এফবিসিসিআই এর সংস্কার উত্তর নির্বাচন ও কিছু কথা

লেখক: আতিকুর রহমান
গত ২০ মে ২০২৫ তারিখে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বর্তমান গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার বাণিজ্য সংগঠন বিধি -২০২৫ সংস্কার করে গেজেট প্রকাশ করে। গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে ফ্যাসিস্টদের দোসর ছাড়া সাধারণ ব্যবসায়ীরা এটাকে সাধুবাদ জানায়। কেননা ব্যবসায়ীদের মূল দাবিসমূহ যথা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি ও পরিচালক নির্বাচিত করা, মনোনীত পরিচালকের সংখ্যা গ্রহণযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা; পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা কমানো প্রভৃতি বিধিতে সন্নিবেশ করা হয়েছে।
কিন্তু বাণিজ্য সংগঠন বিধি - ২০২৫ প্রণয়নের পর থেকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে বিভিন্ন প্রোপাগাণ্ডা ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিভ্রান্ত ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। বিগত দিনগুলোতে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের সুযোগ সুবিধা নিয়ে আমি -ডামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। গত এফবিসিসিআই ২০২৩ -২০২৫ মেয়াদের নির্বাচনে শেখ ফজলে ফাহিম এর প্যানেলে সাজানো নির্বাচন অংশগ্রহণ করেছে ফ্যাসিস্টদের বি টীম হিসাবে। এখন তারাই সংস্কার কে বলছে কালো আইন।
পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সকল সেক্টরে বিশৃংখলা ও দেশকে অস্হিতিশীল করার অংশ হিসাবে এদেরকে মাঠে নামিয়েছে ব্যবসা বাণিজ্য সেক্টরে অস্হিতিশীলতা তৈরি করার জন্য। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও মাননীয় প্রশাসক, এফবিসিসিআই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সংস্কার সম্পূর্ণ করে দ্রুত নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করে নির্বাচিত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কে সুসংহত করা। গুটি কয়েক দোসর মানব বন্ধন করে দাবী জানায় - বাণিজ্য সংগঠন বিধি -২০২৫ কে বাতিল করতে হবে- কেউ বলেন আগের বিধিতে ফেরত যেতে হবে, কেউ বলেন পরিচালকের সংখ্যা বাড়াতে হবে - সমন্বিত কোন প্রস্তাবনা নাই। মূল উদ্দেশ্য ব্যবসা বাণিজ্য খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, সরকারের সংস্কার ও নির্বাচন কাজকে ব্যাহত করার চেষ্টা করা।
বর্তমান সরকার ফ্যাসবাদবিরোধী সকল দল কে সাথে নিয়ে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্টানের পাশাপাশি বিভিন্ন সেক্টরে স্টকহোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে সুযোপযোগী সংস্কার করছে। বাণিজ্য সংগঠন সমূহ ও এফবিসিসিআই - এ যেন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা নেতৃত্ব দিতে পারেন,ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে কাজ করতে পারেন এমন একটি বিধি প্রণয়ন হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে বিধিকে গোষ্ঠী ও দলীয় স্বার্থে বারংবার কাঁটাছেড়া করা হয়েছে। নির্বাচন বিহীন, আমি -ডামি নির্বাচন, পিএমও অফিস থেকে পাঠানো লিস্ট ধরে পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে এফবিসিসিআই ২০২৫/২৬ ও ২০২৬/২৭ মেয়াদের জন্য নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড গঠন করেছে।
অর্থ্যাৎ এফবিসিসিআই এর নির্বাচনী ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। ব্যবসায়ী বন্ধুদের বলবো পতিত স্বৈরাচারের লেজুড়বৃত্তি বাদ দিয়ে, তাদের পরামর্শে ব্যবসা সেক্টরে অরাজকতা তৈরির চিন্তা বাদ দিয়ে, আসুন - ব্যবসায়ীদের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নে কাজ করি। আমাদের সন্তানতুল্য ছাত্ররা ফ্যাসিবাদ মুক্ত করে, দেশ গঠনের যে সুযোগ করে দিয়েছে, যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে একটি সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখি।
আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে উৎসব মুখর পরিবেশে সকলে অংশগ্রহণ করি। সম্মানিত ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়, দীর্ঘদিন পর নেতৃত্ব বাছাই করার সুযোগ করে দেয়। সংস্কার তখনই প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করবে, যখন ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারবেন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে- এমন এফবিসিসিআই প্রতিষ্টায় হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা।
লেখক: আহবায়ক, লিয়াজোঁ ও মিডিয়া কমিটি, বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ - FBCCI
(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার বাংলাভিশন নিবে না।)
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: