স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তারেক রহমান
আজ তাঁর জন্মদিন

ছবি: তারেক রহমান
তারেক রহমান। জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বাংলাদেশের লাখ-কোটি মানুষের আস্থার প্রতীক। আগামীর বাংলাদেশ অনেকটাই যার পানে তাকিয়ে। বিশেষ করে জাতীয়তাবাদী শক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে এই রাজনীতিবিদ। বিগত বছরগুলোতে পাহাড়সম রাজনৈতিক চড়াই-উৎরাই সামলে নিজেকে প্রমাণ করেছেন দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির এই কান্ডারী। দিন-রাত এক করে সকল গণতন্ত্রকামীদের রেখেছিলেন এক ছাতার নিচে।
নানা সংকট,নির্যাতন-নিপীড়ন আর প্রলোভনের মুখেও নিজের দলকে রেখেছেন ঐক্যবদ্ধ। ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায়ও তার গৃহীত পদক্ষেপ ও বক্তব্য-বিবৃতি আলো ছড়াচ্ছে সবমহলে। বিশেষ করে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে দলটির ভাবনায় ফুটে উঠেছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভবিষৎ কর্মপরিকল্পনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় তারেক রহমানের এখনকার কার্যক্রম,পদক্ষেপ ও বক্তব্য বেশ সুবিবেচনাপ্রসূত ও গ্রহণযোগ্য। গণমানুষের আকাঙ্ক্ষাকে মাথায় রেখে কথা বলছেন তিনি। অনেকের মতে, গত ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা এবং অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দলকে সুসংগঠিত করার পাশাপাশি বাস্তব অবস্থার মুখোমুখি হয়েছেন তারেক রহমান। ফলে নিজেকে অনেক বেশি প্রস্তুত করেছেন বাংলাদেশের রাজনীতির এই তারকা।
জার্মানির ডয়েচে ভেলে একাডেমি ও বন রাইনজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সাইমুম পারভেজ এর মতে, একজন রাজনৈতিক নেতা ও ভবিষ্যত রাষ্ট্রের পরিচালক হিসেবে গড়ে উঠার যে যোগ্যতা ও বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন, তা তারেক রহমানের বক্তব্য ও কার্যক্রমে এখন স্পষ্ট। সস্তা ও স্বল্পমেয়াদি জনপ্রিয়তার পেছনে না ছুটে তারেক রহমান দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তনের কথা ভাবছেন, যা তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কথাই বলে। দীর্ঘ দেড় দশক আওয়ামী সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিপীড়ন ও রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে বিএনপি যে টিকে থেকেছে, সংগ্রাম করেছে তার পেছনে তারেক রহমানের নেতৃত্বের অবদান রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও বাংলাদেশ যখন অস্থির সময়ের মুখোমুখি, তখনও তারেক রহমান বেশ কিছু সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের নিজেও বলেছিলেন যে তারা ক্ষমতাচ্যুত হলে এক লক্ষ নেতা-কর্মী নিহত হবে। কিন্তু বিএনপির সহনশীল নীতি ও তারেক রহমানের নির্দেশেই শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পরেও দেশে বড় ধরণের রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটেনি। এই সহনশীলতা ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা বিএনপি এখনো করছে এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগের মোকাবেলা করছে।
রাজনৈতিক যোগাযোগ বিষয়ক এই শিক্ষক বলেন,তারেক রহমান নিজে ব্যক্তিভাবে নানা দুঃখ কষ্টের শিকার। বাবা হারিয়ে এতিম হয়েছেন। ভাইকে হারিয়েছেন। অসুস্থ মাকে কারাগারে বন্দি দেখার দু:সহ যন্ত্রনা নিয়ে কাটিয়েছেন। এসব সত্ত্বেও ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রতিশোধ না নেওয়ার যে প্রবনতা তার প্রশংসা তারেক রহমানের তীব্র বিরোধীদেরও করা উচিত। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অনেকে অংশ তারেক রহমান ও বিএনপির বিরুদ্ধে "জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতা ও দুর্নীতি"র অভিযোগ তোলেন। কিন্তু বিচারবিভাগের অসীম দলীয়করণ ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর পরও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রমাণিত হয়নি। বরং তাঁর বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আওয়ামী লীগের নেতায় পরিণত হওয়া এবং সংসদ সদস্যের মনোনয়ন পাওয়া, তাঁকে খালাস দেয়া বিচারকের হয়রানি মামলাগুলোর অসারতা তুলে ধরে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদেরও হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি, টাকা পাচার, ব্যাংক লুট, মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতির সামনে বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্বল দুর্নীতির অভিযোগ ঠুনকো মনে হয়।
ড. সাইমুম বলেন,তারেক রহমানের কাছে বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনেক। পরিবর্তিত রাজনীতিকে সহনশীল রাজনীতি, উদার-গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় তিনি এগিয়ে যান, এই প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।
তারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দম্পতির বড় সন্তান। ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজে প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করে ১৯৮০-এর দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হন।
এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি তার মায়ের সাথে রাজপথের আন্দোলনে যোগ দিয়ে তৃণমূল থেকে জনগণকে সংগঠিত করেছিলেন এবং এরশাদের সরকারের পতনে ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৮৮ সালে পিতা জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলা কমিটির সদস্য হিসেবে যোগদান করে তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দেয়ার আগেই তিনি রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক রহমান তার মা খালেদা জিয়ার সহচর হিসেবে সারা দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও তারেক রহমান বেগম জিয়ার প্রচারণা কার্যক্রমের পাশাপাশি পৃথক পরিকল্পনায় দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালান। তার প্রচেষ্টায় নির্বাচনে বিএনপি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। স্বীকৃতি হিসেবে ২০০২ সালে স্থায়ী কমিটি তাকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে মনোনীত করে। ২০০৫ সালে তিনি দেশব্যাপী তৃণমূল সম্মেলন আয়োজন করেন এবং দেশের প্রতিটি উপজেলা ইউনিটের সাথে মতবিনিময় করেন। এই সম্মেলনের সময় তিনি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলা, স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করা এবং সমর্থকদের চিন্তাধারা শোনেন এবং জনগণের কাছে বিএনপির কর্মসূচি প্রচার করেন। তিনি কৃষকদের জন্য সরকারি ভর্তুকি, বয়স্কদের জন্য ভাতা, পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্লাস্টিক ব্যাগ বিরোধী আন্দোলন, এবং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি বিতরণ সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করেন, যা স্কুলে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য কমিয়ে ভারসাম্য আনতে সহায়ক হয়। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সম্মেলনে নিবন্ধনকারীদের অন্তত ১৮ হাজার চিঠির উত্তর দেন। মূল সংগঠন ছাড়াও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদল আয়োজিত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তারেক রহমান কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন ও মাঠপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ও মতামত গ্রহণ করেন। মূলত এই জনসংযোগ কার্যক্রমের ফলে দলের নেতাকর্মীদের তরুণ অংশের মাঝে তারেক রহমান শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধানমন্ত্রীর সন্তানের পরিচিত থেকে বেরিয়ে এসে দলের একজন দক্ষ সংগঠক ও সক্রিয় নেতা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।
সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৭ মার্চ ২০০৭ তারিখে একটি দুর্নীতি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে। প্রায় আঠারো মাস কারান্তরীণ থাকার পর ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ তারিখে সব মামলায় তারেক রহমান জামিন লাভ করেন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তি লাভ করেন। ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ তারিখে তারেক রহমান উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে যান। তখন থেকে সেখানে বসবাস করছেন তিনি। ২০০৯ সালে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারেক রহমান এবং বিএনপির পুনর্গঠনে যুক্ত হন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তারেক রহমানের একটি ধারণকৃত বক্তব্য প্রচার করা হয়। তারেক রহমান জানুয়ারি ২০০৭-এ ক্ষমতায় আসা সরকারের হাতে তার গ্রেপ্তার ও বন্দি অবস্থায় নির্যাতনের বর্ণনা দেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে আপাতদৃষ্টিতে মনে হওয়া বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার আড়ালে তাকে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে যখন তার মা সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দি হন, তখন তাকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়। তখন থেকেই তিনি শেখ হাসিনার অপশাসন আর দু:শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
১৯৯৪ সালে তারেক রহমান সাবেক নৌবাহিনী প্রধান এবং পরবর্তী সরকারের দুই বারের মন্ত্রী প্রয়াত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের কন্যা ডাঃ জোবায়দা রহমানকে বিয়ে করেন। জোবায়দা রহমান একজন কার্ডিওলজিস্ট। জাইমা জারনাজ রহমান নামে তাদের একটি কন্যা রয়েছে।
রাজনীতির বাইরেও ‘মানবহিতৈষী’ হিসেবে সুখ্যাতি আছে তারেক রহমানের।
বহু বছর ধরে অসহায় ও দরিদ্রদের জন্য নীরব অভিভাবক হয়ে আছেন তিনি। নিজের ভাগ্যের পরিহাস সহ্য করেও তিনি ধারাবাহিকভাবে অভাবী মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মনুষ্যসৃষ্ট সংকটেও দলীয় এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন তারেক রহমান। বছরের পর বছর ধরে এমন কাজ অব্যাহত রেখেছেন আপন গতিতে। এছাড়াও “জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন”সহ একাধিক সংগঠনের ব্যানারে ছায়া হয়ে দাড়িয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর ব্যানারে মানবতার সেবায় নানা কর্মসূচি আরও সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে । এই প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন বলেন, ‘জনাব তারেক রহমান এমন একটি নাম, যার মনভরা ভালোবাসা এদেশবাসীর জন্য। বিশেষ করে এদেশের নিম্নবিত্ত ও অস্বচ্ছল পরিবারগুলোর জন্য। তারেক রহমান গত স্বৈরাচার সরকারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে যেসব পরিবারগুলো খুবই খারাপ অবস্থায় ছিলো যেমন গুম-খুনের শিকার, এসব পরিবারগুলোর পাশে ২০১০ সাল থেকেই তাদের আগলে রেখেছেন, সময় পেলেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর খোজঁখবর নেন এবং তাদের সুখে-দু:খে পাশে থাকেন। কোথাও কারো শিক্ষার জন্য সহযোগিতা,কোথায় কার স্বাস্থ্যসেবা দরকার,কোথায় কার অন্ন-বস্ত্র দরকার, কোথায় কার ঘরবাড়ি দরকার, এমনকি ওই পরিবারগুলোর উপযুক্ত মেয়ের বিবাহ পর্যন্ত দিয়েছেন তিনি নিজ উদ্যোগে। ’
মিডিয়া সেলের এই সদস্য বলেন, ‘সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারগুলোর পাশে তিনি দাঁড়িয়েছেন আমাদের মাধ্যমে। “আমরা বিএনপি পরিবার” ২৮ টি জেলায় সফর করেছি, আমরা ঢাকা মহানগরীও প্রায় শেষ করে এনেছি, আরো কিছু আছে, আমরা এসব জায়গায় তার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি, তার সহমর্মিতা,সহযোগিতা পৌঁছে দিচ্ছি। কারণ, তিনি আমাদেরকে এই কাজে নিযুক্ত করেছেন। তিনি যখনই সময় পান তখনই ওই পরিবারগুলোর খোঁজ নেন। তারেক রহমান একজন মানবিক নেতা।’
আমি তারেককে ভালবাসি
-এমাজউদ্দীন আহমদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সাবেক ভিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
তারেক রহমানকে আমি দেখি একজন শিক্ষকের দৃষ্টি দিয়ে। ভাল ছেলে। বিনয়ী, সদাশয়, মৃদুভাষী। নন্দিত জাতীয় নেতা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। নেতা-নেত্রীর কাতারে বুদ্ধিদীপ্ত অগ্রগামী তারুণ্যের প্রতীক। দীর্ঘজীবী হোক এই কামনা প্রতি মুহূর্তের।
তাকে চিনি দীর্ঘদিন ধরে। কোন আলোচনা সভা বা সেমিনারে নয় বরং ঘরোয়া পরিবেশে। সুশীল তরুণ হিসাবে। তার বক্তব্য ঋজু। চিন্তা-ভাবনা সুস্পষ্ট। কৃত্রিমতা এখনো তাকে স্পর্শ করেনি। স্পর্শ করেনি দুর্বুদ্ধিপ্রসূত কোন জটিলতা। সম্ভবত এ কারণে তারেকের বন্ধু যতজন, শত্রু ও প্রায় ততজন। অমিত সম্ভাবনাময় জীবনের অধিকারী এই তরুণের প্রতি তাই আমার উপদেশ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পথ চলতে হবে। যিনি সবকিছু বিসর্জন দিয়ে অন্যের কথা ভাবেন, অন্যের জন্যে কাজ করেন, অন্যরা হয়ে পড়েন তারই অতি আপন। তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তার খুব কাছের মানুষ। লর্ড এ্যাক্টন ভাবুকদের মহলে খুব পরিচিত একটা নাম। তিনি খুব বেশি লেখালেখি করেননি, কিন্তু যে ক’টা লেখা লিখেছেন তা খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। একটি লেখায় তার বক্তব্য ছিল: ‘ক্ষমতার একটি বিষক্রিয়া রয়েছে এবং নিরঙ্কুশ ক্ষমতার বিষক্রিয়া সর্বব্যাপক।’ কিন্তু যে যোগ্য ব্যক্তি ক্ষমতা অথবা অর্থবিত্তের উপেক্ষা করে চলেন, ক্ষমতা অথবা অর্থবিত্ত তার পেছনেই ছোটে। তারেক রহমানকে একথা বলছি এ জন্যে যে, তার পিতা রাষ্ট্রক্ষমতা সম্পর্কে নিরাসক্ত ছিলেন বলেই তারই অজ্ঞাতে এবং অনিচ্ছায়, ১৯৭৫ সালের ৭ নবেম্বরে ক্ষমতার শূন্যতা পূরণে তাঁকেই দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের। বেগম খালেদা জিয়া প্রচুর অনুনয়-বিনয়ের পরেই রাজি হন বিএনপির হাল ধরতে, কিন্তু তিনিই তো সবচেয়ে দীর্ঘকাল প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বাংলাদেশের সেবা করেছেন।
এদেশের লাখো কোটি মানুষ চায় তারেক রহমানের জীবন সফল হোক। আমিও তাদের একজন। তার পথের দু পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য কণ্টক। এসবকে এড়িয়ে চলতে হবে তাকে, আর খুঁজে পেতে হবে সৎ, সাহসী, সৃজনশীল বান্ধবদের। জাগ্রত রাখতে হবে সর্বক্ষণ তার বিবেককে। বুদ্ধির পরিবর্তে প্রজ্ঞার নির্দেশ মেনে চলতে হবে। মস্তিষ্কের চেয়ে অন্তকরণের নির্দেশনাই এদেশে অধিক কার্যকর হয়েছে, সবসময়। তারও পথনির্দেশনা দিক তার বিবেক, তার অন্তঃকরণ।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: