নির্যাতন বন্ধ ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন

নির্বাচন উপলক্ষে হিন্দু নির্যাতন বন্ধে জাতীয় সংসদসহ সর্বক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর এবং লালমনিরহাটে তথাকথিত ধর্ম অবমাননার অযুহাতে পরেশ চন্দ্র শীল ও বিষ্ণুপদ শীল এর উপর হামলা, রক্তাক্ত যখম ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল ১০টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডঃ দীনবন্ধু রায়, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডঃ প্রদীপ কুমার পাল, সহ-সভাপতি দুলাল মন্ডল, প্রদীপ কুমার দাস, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুগ্ম মহাসচিব ডাঃ হেমন্ত দাস, বিশ্বনাথ মোহন্ত, সঞ্জয় ফলিয়া, নকুল মন্ডল, অ্যাডঃ শুভ মজুমদার, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডঃ প্রতীভা বাকচী, সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর কুমার বর্মন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পরেশ চৌধুরী, ঢাকা মহানগরের সভাপতি শ্যামল ঘোষ, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি গৌতম সরকার অপু, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি মৃনাল মধু, সঞ্জয় গাইন, সঞ্জয় দেবনাথ, নিরুন্দ্র চক্রবর্তী, তপন দাস, যাদব মিত্র, হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজিব কুন্ডু তপু, সহ-সভাপতি অপূর্ব মৃধা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভ্র তালুকদার, সজিব চন্দ্র দাস, শুভজিৎ চক্রবর্তী, সুমন পাল, রুদ্র সাহা, বাণীব্রত সাহা, সবুজ দত্ত, বিষ্ণু বর্মন, শঙ্কর দাস, নূপুর বসাক প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ধ্বংস, মন্দির ধ্বংস পূজার আসবাবপত্র চুরি, লালমনিরহাটে তথাকথিত ধর্ম অবমাননার অযুহাতে পরেশ চন্দ্র শীল ও বিষ্ণুপদ শীল এর ওপর হামলা-জখম ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ-খুন মহামারি আকার ধারণ করেছে। স্বাধীনতার পর থেকেই হিন্দু সম্প্রদায় সর্বক্ষেত্রে অবহেলার শিকার। জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন প্রতিনিধি না থাকায় হিন্দুরা বছরের পর বছর নির্যাতিত হচ্ছে। কিছুদিন আগে যশোরে ১৮টি হিন্দু বাড়ি, দোকান পাঠ, মোটরসাইকেলসহ ঘরের আসবাবপত্র, খাদ্য সব কিছু ভষ্মীভূত করেছে।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা আশা করেছিলাম স্বৈরাচার উচ্ছেদের পর দেশে কোন বৈষম্য থাকবে না। সকল ধর্মের মানুষ সমঅধিকার ও সমমর্যাদা পাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, উপদেষ্টা পরিষদে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নাই। ১০ টি সংস্কার কমিটির একটিতেও কোন হিন্দু সদস্য নাই। বিভিন্ন সেক্টরের নিয়োগে হিন্দু সম্প্রদায় উপেক্ষিত। শুধু তাই নয়, যে সংবিধান সকল নাগরিকের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন। সেই সংবিধান সংস্কারেও হিন্দু সম্প্রদায়ের মতামতও গ্রহণ করে নাই। প্রতিদিনই দেশের কোন না কোন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাংচুর, জমি দখল, হত্যা, হত্যা প্রচেষ্টা, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, দেশ ত্যাগে বাধ্যকরণের হুমকির মত একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে।
বক্তারা বলেন, সম্পত্তি আইনের জাঁতাকলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৬ লাখ একর সম্পত্তি দখল হয়েছে। ঢাকার মদনেশ্বর মহাদেব জিউ ঠাকুরের দেবোত্তর সম্পত্তি, টিপু সুলতান রোডের শঙ্খনিধি মন্দির, হৃষিকেশ দাস রোডের সীতানাথ মন্দিরসহ শত শত মন্দির ও দেবোত্তর সম্পত্তি বেদখল হয়েছে। সারাদেশে সরকারের দখলে থাকা সকল মন্দির ও মন্দিরের জায়গা হিন্দুদের কাছে ফেরতের দাবি করেন।
বক্তারা আরো বলেন, জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতিত হতে হতে আজ সংকটের মুখোমুখি। আগামী নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন পুনঃপ্রবর্তনের দাবি করেন। যদি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে আগামী কোন নির্বাচনে হিন্দু সম্প্রদায় ভোট কেন্দ্রে যাবে না, ভোটে অংশগ্রহণ করবে না, সকল ধরনের ভোট বর্জন করবে বলেও জানান তারা।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: