প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রান্নার ভুল পদ্ধতিতে অপচয় ১ কোটি ২০ লাখ টন চাল
বাংলাদেশে পরিবার প্রতি গড় খাদ্য অপচয়ের পরিমাণ ৮৩ কেজি
রান্নার ভুল পদ্ধতি ও রাইসমিলে পলিশের কারণে প্রতি বছর দেশে ১ কোটি ২০ লাখ টন চাল অপচয় হচ্ছে। যার অর্থমূল্য ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এটি রোধ করা গেলে ঘাটতি মিটিয়ে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ চাল রপ্তানি করা সম্ভব। এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।
কৃষকদের ঘাম- শ্রম ও আর উন্নত জাতের ধান আবাদের ফলে প্রতি বছর দেশে গড়ে উৎপাদন হচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে তিন কোটি মেট্রিক টন চাল। এ থেকেই আসে ১৭ কোটিরও বেশি মানুষের খাদ্যের সিংহভাগ যোগান।
চালের এ বিপুল উৎপাদনের বিপরীতে রয়েছে হতাশার বাস্তবতা। খাদ্যশস্যের অপচয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করা ইউটিলাইজিং রাইস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের সাম্প্রতিক গবেষণায় রয়েছে এর কিছু চিত্র। এতে দেখা যায়, দেশের অটো রাইস মিলগুলো বিভিন্ন জাতের চালকে ঝকঝকে ও চিকন করতে গিয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ চাল ফেলে দেয়। একে কেবল অপচয় নয়, হারায় চালের পুষ্টিগুনও। বাড়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
অসচেতনতা বা অজ্ঞতার কারণেও চাল অপচয় হয় রান্নার পদ্ধতিগত কারণে। গবেষণা বলছে, ভাতের মাড়ের সাথে নাজিরশাইল চালে অপচয় হয় ১৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ, পারিতে ১৫ দশমিক ৬৬ , লতায় ১৫ দশমিক ৭৮, মিনিকেটে ২২, পাইজামে ১৩ দশমিক ৩৩ এবং বিআর-২৮ এ অপচয় হয় প্রায় ১৪ শতাংশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী বলেন, চাল পলিশ ও ভাতের মাড়ের সাথে প্রয়োজনীয় পুষ্টির বেশিরভাগই ফেলে দেয়া হয় কেবল না জানা ও অসচেতনতার কারণে। তার মতে, কেবল ১৮টি পুষ্টিগুণ চলে যাচ্ছে প্রচলিত ভাত রান্নার পদ্ধতিতে।
গেলো ২৭ মার্চ জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থা বিশ্বে খাদ্য অপচয়ের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, খাদ্য অপচয় বেশি হয় বাংলাদেশে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গৃহস্থালিতে প্রতি বছর গড়ে ৭৯ কেজি খাবার অপচয় হয়। সেখানে বাংলাদেশে প্রতি পরিবারে গড় অপচয়ের পরিমাণ ৮৩ কেজি।
বিভি/রিসি
মন্তব্য করুন: