ উজার করছে। এই সম্পদ রক্ষায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন অভিনব উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। তিনি গ্রাম পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যান ও মৎস্য কর্মকর্তাদের কাজে লাগিয়ে বিপুল পরিমান চায়না ম্যাজিক জাল উদ্ধার করিয়ে ধ্বংস করেছেন। মাত্র ১ মাসে রেকর্ড পরিমান চায়না ম্যাজিক জাল ধ্বংস করেছেন।  মৎস্য সম্পাদ রক্ষায় এটি একটি অনুকরণীয় উদ্যোগ। এই মহৎ উদ্যোগে দেশীয় মাছের পাশাপাশি  জীববৈচিত্র রক্ষা পাচ্ছে বলে আমি বিশ্বাস করি। 

দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণের উদ্যোক্তা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন বলেন, আমাদের নিজেদের বাঁচার প্রয়োজনেই মৎস্য সম্পাদ ও জীব বৈচিত্র রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। চায়না ম্যাজিক জাল অকাতরে মাছ ও জলজ প্রাণী ধ্বংস করছে।  তাই আমরা চায়না ম্যাজিক জালে বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে গ্রাম পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছি। কারণ তারা জানেন কোথায় এই জালের ব্যবহার হচ্ছে। আর তারাই এ কাজটি ভালভাবে করতে পারবেন। মাত্র ১ মাসে গ্রাম পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৬ শ’ ম্যাজিক জাল জব্দ করে ধ্বংস করেছে। প্রতিদিনই চায়না ম্যাজিক জালের বিরুদ্ধে খাল বিলে অভিযান পরিচালনা করছেন গ্রাম পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যান সহ দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তরা। প্রতিদিনই বিপুল পরিমান চায়না ম্যাজিক জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হচ্ছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি অব্যাহত রেখে আমরা গোপালগঞ্জের মাছ ও জীববৈচিত্র রক্ষা করব। 

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন: