• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

‘জুলাই শহীদ-আহতদের পরিবারের আবাসন প্রকল্পে হরিলুট’ সংবাদ বিষয়ে গণপূর্তের ব্যাখ্যা

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২৮ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ২৩:২২, ২৮ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
‘জুলাই শহীদ-আহতদের পরিবারের আবাসন প্রকল্পে হরিলুট’ সংবাদ বিষয়ে গণপূর্তের ব্যাখ্যা

সম্প্রতি গণমাধ্যমে ‘জুলাই শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য আবাসন প্রকল্পে হরিলুট ৯শ টাকার পিলার ৪০ হাজার’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত উল্লিখিত সব তথ্য সম্পূর্ণ অসত্য যা জনমনে উদ্বেগ তৈরিসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে বলে দাবি করে বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। 

সোমবার (২৮ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা দিয়েছে মন্ত্রণালয়টি।

পাঠকদের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা সম্বলিত বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলো- 

‘প্রতিবেদনে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে- ১) ‘৯শ টাকার পিলারের দাম ধরা হয়েছে ৪০ হাজার টাকা; ২) ২৫ লাখ টাকার লিফট ৯২ লাখ টাকা (৪ গুণ বেশি ব্যয়ে কেনা হচ্ছে বেড লিফট), ৩) ১২ লাখ টাকার সাবস্টেশন ৬৩ লাখ টাকা (সাবস্টেশন কেনা হয়েছে ৫ গুণ বেশি দামে), ৪) ৯৫ হাজার টাকার পানির পাম্প সাড়ে ৪ লাখ টাকা (এমনকি পানির পাম্পও কেনা হচ্ছে ৫ গুণ দামে), এবং ৫) ৪৫ গুণ বেশি ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর। প্রকাশিত প্রতিবেদনের শুরুতে পিলারের বিষয়ে যে ব্যয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, বাস্তবে প্রস্তাবিত প্রকল্পের ২১টি অংগের মধ্যে কোথাও ‘পিলার’ নামে কোনো অঙ্গ নেই। 

এ প্রসঙ্গে আরও উল্লেখ্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে যেকোন উন্নয়ন প্রকল্পের ডিপিপি গণপূর্ত অধিদপ্তরের অনুমোদিত সর্বশেষ দর তফশীল অনুযায়ী প্রণয়ন করা হয়। আলোচ্য ডিপিপির ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় হয়নি। 

প্রকাশিত প্রতিবেদনে লিফট, সীমানা প্রাচীরসহ কিছু অঙ্গের ব্যায় সংক্রান্ত মনগড়া একটি তথ্য দেওয়া হলেও লিফটের ক্ষেত্রে কত স্টপেজ বা সীমানা প্রাচীর এর কাঠামো সংক্রান্ত কোনো Specification দেওয়া হয়নি। কিন্তু আলোচ্য ডিপিপি-তে (ক) সব লিফট ২ মিটার/সেকেন্ড গতিসম্পন্ন বিবেচনা করে উন্নত মানের ব্র্যান্ড ও সর্বোচ্চ নিরাপদ ১৪ স্টপ যুক্ত ৬টি এবং ১০ স্টপের ১২ টি ১০০০ কেজি বেড লিফট, ১৪ স্টপের ১২টি ৮০০ কেজি প্যাসেঞ্জার লিফট বিবেচনা করা হয়েছে, এছাড়া (খ)  ৬টি ১০০০ কেভিএ এবং ১২টি ২৫০ কেভিএ পূর্ণাঙ্গ সাব স্টেশন, প্রয়োজনীয় ক্যাবল, সরকারি বিদ্যুৎ সংযোগ ফিসহ (গ) ২০ হর্স পাওয়ারের ১২ টি এবং ১০ হর্স পাওয়ারের ২৪ টি সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প ও প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক আইটেম এর Specification-সহ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত গণপূর্ত অধিদপ্তরের সর্বশেষ দর তফসিল-২০২২ (সংশোধিত) মোতাবেক পণ্য হিসেবে ডিপিপি'র ক্রয়পরিকল্পনায় প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ১০ (দশ) জন প্রকৌশলী উক্তরুপ মতামত দিয়েছেন।  

উল্লেখ্য, গণপূর্ত অধিদপ্তরের চার সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রাক্কলন বিশেষজ্ঞ টিম উক্ত প্রাক্কলন পরীক্ষা করে নিম্নরুপ মতামত দিয়েছে;

‘৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত কতিপয় আইটেম যেমন-লিফট, সাব-স্টেশন, পাম্প-মোটর, সীমানা প্রাচীর সম্পর্কে উত্থাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রাক্কলনগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। উক্ত পর্যবেক্ষণে বিবেচ্য আইটেমগুলোর দর সম্পর্কে সঠিকতা পাওয়া যায়। উল্লেখিত আইটেমের রেটগুলো গণপূর্ত রেট সিডিউল-২০২২ (সংশোধিত) অনুযায়ী প্রণয়ন করা হয়েছে।

অধিকন্তু, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রস্তাবিত ঢাকার মিরপুর সেকশন-১৪ এ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-২৪-এ শহীদ পরিবারের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানের নিমিত্ত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে ‘৩৬ জুলাই’ আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের ব্যয় বিষয়ে অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বুয়েটের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরীকে আহবাহয়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহমেদ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগ, বুয়েট; অধ্যাপক ড. খান মাহমুদ আমানত, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগ, বুয়েট; স্থপতি ডা. আবু সাঈদ মোশতাক আহমেদ, সভাপতি,  ইনস্টিটিউট অফ আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ এর একজন প্রতিনিধি। 

কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে ‘৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্পের ব্যয় যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে ও সঠিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে মতামত প্রদান। এ কমিটিকে আগামী ০৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

গত ২৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে একটি জাতীয় দৈনিকসহ কয়েকটি পত্রিকায় এ ধরণের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জাতীয় স্বার্থে গণমাধ্যমে প্রকাশিত যেকোনো প্রতিবেদনকে গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করে এবং সে অনুযায়ী জনসেবার মানবৃদ্ধিতে সর্বদা সচেষ্ট থাকে। এ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা সরকারি কাজের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আর্থিক সুশাসন নিশ্চিত করে। গণমাধ্যমে যে কোন সংবাদ পরিবেশনের পূর্বে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলাপ করে ও সরেজমিনে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করা হলো’।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: