• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগরভবনে শ্রমিক-কর্মচারীদের তালা

প্রকাশিত: ১৩:২১, ১৫ মে ২০২৫

আপডেট: ১৪:০৭, ১৫ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগরভবনে শ্রমিক-কর্মচারীদের তালা

আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন মেনে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়িয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগরভবনের সামনে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকাবাসী। এবার এই কর্মসূচিতে একত্মতা প্রকাশ করে নগর ভবনে তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছেন সিটি করপোরেশনের শ্রমিক ও কর্মচারিরা।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ৯টা থেকে নগরভবনের সামনের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন হাজার হাজার নগরবাসী। পরে এই কর্মসূচিতে একত্মতা প্রকাশ করে দফতরে তালা লাগিয়ে নগরভবন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন সিটি করপোরেশনের শ্রমিক-কর্মচারিরাও। এতে নগর প্রশাসনের কার্যক্রমে একরকম স্থবিরতা নেমে এসেছে। এর আগে গতকাল (বুধবার) দুপুর ১২ টার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে আজকের এই অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। 

সকালে ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগরভবনের সামনে অবস্থান নেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। মূল ফটকের ভেতর ও বাইরে অবস্থান নিয়ে তারা শপথ পড়াতে বিলম্ব হওয়ার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। এসময় তাদের ‘শপথ নিয়ে তালবাহানা চলবেনা চলবেনা’, ‘অবিলম্বে ইশরাক হোসেনের শপথ চাই, দিতে হবে’, ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই’, ‘রায় দিয়েছেন আদালত, বাধা দেওয়ার তুই কে’, ‘আমাদের মেয়র আমরাই বানাবো’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

শান্তিপূর্ণ এই অবস্থান কর্মসুচিতে অংশ নিয়ে নগরের বাসিন্দারা বলছেন, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ইশরাক হোসেন বৈধ মেয়র। এরপরও কেন তাকে এখনো শপথ করানো হয়নি, তার ব্যাখ্যা চাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মশামুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত ঢাকা গড়তে ইশরাকের মতো জনবান্ধব মেয়র প্রয়োজন।

হুঁশিয়ারি দিয়ে তারা বলেন, যতোদিন ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো না হবে, ততোদিন তারা নগরভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।

এদিকে, ঢাকাবাসীর এই অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ কর্মচারীরাও। নগরভবনের সব গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে নীচ তলায় স্টেজ করে অবস্থান কর্মসূচি করতে দেখা যায় তাদের। একইসঙ্গে এই কর্মসূচিতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সচেতন নাগরিক সমাজের নেতাকর্মীদেরও অংশ নিতে দেখা যায়।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শ্রমিক নেতা সুমন ভূঁইয়া সরকারকে সতর্ক করে বলেন, জুলাই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন শ্রমিকরা। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা হাসিনাকে বিতাড়িত করেছেন। আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা সরকার গঠন করেছেন। কিন্তু এখন সেই রক্তের সাথেই বেইমানি করছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কথা বলে যেই বাংলাদেশ গড়ার কথা ছিল সেই বাংলাদেশের সঙ্গে আপনারা প্রতারণা করছেন। এসবের হিসাব আমরা কড়ায় গণ্ডায় আদায় করে নেব। ভালোয় ভালোয় বলছি আমাদের দাবি মেনে নেন। তা নাহলে আপনাদের তাড়াতেও লাঠি নিয়ে আবার রাস্তায় নামবে শ্রমিকরা। অবিলম্বে ইশরাক হোসেনকে তার প্রাপ্য দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট নুরুল ইসলাম জাহিদ বলেন, হাসিনার মতো এরাও আমাদের আইন শেখাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনও গেজেট দিয়েছে। তারপর আইন অনুসারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজ তাকে শপথ পড়িয়ে সেই গেজেট বাস্তবায়ন করা। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উল্টো নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে চাপ দিয়েছে আপিল করতে। নির্বাচন কমিশন তারপর আপিল করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে শপথের আয়োজন করতে চিঠি দিয়েছে। এরপরও টালবাহানা করছে এই সরকার। উল্টো তাদের সমর্থিত রাজনৈতিক দল এনসিপির বিভিন্ন নেতাকর্মীদের দিয়ে এই শপথ বাধাগ্রস্ত কারার জন্য আইনি নোটিস, রিট করার মতো হাস্যকর কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে। 

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, ইশরাক হোসেন জনগণের ভোটের রায়ে মেয়র হয়েছিলেন। কিন্তু হাসিনা জনগণের রায় কেড়ে নিয়ে তাকে বঞ্চিত করেছেন। হাসিনা পালানোর পর আদালতের রায়ে তিনি আবার অধিকার ফেরত পেয়েছেন। কিন্তু এখন অন্তবর্তী সরকার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আবার তাকে বঞ্চিত করছে। এই ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন নয়লে আপনাদের কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দিচ্ছি।

সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান বলেন, এই সরকারও কি হাসিনা হতে চায়। ১৬ বছরের দমন-পীড়নও তাকে টিকিয়ে রাখতে পারেনি। যেসব জনগণ ইশরাককে মেয়র বানিয়েছেন তারাই আজ তাকে মেয়রের আসনে বসাতে নগরভবনের সামনে এসেছেন। এই জনগণের ভাষা যদি বুঝতে না পারেন তাহলে আপনাদের পরিস্থিতিও হাসিনার মতোই হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল। ঈদের পর ১৬ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে ১০ দিনে মধ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন আদালত। ২২ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা নিয়ে আইনগত কোন জটিলতা আছে কিনা সেই মতামত চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তবে  আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় থেকে নির্ধারিত ১০ দিনের ঠিক শেষ দিন ২৭ এপ্রিল রাত ৯টায় আইন মন্ত্রনালয়ের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ২৮ এপ্রিল সেই গেজেট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাঠায় ইসি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আবারো আপিলের জন্য পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন আপিল করবে না জানিয়ে দেন। তারও প্রায় এক সপ্তাহ পেড়িয়ে গেলেও শপথের ব্যবস্থা করছেন না স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2