যে কারণে অনলাইনে ছেলেরা আগে নুড ছবি চায়?

ছবি দাও। সারাদিন ফ্রেন্ড লিস্টে থাকার পরও বলে তোমার একটা ছবি দাও। অনেকেই দু’একদিন কথা বলার পর ব্যাক্তিগত ছবি চান বা অনেকেই দিয়ে দেন। মানুষ কেন পার্সোনাল ছবি শেয়ার করেন? 

এসব ছবি শেয়ারের ক্ষেত্রে সাইকোলোজিক্যাল ব্যাপার আছে। এতো সচেতনতা, এতো কথা তারপরেও কেন মানুষ তার নুড ছবি শেয়ার করেন। বাটারফ্লাই মেট্রিমনিয়ালের প্রতিষ্ঠাতা হুরায়রা শিশির বলেন, সেক্ষেত্রে কিছু অবজারভেশন আছে ।  

নারীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, প্রথম অবজারভেশ হলো, মানুষের একটা সাইকোলজি থাকে, মানুষ আরো জানতে চায়। আসলে প্রথমে যা ঘটে, তা হলো অনেকেই মনে করে, আমি একটা ছবি চেয়ে দেখি, দেয় কি না, বা প্রথম চাওয়াতে দেয় কিনা বা মানুষটি কেমন বা পারসোনালিটি টেস্টের জন্যও অনেকেই ছবি চেয়ে বসে।

তখন সম্পর্র্কটি ক্যাজুয়ালি শুরু হয়। ছবি শেয়ারের পর ফিডব্যাক, কমেন্টস ইত্যাদির পর একটা সম্পর্ক অন্যদিকে ডাইভার্ট হয়। ক্যাজুয়াল, ক্যাজুয়ালই থাকে কিন্তু তখন সম্পর্কটা আসলে কি টাইপের হয় তা বুঝতে পারে না অনেকেই।  

দ্বিতীয়ত, ছেলেরা অনেক সময় মেয়েদেরকে বলে, তুমি কি আমাকে ট্রাস্ট করছ না। সর্ম্পকের ট্রাস্ট বোঝানোর জন্য অনেক সময় অনেক মেয়েরা নিজের ছবি শেয়ার করে বা শেয়ার করতে বাধ্য হয়। 

তৃতীয়ত, অনেক মেয়ে সম্পর্ক বাঁচানো বা তৈরি করার সময় ও তাদের মেয়েরা নুড ছবি শেয়ার করে। আবার তার বিপরীত কাউকে আকর্ষন করতেও মেয়েরা এটা করে থাকে। এটা কিন্তু মেয়েরা অনেকটা ফ্ল্যাক্সিবলি করে থাকে। 

চতুর্থত, নুড ছবি অনেকটা ব্যাংকের মতো কাজ করে। একটা সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বস্ততা আনতে ছেলে-মেয়ে উভয়ই তাদের নুড ছবি গুলোকে সম্পদ হিসেবে রাখে। কোনো কারনে এই সম্পর্ক যদি ভেঙ্গে যায়, তখন সম্পর্ক ধরে রাখতে এই ছবি গুলো ব্যবহার করা হয়, অথবা কোনো কিছু দাবি করতে, অথবা কেউ সম্পর্ক ছেড়ে যেতে চাইলে থ্রেট দিতে নুড ছবি ব্যবহার হয়ে থাকে।

অথবা তার মধ্যে ঔই বোধটাই তৈরি হয়নি যে, ছবিগুলো শেয়ার করলে কি হতে পারে শুধুমাত্র  বিনোদনের জন্য জন্যও করা হয়ে থাকে। মেয়েরা কিন্তু একটু ইমোশোনাল হয়ে গেলে আগপাঁচ না ভেবেই এসব ছবি শেয়ার করে থাকেন। 

পঞ্চমত, আরেকটা ব্যাপার ছেলেরা কিন্তু মেয়েদের থেকে বেশি এসব ছবি দেখে এবং এসব ছবি তুলনামূলকভাবে কম শেয়ার করে। তারা যদি সম্পর্কের ব্যাপারে ল’য়্যাল হয়, তা হলে এসব ছবি শেয়ার করে না, আর যদি ল’য়্যাল না হয়, তাহলে তার ফ্রেন্ড সার্কেল সহ ছবি গুলোকে ভাইরাল করতে পিছুপা হয় না।
 
এসব ছবি সম্পর্কিত সম্পর্কের ব্যাপারে দেখা গেছে, মেয়েরা প্রায় ৮০ শতাংশ মেয়েরা নুড ছবি শেয়ার করেন। ছেলেরাও পিছিয়ে নেই তারাও ৫০-৭০ টাইমস এসব ছবি শেয়ার করেন। 

হুরায়রা শিশির বলেন,  এসব থেকে একটা ফাইন্ডিংস হলো, ছেলেরা খুব ভক্তি সহকারে যে কোন মেয়ের নুড ছবি দেখেন, ভাইরাল করে এবং যে কোন একটা মেয়ের নুড ভাইরাল হয়েছে শুনলেই খুব এক্সাইটেড হয়ে যান, দেখতে চান, হোক না কোন মেয়ে সেটা।

এই ব্যাপারে আরেকটা ফাইন্ডিংস হলো, মেয়েরা সহজেই অন্য ছেলের নুড দেখেন না। যদি তার পরিচিত না হয়, তাদের কাছের না হয়, তাহলে মেয়েদের ইন্টারেস্ট অনেক কম থাকে বা সাধারনত তারা এসব ছবি দেখতে চান না। 

এখানে একটা ব্যাপার, ছেলেরা ক্যাজুয়ালি একটা মেয়ের ছবি চেয়ে ফেলেন, এছাড়া মানসিকভাবে যারা  সিক থাকে, ছবি দেখে ব্যাড প্রাকটিস করে তারা যে কোন মেয়ের ছবি নিয়েই তারা  অসৎ উদ্দ্যেশ্য চরিতার্থ করেন। 

কিছু ক্ষেত্রে অনেক মেয়েই ভাবে, বাহ! ছেলেটাতো আমার ছবি চেয়েছে, অনেক বেশি কিছু মনে করেন নিজেকে, অন্যদিকে একটা মেয়ে ভাবে যে ছেলেটা মনে হয় তাকে পছন্দ করে তাই ছবি চেয়েছে, আর অপরদিকে ছেলেটা অন্য কোন উদ্দ্যেশ্যে মেয়েটার ছবি চেয়েছে। 
এই যে ছবি লেনদেন হচ্ছে, সেটা যারা শুধুমাত্র সম্পর্কের মধ্যে আছে তারাই দিচেছ তা নয়, স্বামী-স্ত্রী যারা আলাদা-ভাবে থাকেন, বা যাদের বিয়ে ঠিক হয়েছে তারাও শেয়ার করে থাকেন বিভিন্ন নুড ছবি। 

হুরায়রা শিশির বলেন, ছবি শেয়ার করা আগে সচেতন হতে হবে ,  কোন সামাজিক মাধ্যমে ছবি গুলো শেয়ার করছেন। ছবি গুলো খুব সহজেই ডাউন লোড করা যাবে কি না, সহজেই শেয়ার করা যায় কি না, এগুলো ছাড়াও দেখতে হবে কোন কোন মাধ্যমে ছবিগুলো একবার দেখলেই ডিলিট হয়ে যাবে। এসব ভালো ভাবে বিচার বিবেচনায় নিতে হবে।  

হুরায়রা শিশির পরামর্শ দেন, যারা বিবাহিত বা ইনগেজড তারা ছবি শেয়ার এর ক্ষেত্রে সিকিউর সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করুন, আরা যারা টাইম পাস বা না বুঝেই এসব ছবি শেয়ার করছেন তারা নিজের সিকিউরিটি আসলে নিজেদেরেই নিশ্চিত করতে হবে। 

ছবি দাও বললেই যদি আপনি ছবি দিয়ে দেন, যখনই আপনি ছবিটা ইথারে দিয়ে দিলেন, এটা তখন ইথারের সম্পতি, তখন ইথার যতটুক এক্সপ্রেড করার ইথার তাই করবে। 
তিনি বলেন, যার কাছে ছবি আছে তার কাছ থেকে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, তার মোবাইল হারিয়েও যেতে পারে, সেখান থেকেও ছাড়াতে পারে , মানে বিভিন্ন ভাবেই ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে তাই যথা সম্ভব এসব কাজ থেকে বিরত থাকুন। 

তথ্য সুত্র: 
হুরায়রা শিশিরের ইউটিউব চ্যানেল
লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=wzEdFvADCow