আবু সাইদ হত্যার ভিডিও এআই দিয়ে বানানো প্রসঙ্গে যা বললেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ১৭ আগস্ট পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ১১টার পর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম চলে। মাঝখানে কিছুক্ষণ বিরতিও দেওয়া হয়।
এদিন সাক্ষ্য দেন দুই প্রত্যক্ষদর্শী। তারা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিনা মুরমু এবং এনটিভির রংপুর প্রতিনিধি একেএম মঈনুল হক। তারা ২০২৩ সালের ১৬ জুলাই সংঘটিত আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের আগের ও পরের পরিস্থিতি আদালতের সামনে তুলে ধরেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন দুই সাক্ষীকে জেরা করেন। সাংবাদিক মঈনুল হককে জেরা করতে গিয়ে আইনজীবী আমির হোসেন দাবি করেন, আবু সাঈদের ওপর হামলার যে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, তা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। তবে মঈনুল হক এই দাবি অস্বীকার করে জানান, ফুটেজটি তিনি নিজেই ধারণ করেছেন এবং সেটি সম্পূর্ণ সত্য।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর, তানভীর হাসান জোহা বাংলাভিশনকে বলেন, "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালআমি একজন প্রসিকিউটর হিসেবে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ও অন্যান্য ডিজিটাল আলামত আইনগত ও ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে। কোনো ভিডিও বা প্রমাণ কেবলমাত্র সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ‘এআই দিয়ে বানানো’ বললেই বাতিল হয়ে যায় না।
ফরেনসিক অডিও-ভিডিও ল্যাবরেটরির রিপোর্ট অনুযায়ী, উক্ত ভিডিও ফুটেজে কোনো রকম জেনারেটিভ এআই-এর ব্যবহার বা ম্যানিপুলেশন এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভিডিওটিতে টাইমস্ট্যাম্প, মেটাডেটা, এনকোডিং প্যাটার্ন, পিক্সেল ট্রেইল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল ট্রেস বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করেছি।
আদালতে উপস্থাপিত প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্য, কল ডেটা রেকর্ড, জিপিএস লোকেশন ও অন্যান্য সাপোর্টিং এভিডেন্স এর সাথে ভিডিওটির ঘটনাপ্রবাহের সামঞ্জস্যতা রয়েছে। কাজেই ‘এআই দিয়ে বানানো’ এই দাবিকে বিচারের পথে বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একটি উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারের অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি, আদালত নিরপেক্ষভাবে প্রযুক্তিগত প্রমাণ মূল্যায়ন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন।"
বিভি/ এসআই
মন্তব্য করুন: