প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নবনিযুক্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জাট। সোমবার (১৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় তারা সাক্ষাৎ করেন।মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
সাক্ষাতে জোহানেস জুট বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ভালো কাজ করার জন্য আপনাকে এবং আপনার দুর্দান্ত দলকে ধন্যবাদ। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টা, বিশেষ করে আর্থিক ক্ষেত্রে কিছু অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বিষয় মোকাবেলার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের যাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং বাংলাদেশের জনগণের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভাগ করে নিতে প্রস্তুত।
তিনি গত বছরের জুলাইয়ের বিদ্রোহে প্রাণ হারানো শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এটিকে ‘বাংলাদেশের সাথে যুক্ত সবার জন্য একটি অত্যন্ত মর্মস্পর্শী মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা তার সমর্থন এবং কৃতজ্ঞতার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন এটি ছিলো একটি বিপর্যয়কর অঞ্চলের মতো, ভূমিকম্পের পরের জায়গার মতো। আমাদের কোনও অভিজ্ঞতা ছিলো না।
অধ্যাপক ইউনূস জুলাই বিদ্রোহে তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, তারা এই জাতিকে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলো।
তিনি বলেন, গত জুলাই মাসে আমাদের তরুণরা যা করেছিলো তা ঐতিহাসিক ছিলো। বিশেষ করে আমাদের মেয়ে ও নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা আজ জুলাই মাসের নারী দিবস পালন করছি। তাদের ত্যাগ বৃথা যাবে না। তরুণরা আমাদের দেশের কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের তরুণদের ওপর মনোনিবেশ করা দরকার।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশকে কেবল একটি ‘ভৌগোলিক সীমানা’ হিসেবে না দেখার আহ্বান জানিয়ে জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশি অর্থনীতি এর চেয়ে অনেক বড়। যদি বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হয়, তাহলে পুরো দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল সমৃদ্ধ হবে। যদি আমরা নিজেদের আলাদা করি, তাহলে আমরা অগ্রগতি করছি না। আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সুবিধা এবং পরিবহন বিকাশ করতে হবে। আমাদের একটি সমুদ্র আছে। এটি আমাদের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ দেশে তরুণদের অভাব রয়েছে, তাই আমরা তাদের কারখানাগুলি এখানে আনতে বলেছি। শিল্পগুলিকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করবো।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নারীর ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের কাজের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আপনাকে সমর্থন অব্যাহত রাখব। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায়, বাংলাদেশে একটি অগ্রণী মেয়েশিশু শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচি রয়েছে যা অন্যান্য দেশেও অনুকরণ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে যুবদের জন্য সুযোগ তৈরিতে সহায়তা করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাপী ঋণদাতা গত অর্থবছরে বাংলাদেশে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছরেও একই ধরণের সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: