• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানিতে ভ্যাট-ট্যাক্স না কমালে দাম বাড়বে

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২৫ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানিতে ভ্যাট-ট্যাক্স না কমালে দাম বাড়বে

বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দামের বর্তমান অবস্থার প্রভাব শিগগিরই দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতের ওপর পড়বে বলে মনে করছেন বেসরকারি উদ্যোক্তারা। দেশে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান সামিট করপোরেশনের চেয়ারম্যান আজিজ খান বলেছেন, ভোজ্য তেলের মতো ডিজেল, ফার্নেস অয়েল এবং এলএনজিসহ বিদ্যুৎ উৎপানের জ্বালানি পণ্যে সব ধরণের ভ্যাট-ট্যাক্স সমন্বয়ের চিন্তা করা উচিত সরকারের। তিনি বলেন, ভোজ্য তেল আমাদের পেটকে এনার্জি দেয়, আর জ্বালানি পুরো অর্থনীতির গতিকে সচল রাখে।

শুক্রবার (২৫ মার্চ) ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) এর পরিচালনা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।  

আজিজ খান বলেন, যে ফার্নেস অয়েল টন প্রতি ২৫০ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হত, তা এখন ৭০০ ডলার দিয়ে কিনতে হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের সরকারকে আগেও ৩০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। বিশ্ব বাজারে দাম বৃদ্ধির পরও সেখানে কোনো ছাড় দেয়নি সরকার। 

তিনি বলেন, বর্তমানে ৭০০ ডলারের ওপর ডিউটি দাঁড়াচ্ছে ২১০ ডলার, যা প্রায় আগের আমদানি মূল্যের সমান। তার মতে, জ্বালানির দাম বেড়ে গেলে তার চেইন ইফেক্ট সোশ্যাল ইকোনোমিতে পড়বে। 

সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মনে করেন, তেলের দাম বেড়ে গেলে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। ফলে,  সেচের খরচ বাড়বে, চালের উৎপাদন ব্যহত হতে পারে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। তাই অন্তবর্তী কালের জন্য হলেও ডিউটি প্রত্যাহারের বিষয়টি সরকারের বিবেচনা করা জরুরী বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ৪২ বিলিয়ন ডলারের বিশাল রিজার্ভ রয়েছে। প্রয়োজনে সেখান থেকে কিছু অর্থ দিয়ে সমন্বয় করা উচিত। মানুষের ওপর বাড়তি দামের বোঝা চাপানো মোটেই সঠিক হবে না বলে মনে করেন এই উদ্যোক্তা।

আজিজ খান জানান,  ভ্যাট-ট্যাক্স সমন্বয়ের জন্য আমরা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই এসআরও জারি করে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করা হবে। জ্বালানির এই অস্বাভাবিক মূল্য বেশিদিন থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন,  দাম কমে এলে আবার ভ্যাট-ট্যাক্স নিতে পারে সরকার। 

তিনি বলেন, অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে একটি হচ্ছে দাম, আরেকটি হচ্ছে পণ্যটি প্রাপ্যতা। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানের মতো রাষ্ট্র পণ্যটি কেনার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ছুটছে। তাদের কাছে দাম কোন বিষয় নয়। কিন্তু বিনিয়োগকারী হিসেবে আমাদের কাছে দামটিও বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার মতে, দামে হয়তো ব্যবসায়ীর খুব একটা যায় আসবে না, কিন্তি জনগণ এটি সামাল দিতে পারবে না। উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হলে সরকারকে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। 

এদিকে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন- বিইআরসিতে দাখিলকৃত বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি থাকায় ফার্নেস অয়েলের আমদানি বাড়াতে হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলে আগে শুল্ক ও কর অব্যাহতি ছিল। কিন্তু গত জুনে ফার্নেস অয়েলে শুল্ক-কর আরোপ করায় খরচ ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরে শুধু জ্বালানি বাবদ ব্যয় বেড়েছে ৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট) বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩ টাকা ১৬ পয়সা জ্বালানি খরচ হয়। 

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে গত নভেম্বরে ডিজেল কেরোসিনের লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়ানো হয়।  সেটি উল্লেখ করে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বিদ্যুতের দাম না বাড়ালে প্রায় ৩০ হাজার ২’শ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।

অন্যদিকে গ্যাসের উৎপাদন ঘাটতি থাকায় আন্তর্জাতিক বাজার থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। যার দাম এখন আকাশচুম্বি। এলএনজির প্রকৃত ক্রয়মূল্য পড়ছে (মার্চে) ৩৬.৬৯ টাকা।  যা অন্যান্য চার্জ দিয়ে ৫০.৩৮ টাকা পড়ছে। গ্যাস সেক্টর বলছে,  দাম না বাড়ালে তাদের প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা লোকসান হবে চলতি বছরে।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: