যাত্রীর চাপ বেড়েছে লঞ্চে

ছবি: সংগৃহীত
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে যতো কষ্টই হোক, উদ্দেশ্য অপেক্ষায় থাকা পরিবার-পরিজন ও নিকটাত্মীয়দের নিয়ে বাড়িতে পৌঁছে সবাই মিলে পবিত্র ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা। এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানীবাসী সড়কপথের পাশাপাশি বেছে নিয়েছেন নৌপথও। রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় সন্ধ্যা নামতেই সেই চিত্রই যেন ফুটে উঠেছে, যেখান থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের ছোট বড় বহু লঞ্চ ৪১টি রুটে যাত্রা করছে।
বুধবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় সদরঘাটে দেখা যায়, দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বিকাল থেকেই বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে পুরো টার্মিনাল যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব শ্রেণির যাত্রীর আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়।
যদিও অনেক যাত্রী লঞ্চযাত্রা স্বস্তিকর ও আরামদায়ক বলে মনে করেন। আবার ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন কম আয়ের মানুষেরা।
রিকশাচালক গফফার গণমাধ্যমকে বলেন, রোজার ঈদে বাড়ি যাই নাই, তাই ছেলেমেয়ে নিয়ে এই ঈদে না গিয়া পারছি না। আমরা অল্প টাকা ইনকাম করি, দিন আনি দিন খাই। সবাইকে নিয়ে গাড়িতে যাওয়ার সামর্থ্য নাই, তাই লঞ্চে যাই যাতে অন্তত কিছু টাকা বাঁচে। আগে লঞ্চে যাইতাম ৩০০ টাকা করে, এখন শুনি ৪০০ টাকা করে জনপ্রতি। যাত্রী তো কম না, ভাড়াটা একটু কম হলেই পারতো।
বরিশালগামী আরেক যাত্রী সোলাইমান গণমাধ্যমকে বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে লঞ্চে আগের মতো ভিড় হয় না, তবে আজকে মোটামুটি ভালোই যাত্রী আছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে লঞ্চে যাত্রা আরামদায়ক, তাই আমার মতো অনেকেই লঞ্চকেই বেছে নিচ্ছেন। লঞ্চে তেমন কোনো সমস্যা না থাকলেও গুলিস্তান থেকে অনেককেই হেঁটে সদরঘাট আসতে হয়েছে। যানজটের কিছুটা ভোগান্তি ছাড়া ঈদযাত্রা স্বস্তিরই বলা চলে।
কুয়াকাটা-২ লঞ্চের এর সুপারভাইজার তুষার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আজকে অফিস-আদালত বন্ধ হওয়ায় যাত্রীচাপ কিছুটা বেড়েছে। আগামীকাল আরও বাড়বে বলে আশা করছি। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য সড়কপথের তুলনায় নৌপথ অনেক স্বস্তিদায়ক—এক, যাত্রা আরামদায়ক; দুই, ভাড়াও তুলনামূলক কম হওয়ায় যাত্রীদের আগ্রহ এখনো রয়েছে।
ভাড়া নির্ধারণ বিষয়ে সদরঘাট লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্যসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে লঞ্চের ভাড়া নতুন করে বাড়ানো হয়নি এবং অতিরিক্ত কোনো লঞ্চও নামানো হয়নি। বর্তমানে ৩৮টি রুটে ১২০টি লঞ্চ রোটেশনে চলাচল করছে। আমরা মাঝে মাঝে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম নেই, যেমন ৫০৩ টাকার ভাড়া অনেক সময় ৪০০ টাকায় রাখা হয়। ঈদের সময় সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।
লঞ্চঘাট এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে কোতোয়ালি-সূত্রাপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ফজলুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, গত রোজার ঈদেও সদরঘাটগামী যাত্রীরা স্বস্তিতে বাড়ি যেতে পেরেছিলেন। এবারও যেন মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছাতে পারে, সেজন্য আমরা পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। টার্মিনালের সার্বিক নিরাপত্তা এবং যানজট নিরসনে প্রতিটি পুলিশ সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
সদরঘাট টার্মিনাল কন্ট্রোল অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাত ৮টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে বিভিন্ন রুটে ৬৯টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে এবং ৯০টি লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে রাত ১২টা পর্যন্ত।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: