• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত

প্রকাশিত: ১৫:৪৪, ২৭ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (সেপা) করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। তার এ সফরে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।

সফর নিয়ে দুই দেশে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রস্তুতি চলছে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, পানি বণ্টন, কানেকটিভিটিসহ এক ডজন চুক্তি, সমঝোতা ও ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোর পাশাপাশি বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে পারেন প্রতিবেশী দুই দেশের শীর্ষ নেতারা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় সফরে ৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লি পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন তিনি দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নৈশভোজে যোগ দেবেন। পরদিন সকালে রাজঘাটে গান্ধী সমাধিস্থলে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর হায়দরাবাদ হাউসে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রথমে একান্তে ও পরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে। ৭ সেপ্টেম্বর ভারতের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরবেন। ৮ সেপ্টেম্বর রাজস্থানে আজমির শরিফ জিয়ারত শেষে তিনি ঢাকা ফিরে আসবেন।

ঢাকা ও দিল্লি কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানান, সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (সেপা) স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা বৈঠকে চুক্তিটি স্বাক্ষরের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর ভারতে রপ্তানিসহ বাণিজ্য সুবিধা বাড়াতে বাংলাদেশের আগ্রহে এ চুক্তি হতে যাচ্ছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এ চুক্তির ব্যাপ্তি অনেক বেশি হওয়ায় চলমান মুক্তবাণিজ্য চুক্তি থেকে এটির অনেক ভিন্নতা রয়েছে। নতুন এ চুক্তিতে পণ্য ও সেবা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মেধাস্বত্ব ও ই-কমার্সের মতো অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকছে। চুক্তির আওতায় দুই দেশের মধ্যে দুই দেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের বাইরে পণ্য ও সেবা বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের মধ্যে আন্তদেশ ও আন্তখাত বিনিয়োগের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- খাদ্য, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কাপড় ও পোশাক খাত, কৃষিভিত্তিক শিল্প ও কৃষি যন্ত্রপাতি কারখানা, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল ও ইলেকট্রনিক্স, সিরামিক, আইসিটি, ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা, টেলিযোগাযোগ ও বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প। ভারতের যেসব খাতে বিনিয়োগকে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হলো- খাদ্য ও পানীয়, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ, ওষুধ, প্লাস্টিক ও রাবার পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কাপড় ও পোশাক, পাট ও পাটপণ্য, সিমেন্ট, স্পিনিং মিল, ইলেকট্রনিক্স ও ব্যাটারি, ভ্রমণ ও পর্যটন এবং আইসিটি। যেসব খাতে বাংলাদেশ ভারতে সেবা রফতানি করতে পারবে- পেশাদারী সেবা, আইটিটিইএস সার্ভিস, অবকাঠামো ও তৎসংশ্লিষ্ট সেবা, আর্থিক এবং যোগাযোগ সেবা। ভারত যেসব খাতে বাংলাদেশে সেবা রপ্তানি করতে পারবে- অন্যান্য ব্যবসায়িক সেবা, পর্যটন, ব্যক্তিগত ভ্রমণ ও পণ্য বহন সেবা, টেলিযোগাযোগ, কম্পিউটার ও তথ্যসেবা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা। বিদ্যমান নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশে ভারতীয়রা বিনিয়োগ করতে পারলেও বাংলাদেশিরা বিনিয়োগ করতে চাইলে আগে ভারত সরকারের অনুমতি নিতে হয়। ভারত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ সমানুপাতিক করার পক্ষে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- ‘সেপা’র অধীনে বৈধ বিনিয়োগব্যবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে দুই পক্ষই কাজ করবে, যাতে উভয় দেশের মধ্যে বিনিয়োগপ্রবাহ স্বতঃস্ফূর্ত হওয়ার পাশাপাশি দ্রুততার সঙ্গে এবং সিঙ্গেল উইন্ডোব্যবস্থায় সম্পন্ন করা যায়।

জানা যায়, চার বছর আগে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (সেপা) নামে নতুন এক চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করে দুই দেশ। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ চুক্তির প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। এর আগে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারত সেপা করেছে ১৯৯৮ সালেই। এরপর সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ২০০৫ সালে; দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ২০০৯ সালে; নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ২০১০-১১ সালে এবং থাইল্যান্ডের সঙ্গে করেছে ২০১৫ সালে।

আরও যেসব বিষয় আলোচনায় আসন্ন সফরে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে তেমনভাবে আশা করা না হলেও কুশিয়ারার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি হবে। গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন হবে। আর ছয় নদীর পানি বণ্টন নিয়ে হতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন পানি ব্যবস্থাপনা চুক্তি। এ সফরে আরও যেসব বিষয় আলোচনায় আসবে তার মধ্যে আছে- প্রতিরক্ষা ঋণ কাজে লাগানো, প্রতিরক্ষা খাতে বাণিজ্য, যৌথ উৎপাদন ও যৌথ উদ্ভাবনের সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা। এ ছাড়া মেরিটাইম সিকিউরিটির জন্য ভারত থেকে রাডার কেনা নিয়েও কথা হবে। উপ-আঞ্চলিক এনার্জি হাব গঠন নিয়ে কথা হবে। বাংলাদেশ নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে চায়। একই সঙ্গে এ অঞ্চলে জ্বালানি নিরাপত্তা কানেকটিভিটি বিষয়টি নিয়ে যৌথভাবে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ। এ ছাড়া সীমান্ত ব্যবস্থাপানার মধ্যে শূন্যরেখার কাছাকাছি কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়েও আলোচনা হতে পারে শীর্ষ বৈঠকে।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2