ফেসবুক লাইভে রিয়াজের শ্বশুরের আত্মহত্যা নাড়া দিয়েছে সিআইডি প্রধানকে

সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে নিজের পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করা রিয়াজের শ্বশুর ব্যবসায়ী মহসীন খানের দৃশ্য হৃদয়ে নাড়া দিয়েছিলো বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ঘটনাটি দেখার পর আমি নিজেকে নিজেই ব্লেম দিচ্ছি, এই কারণে যে আমরা কি চাইলেই তাকে বাঁচাতে পারতাম না। কেনো এমন দৃশ্য লাইভে দেখার পরও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। বিষয়টি আমাকে নাড়া দিয়েছে। এজন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি আত্মহত্যা প্রতিরোধে জনসচেতসতা তৈরিতে কাজ করবো।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

(সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, দৃশ্যটি দেখার পর থেকে আমি নিজেকে ব্লেম দিচ্ছি। কাউকে দোষারোপ করছি না। আমার মনে হলো কেনো এ লাইভের ঘটনা সিআইডি জানতে পারলো না? সিআইডির সাইবার পুলিশ অফিসারদের নিয়ে আমি বসলাম। আমার কি দায়িত্ব নেই? আমি কি পারতাম না এটি প্রতিরোধ করতে? এই বিষয়ে কেউ আমাকে দোষারোপ করেনি। আমি নিজে দেখে নিজেকেই দোষারোপ করেছি। এরপর বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকের সিঙ্গাপুর কেন্দ্রীক অফিসে জানতে চাইলাম। ফেসবুক আমাদের জানালো, লাইভের প্রথমে মহসীন খানের কথা স্বাভাবিক ছিলো। তিনি আত্মহত্যা করবেন এমনটা তাদের মনে হয়নি।

তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর ফেসবুকের অফিস থেকে আমাদের জানালো, উনি (মহসীন) সাড়ে ১৬ মিনিটের বেশি লাইভে ছিলেন। কিন্তু প্রথম দিকে তিনি যেভাবে কথা বলছিলেন তারা (ফেসবুক) বুঝতে পারেনি মহসীন খান আত্মহত্যা করবেন। প্রথমে তিনি পরিবার, ব্যক্তিগত জীবন, ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন। ফলে ফেসবুক আত্মহত্যার বিষয়টি বুঝতে পারেনি।

‘লাইভের শেষের আড়াই মিনিট আগে ফেসবুক বুঝতে পারে মহসীন খান আত্মহত্যা করবেন। ফেসবুককে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেন তারা আত্মহত্যা রোধে ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গে কাজ করে।’

সিআইডি প্রধান বলেন, মহসীন খান যখন লাইভ শুরু করেছিলেন তখন কারা কারা লাইভ দেখছিলেন, আমরা সাইবার পুলিশ থেকে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। তবে চিহ্নিত করার উদ্দেশ্য কাউকে দোষারোপ নয়, তাদের সচেতন করা। যাতে ভবিষ্যতে তারা সচেতন হয়ে আমাদের জানাতে পারেন।

তিনি বলেন, আমরা আগে থেকেই আত্মহত্যা রোধে কাজ করে যাচ্ছি। তবে এখন থেকে আরও বেশি এর প্রসার ও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করবে সিআইডি।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়েটিভ কেয়ার বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নেজাম উদ্দিন আহমেদ, ফিজিশিয়ান, কাউন্সিলর এবং সাইকোথেরাপি প্রাকটিশনার ফোনিক্স ওয়েলনেস সেন্টারের প্রফেসর ডা. সানজিদা শাহরিয়া, ড. আহসান উদ্দীন আহমদ, ইশরাত জাহান বিথী, অরুপ দাস, তারেক মিয়াজী প্রমুখ।