প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা: থাকছে গোয়েন্দা নজরদারি, বসছে জ্যামার

আগামী শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার পরীক্ষা হবে নিজ নিজ জেলায়। আগামীকাল রবিবার (১৭ এপ্রিল) থেকে এই পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে। আর এই পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রাখতে জ্যামার বসানোসহ বিভিন্ন নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

জানা যায়, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য ডকুমেন্ট ঢাকা থেকে জেলার ট্রেজারি সংরক্ষণ এবং উত্তরপত্র পৌঁছানো হবে। এছাড়া পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রাখতে এসব জ্যামার বসানো হবে। মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে যাতে কেউ পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন করতে না পারেন, সেই জন্যই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:

• বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু
• একটানা ৩৫ দিন ছুটিতে যাচ্ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

এছাড়াও যেকোনো প্রকার ইলেকট্রনিকস কমিউনিকেটিভ ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষার্থীরা যাতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারেন, এ জন্য প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। নারী প্রার্থীদের কানে কোনো ডিভাইস আছে কি না, তা কঠোরভাবে যাচাই করা হবে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ঠেকাতে বিটিআরসি ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করবে।

এবার ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রথম ধাপের পরীক্ষা ২২ এপ্রিল ২২ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা হবে আগামী ২০ মে এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা আগামী ৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। 
 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবেদনকারীর নিজ নিজ জেলায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কোন তারিখে কোন জেলা ও উপজেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

প্রবেশপত্র ডাউনলোড করবেন যেভাবে:
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রার্থীদের আবেদনে উল্লিখিত মুঠোফোন নম্বরে যথাসময়ে ০১৫৫২১৪৬০৫৬ নম্বর থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোডের খুদে বার্তা পাঠানো হবে। প্রথম ধাপের প্রার্থীরা আগামী রবিবার (১৭ এপ্রিল) থেকে এই ওয়েবসাইটে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অথবা এসএসসির রোল, বোর্ড ও পাসের সন দিয়ে লগইন করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে রঙিন প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রার্থীদের অবশ্যই প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট এবং নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে। ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলি এবং পরীক্ষাসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ও প্রবেশপত্রে পাওয়া যাবে।
 
২২ এপ্রিল যেসব জেলার সব উপজেলায় পরীক্ষা:
ঢাকা, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মাগুরা, শেরপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, লালমনিরহাট।

এদিন যেসব জেলার কিছু উপজেলায় পরীক্ষা:
যশোর (ঝিকরগাছা, কেশবপুর, মনিরামপুর, শার্শা), সিরাজগঞ্জ (উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, কামারখন্দ, কাজীপুর), ময়মনসিংহ (ভালুকা, ধোবাউড়া, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ঈশ্বরগঞ্জ), নেত্রকোনা (আটপাড়া, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, কেন্দুয়া), কিশোরগঞ্জ (অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, ভৈরব, হোসেনপুর, ইটনা, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী), টাঙ্গাইল (সদর, ভুয়াপুর, দেলদুয়ার, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, গোপালপুর), কুমিল্লা (বরুড়া, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, সদর, মেঘনা, দাউদকান্দি) ও নোয়াখালী (কবিরহাট, সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, সুবর্ণচর)।

২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগের আবেদন শুরু হয়। ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ প্রার্থী আবেদন করেছেন। সে হিসাবে ১টি পদের জন্য ২৯ প্রার্থীর মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে।