প্রেগন্যান্সিতে পেটে গ্যাসের সমস্যা দূর করতে জেনে রাখুন এই কয়েকটি বিষয়

বাঙালিদের মধ্যে অধিকাংশই পেটের সমস্যায় ভোগেন। গ্যাস, বদহজম তো আমাদের রোজকার সঙ্গী। এমনকী গর্ভাবস্থাতেও অনেক মহিলাকে এই ধরনের সমস্যা জ্বালাতন করে। তাই অন্তঃসত্ত্বা মেয়েদের অ্যাসিডিটির সমস্যা নিয়ে অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
অনেক সন্তানসম্ভবা মহিলা এই ধরনের সমস্যা হওয়া মাত্রই চটজলদি অ্যান্টাসিড সেবন করেন। এতে দ্রুত সমস্যা কমে যায় ঠিকই, তবে জটিলতার মূলে আঘাত করা যায় না। ফলে খাওয়াদাওয়ার একটু এদিক-ওদিক হলেই ফের সমস্যা দেখা দেয়।
তাই বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ গর্ভবতী নারীদের অ্যাসিডিটির সমস্যায় ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই সকল প্রাকৃতিক কৌশল মেনে চললে প্রেগন্যান্ট মহিলারাও পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন বলে তাদের দাবি। তাই সময় থাকতে গ্যাস, অ্যাসিডিটির দূর করার এমনই কয়েকটি ঘরোয়া কৌশল সম্পর্কে জেনে নিন।
১. পানির ঘাটতি হলে বিপদ বাড়াবে
অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা থেকে মুক্ত হতে চাইলে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতেই হবে। এই প্রসঙ্গে মেডিক্যাল নিউজ টুডে জানাচ্ছে, একজন গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন ১০ কাপ বা ২.৩ লিটার পানি পান করা জরুরি। এই পরিমাণ পানি খেলে করলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি সহ একাধিক পেটের সমস্যাকে গুড বাই করতে পারবেন। এছাড়া দেহে পানির ঘাটতি পূরণ হলে অন্যান্য সব ঘাতক অসুখের করাল গ্রাস থেকেও দূরে থাকা যাবে।
২. কোল্ড ড্রিংকস থেকে বিরত থাকুন
অনেকেরই এই ভুল ধারণা রয়েছে যে, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যাতে কোল্ড ড্রিংকস খেলে বুঝি চটজলদি সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। তবে বিষয়টা একবারেই তেমন নয়। বরং এই ধরনের পানীয় খেলে পেটের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাবে। উপরন্তু এই ধরনের পানীয়তে থাকে প্রচুর পরিমাণে সুগার এবং অন্যান্য কিছু ক্ষতিকারক রাসায়নিক। আর এই সমস্ত উপাদানই পেটের সমস্যার কারণ। তাই এই ধরনের পানীয়ের থেকে দূরত্ব বজায় রাখাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
৩. ফুলকপি, বাঁধাকপি থেকে দূরে থাকুন
অনেকেই ফুলকপি, বাঁধাকপির তরকারি খেতে ভালোবাসেন। এমনিতে এই সবজিগুলো অত্যন্ত উপকারী। তবে পেটের সমস্যা থাকলে এই ধরনের সবজি যতটা কম পরিমাণে খাওয়া যায় ততই মঙ্গল। কারণ এইসব সবজিতে মজুত থাকা ফাইবার সকলের সহ্য হয় না। ফলে পেটে ব্যথা, গ্যাস ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাবে বৈকি! তাই পেটের অসুখে ভুক্তভোগীরা এইসব সবজি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। তাহলেই সুস্থ থাকবেন।
৪. কয়েকটি প্রাকৃতিক উপায়েই সমস্যার সমাধান করুন
গ্যাস বা অ্যাসিডিটির জন্য শরীর আনছান করলে এবার থেকে এক চা চামচ জোয়ান খেতে পারেন। এতেই দেখবেন উপকার মিলবে হাতেনাতে। কিছুক্ষণের মধ্যেই কমবে সমস্যার প্রকোপ। এছাড়া এই ধরনের সমস্যাকে প্রতিরোধ করতে চাইলে খাওয়ার পর এক ছোট চামচ মৌরিও খেতে পারেন। তাতেও উপকার পাবেন। এছাড়া অ্যাসিডিটির কারণে বমি বা বমি বমি ভাবের মতো সমস্যার খপ্পরে পড়লে কয়েকটি আদার কুঁচি পানি দিয়ে গিলে খেয়ে নিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যা কমবে।
৫. এক্সারসাইজ করা চাই-ই চাই
হজম ক্ষমতাকে চাঙ্গা করতে চাইলে নিয়মিত এক্সারসাইজ করা জরুরি। এমনকী গর্ভাবস্থাতেও শরীরচর্চা জরুরী। এতেই দেখবেন পেট সহ গোটা দেহের স্বাস্থ্য ফিরবে। এমনকী মানসিকভাবে হালকা থাকবেন আপনি। তবে ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার শরীরের পরিস্থিতি বুঝে তিনিই কেমন ধরনের ব্যায়াম করা উচিত, তা জানিয়ে দেবেন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বিভি/জোহা
মন্তব্য করুন: