• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বিএনপি করায় মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকা থেকে বাদ দেন সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক

প্রকাশিত: ১৭:০৯, ৬ মে ২০২৫

আপডেট: ১৭:১১, ৬ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
বিএনপি করায় মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকা থেকে বাদ দেন সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক

বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততা দেখিয়ে এবং নানা বিরোধের জের ধরে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ দেন তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তেমনি একজন গাজীপুরের পূবাইল এলাকার খিলগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকার যার গেজেট নম্বর ২৮৫৮।

জানা যায়, এ মুক্তিযোদ্ধার সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন সরকারের জমি নিয়ে বিরোধের সূত্র তৈরি হয়। রাজনৈতিক সুবিধা নিতে আওয়ামী লীগের ওই নেতা সালাউদ্দিন সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এর পরামর্শে ঐ আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন সরকার ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন দাখিল করেন। সেখানে বলা হয়, মো: আব্দুল রউফ সরকার বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জামুকায় একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সভায় মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারের কোন বক্তব্য না শুনেই সম্পূর্ণ খামখেয়ালিভাবে তার গেজেট বাতিলের সুপারিশ করা হয়। ঐ সভায় বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত  থাকার কারণে মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারসহ আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের সুপারিশ করা হয়, যা ছিল ফ্যাসিবাদী সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকার। সেই রিট গ্রহণ করে আদালত মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন, ‘রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পযন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বহাল থাকবে এবং তার নিয়মিত ভাতা প্রদান করতে হবে’।

নথিপত্র ঘেটে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে হাবিবুল্লাহ বাহার স্বাক্ষরিত গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকার ২০০৬ সালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্য, সনদ, দলিল দস্তাবেজ যাচাই-বাছাই শেষে তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। একই সাথে ২০১৩ সালে তৎকালীন গাজীপুর জেলা প্রশাসক এক চিঠিতে মো: আব্দুল রউফ সরকারকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বাকৃতি দেওয়ার জন্য জামুকা ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে মো: আব্দুল রউফ সরকার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন।

এ সময় ফ্যাসিবাদী সরকারের তৎকালীন মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক পলাতক থাকলেও তার দোসর সালাউদ্দিন সরকার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারকে ‘ভুয়া’ আখ্যায়িত করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতে থাকেন। 

মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ১৯৭১ সালে ৩নং সেক্টরে ১১১ নং গেরিলা ইউনিটে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। সালাউদ্দিন সরকারের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকায় তার বিরুদ্ধে আমি একাধিক মামলা দায়ের করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সালাউদ্দিন সরকার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করছেন। তিনি আরও বলেন, সালাউদ্দিন সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি। 

এ বিষয়ে সালাউদ্দিন সরকারের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের সাথে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের আবেদন করার কোন সম্পর্ক নাই।  তিনি বলেন, জামুকা তার গেজেট বাতিল করেছে। তবে, উচ্চ আদালতের বিষয়টি বলা হলে তিনি উত্তর এড়িয়ে যান এবং ফোন লাইন কেটে দেন।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন: