• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

সাজাপ্রাপ্ত হয়েও যেভাবে বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছিলেন আ স ম আব্দুর রব

প্রকাশিত: ১৮:১৫, ১১ মে ২০২১

আপডেট: ১৮:২৬, ১১ মে ২০২১

ফন্ট সাইজ
সাজাপ্রাপ্ত হয়েও যেভাবে বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছিলেন আ স ম আব্দুর রব

গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার। বেগম জিয়া'র পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দণ্ড মওকুফ করে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর কোনও সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, 'মানবিক কারণে ৪০১ ধারায় দণ্ড স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে তাঁর সুবিধা মতো চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে তাঁর ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার আরেকটি আবেদন করেন বিদেশে নেওয়ার জন্য। সেটার আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখার জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। তাঁরা মতামত দিয়েছেন, যে ধারায় তাঁর দণ্ড স্থগিত রেখে চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া হয়েছে সেটা পুনরায় বিবেচনা করে বিদেশে পাঠানোর কোনও সুযোগ নেই। তাই আমরা তাঁদের আবেদনটি মঞ্জুর করতে পারছি না।'

তবে দণ্ডিত কারো বিদেশে চিকিৎসার নজির স্বাধীন বাংলাদেশে আছে। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান-এর শাসনামলে সামরিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত রাজনীতিক আ স ম আব্দুর রবকে চিকিৎসার জন্য জার্মানি পাঠানো হয়েছিলো। ওই সময় তিনি অবিভক্ত জাসদের অন্যতম একজন নেতা ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেএসডি সভাপতি।

বেগম জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ না দেওয়ার পর আ স ম আব্দুর রবের সেই ঘটনা নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

সরকার বলছে, সাজাপ্রাপ্ত কারো বিদেশে গিয়ে চিকিৎসার নজির নেই। অন্যদিকে বিএনপি'র পক্ষ উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরও ১৯৭৯ সালে আ স ম আব্দুর রবকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ঘটনাকে।

যেভাবে বিদেশে পাঠানো হয়েছিলো আ স ম আব্দুর রবকে:

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর নভেম্বর মাসে সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান পাল্টা-অভ্যুত্থান চলে। তখন জাসদের তৎপরতায় ৭ নভেম্বর একটি অভ্যুত্থান হয়। ওই সময় ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান।

জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নেওয়ার পর ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হয় কর্নেল আবু তাহেরসহ জাসদের ১৭জন নেতাকে। এঁদের মধ্যে একজন ছিলেন আ স ম আব্দুর রব। তাঁদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান এবং সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিলো। ওই অভিযোগে আব্দুর রবের দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সামরিক আদালতের রায় অনুযায়ী জেল খাটছিলেন আ স ম আব্দুর রব। ১৯৭৫ সালের নভেম্বর থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন। জেল খাটার সময় ১৯৭৯ সালের এপ্রিল মাসে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাঁর অসুস্থতা গুরুতর অবস্থায় চলে যায়, তখন আশংকা করা হচ্ছিলো- তাঁর ব্রেইন টিউমার হয়েছে।

সম্প্রতি বিবিসিকে তিনি বলেন, অবস্থা গুরুতর হলে আমার সাজা মওকুফ না করেই আমাকে ১৯৭৯ সালের ১ মে চিকিৎসার জন্য তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে পাঠানো হয়। তখন জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিলেন।

আ স ম আব্দুর রব বলেন, বিদেশে পাঠানোর আগে আমি আমার দাদির কবর জিয়ারত করতে চেয়েছিলাম। তখন কড়া পুলিশী পাহারায় হেলিকপ্টারে করে আমাকে আমার এলাকা লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমি দাদির কবর জিয়ারত করার পর আবার আমাকে একই হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় এনে ৭৯-এর পহেলা মে পশ্চিম জার্মানি পাঠানো হয়।

ওই সময় সরকার জরুরি ভিত্তিতে তাঁর পাসপোর্ট তৈরি করে দিয়েছিলো বলে জানান তিনি।

তাঁকে বিদেশে পাহারা দেওয়ার জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তাকেও পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু পশ্চিম জার্মানির হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর সংগে কোনো পুলিশ সদস্যকে থাকতে দিতে রাজি হয়নি। তখন জিয়া সরকার সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে ফেরত এনেছিলো।

আ স ম আব্দুর রব আরও জানান, পশ্চিম জার্মানিতে চিকিৎসাধীন থেকেও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করলে ছয় মাস পর বাংলাদেশ সরকার তাঁর চিকিৎসা খরচ বন্ধ করে দিয়ে তাঁকে ফেরত আনার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি ফেরত না এসে জার্মানি প্রবাসী বাংলাদেশি ও জাসদের নেতা কর্মীদের অর্থ সহায়তায় চিকিৎসা শেষ করেন এবং এক বছর পর ১৯৮০ সালের ১ মে ঢাকায় ফেরেন।

তিনি ফেরত আসার কিছুদিন আগে তাঁর সংগে আরও কয়েকজন জাসদ নেতার সাজা মওকুফ করেছিলো জিয়া সরকার।

এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, আ স ম আব্দুর রবের বিচার হয়েছিলো সামরিক আদালতে। সামরিক শাসনে সময়ের ঘটনাকে উদাহরণ হিসাবে আনা যৌক্তিক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বিভি/এমএস

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2