সমাজসেবী সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজীকে চেনে না নতুন প্রজন্ম
সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজী- যিনি বগুড়ার বিশিষ্ট আইনবিদ, সমাজকর্মী, শিক্ষানুরাগী, সর্বোপরি জনহিতৈষী হিসেবেই পরিচিত। তিনিই বগুড়ার দ্বিতীয় মুসলিম, যিনি গ্ৰাজুয়েট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
জেলা বোর্ডের বেসরকারি সভাপতি পদে মনোনয়নের বিধান চালু হয় ১৯২১ সালে। বগুড়া জেলা বোর্ডের প্রথম বেসরকারি সভাপতি মনোনীত হন বগুড়া বারের তৎকালীন বিখ্যাত উকিল ও প্রসিদ্ধ সমাজসেবী খান সাহেব সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজী।
১৮৯১ সালে এই বিশিষ্টজনকে বগুড়াবাসী পেয়েছেন একজন উকিল হিসেবে। ১৮৯৭ সালে বগুড়া পৌরসভার ভাইস-চেয়ারম্যানের পদ অলংকৃত করা মানুষটিও এই সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজীই। তিনি
১৯২১ সাল থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত বগুড়া জেলা বোর্ডের সভাপতি (চেয়ারম্যান) ছিলেন। সেই আমলে বৃহত্তর বগুড়ার উন্নয়নে তার জনহিতকর কর্মের ছাপ ছিল সর্বত্র। শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে ও প্রয়োজন পূরণে তার অসাধারণ উদ্যোগ ছিল সত্যিই মনোমুগ্ধকর। যা আজও সচেতন মানুষকে মুগ্ধ করে।
বগুড়ার মানচিত্রকে গৌরবান্বিত করা স্থাপনাটি হচ্ছে বগুড়া করোনেশন ইনস্টিটিউশন। বৃটিশ স্থাপত্য নকশায় তৈরি এই স্কুল ভবনের দিকে নজর পড়া মাত্র মানুষ মুগ্ধ হন। ১৯১২ সালে সম্রাট জর্জ'র রাজ্যভিষেককে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বর্তমান স্থানে করোনেশন ইনস্টিটিউশন (স্কুল অ্যান্ড কলেজ) প্রতিষ্ঠিত হয় তারই উদ্যোগে। এর আগে, বগুড়ায় জেলা স্কুল, ভিএম গার্লস স্কুল, বঙ্গস্কুল থাকা সত্ত্বেও আরো একটি মানসম্মত স্কুলের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজী। তার ভাবনার পক্ষে দাঁড়ান বগুড়ার ইতিহাসের শীর্ষ ব্যক্তিত্ত্ব নবাব সোবহান চৌধুরী, খান বাহাদুর হাফিজার রহমান,বরদাকান্ত তালুকদার উকিল প্রমুখরা।  ১৯১১ সালে সম্রাট পঞ্চম জর্জ'র নামে কালিতলা হাটের পার্শ্ববর্তী স্থানে জর্জ স্কুল স্থাপন করেন।

তবে হ্যাঁ, বগুড়া শহরের সূত্রাপুর মহল্লায় রিয়াজ কাজী লেন নামে রাস্তাটি তার নামে অতীতে উৎসর্গ করা হয়। অথচ আজকের প্রজন্ম জানে না সেই মানুষটি কে ছিলেন? ঐ রাস্তার সাথেই ছিল তার বেশ বড় সড় মাটির বাড়ি। সেই বাড়ির জায়গায় আজ গড়ে উঠছে কাজী ওয়াকফ্ টাওয়ার নামে হাই রাইজিং বিল্ডিং।
১৯২৫ সালের ৩০ নভেম্বর সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজী ইন্তেকাল করেন। ক্ষণজন্মা এই কর্মবীরের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল মাত্র ৬৬ বছর। তাঁর জন্মস্থান বর্তমান জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কাজী পাড়া গ্রামে, তার প্রতিষ্ঠিত মসজিদের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন তিনি। সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজী নিঃসন্তান ছিলেন।

সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজীর পূর্ব পুরুষ আরব দেশ থেকে এসে ক্ষেতলালের কাজী পাড়ায় বসতি স্থাপন করেন। তারা ইসলাম ধর্ম প্রচারক ছিলেন। বগুড়ার প্রসিদ্ধ কবি কাজী রব, সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন কাজী বংশেরই একজন ছিলেন।
 
						





 
							
							 
						 
 
										 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							
 
											 
											 
											 
											
মন্তব্য করুন: