• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

কোরবানির পশু কেনার আগে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে

ডা. আবির আহাম্মেদ

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ৩ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৬:৫২, ৩ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
কোরবানির পশু কেনার আগে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে

কোরবানির জন্য হাটে তোলা পশু। ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা আর মাত্র তিনদিন বাকি। এই ঈদে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে বিভিন্ন ধরণের পশু কোরবানি করা হয়। ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চাহিদা বছরের পর বছর ধরে বেড়েছে।এ বছর এই ঈদে সারাদেশে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ এবং উটসহ প্রায় ১কোটি ২৪ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩৩৭ টি গবাদি পশু কোরবানিযোগ্য।

ইসলামী আইন (শরীয়া আইন) অনুযায়ী প্রযোজ্য প্রাণী: 
ভেড়া, ছাগল, মহিষ, উট এবং গরু (গরু বা ষাঁড়) কুরবানি করা সম্ভব।
গরুদের ক্ষেত্রে, সর্বোচ্চ সাতজন লোক একটি পশু ভাগ করে নিতে পারে, যা সাত ভাগের সমান।

সুস্থ কোরবানির পশু সনাক্ত করতে আপনাকে সাহায্য করার জন্য এখানে কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হল।

বয়স: কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে বয়স খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গরুর ক্ষেত্রে, উপযুক্ত বয়স দুই বছর হওয়া উচিত। সাধারণত, গরুর দাঁত দেখেই বোঝা যায়। একটি সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক গরুর দাঁত দেখে পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়স সঠিক ভাবে শনাক্ত করা যায়।

দুই বছর বয়সী একটি সুস্থ গরুর দুটি স্থায়ী দাঁত থাকা উচিত, তিন বছর বয়সে চারটি, চার বছর বয়সে ছয়টি এবং পাঁচ বছর বয়সে মোট আটটি স্থায়ী দাঁত থাকা উচিত।দাঁতগুলো অক্ষত এবং দেখতে সুন্দর হওয়া উচিত।

ছাগলের ক্ষেত্রে, উপযুক্ত বয়স কমপক্ষে এক বছর হওয়া উচিত। উটের ক্ষেত্রে, পাঁচ বছর এবং ভেড়ার ক্ষেত্রে এক বছর হওয়া উচিত।তবে যদি ছয় মাস বয়সী ভেড়াটি বড় এবং দেখতে এক বছরের মতো হয়, তাহলে তা কুরবানি করা যেতে পারে।

শারীরিক চেহারা: এমন প্রাণীদের সন্ধান করুন যাদের শারীরিক চেহারা সুস্থ।তাদের চোখ উজ্জ্বল এবং পরিষ্কার হওয়া উচিত এবং তাদের পশম মসৃণ ও তেলতেলে থাকা উচিত।প্রাণির নাকের অগ্রভাগে ভেজা ও বিন্দু বিন্দু ঘাম জমবে ও চকচক করবে।

শরীরের অবস্থা: পশুর শরীরের অবস্থা পরীক্ষা করুন।তাপমাত্রা স্বাভাবিক কিনা তা পর্যবেক্ষণ করুন। স্বাভাবিক নাড়াচাড়া করে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন।তাদের শরীরের ওজন ভালো হওয়া উচিত, খুব বেশি রোগা বা অতিরিক্ত ওজনের নয়।
শ্বাস-প্রশ্বাস এবং শ্বাসযন্ত্র: পশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরণ পর্যবেক্ষণ করুন।এটি নিয়মিত হওয়া উচিত এবং ক্লান্তিকর হওয়া উচিত নয়।নাক বা মুখ থেকে কোনও অস্বাভাবিক শব্দ হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করুন, কারণ এগুলি শ্বাসকষ্টের সমস্যা নির্দেশ করতে পারে।

চলাফেরা এবং লেজ নাড়া: প্রাণীটির চলাফেরা লক্ষ্য করুন।তারা যেন কোনও অসুবিধা ছাড়াই হাঁটতে বা দৌড়াতে পারে।যেসব প্রাণীর খোঁড়ার লক্ষণ দেখা যায় অথবা দাঁড়াতে বা নড়াচড়া করতে সমস্যা হয়, তাদের এড়িয়ে চলুন। সুস্থ প্রাণি সবসময় লেজ ও কান নাড়াচাড়া করবে।

আচরণ এবং মেজাজ: প্রাণীর আচরণ এবং মেজাজের দিকে মনোযোগ দিন।সুস্থ প্রাণীরা সাধারণত সতর্ক, প্রতিক্রিয়াশীল এবং স্বাভাবিক আচরণের ধরণ প্রদর্শন করে।অতিরিক্ত আক্রমণাত্মকতা, নার্ভাসনেস বা অস্বাভাবিক আচরণ প্রদর্শন করা পশু এড়িয়ে চলুন।

ক্ষুধা এবং পাচনতন্ত্র: একটি সুস্থ প্রাণীর ক্ষুধা ভালো থাকবে এবং তারা খাওয়ার প্রতি আগ্রহ দেখাবে। প্রাণি দিনে ৭/৮ বার জাবর কাটবে। ডায়রিয়া, বমি বা অস্বাভাবিক মলত্যাগের কোনো লক্ষণ দেখা যায় কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

পশু চিকিৎসককে দিয়ে পরিদর্শন: সম্ভব হলে, পশুকেনা বা কোরবানির আগে একজন পশু চিকিৎসককে পশু পরীক্ষা করান। একজন পশু চিকিৎসা পেশাদার তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করতে পারেন এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিতে পারেন।

মনে রাখবেন, কোরবানির জন্য পশু নির্বাচন করার সময় তাদের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া অপরিহার্য।তাদের শারীরিক অবস্থা সাবধানতার সাথে মূল্যায়ন করে এবং প্রয়োজনে পেশাদার নির্দেশনা গ্রহণ করে, আপনি নিশ্চিত করতে পারেন যে নির্বাচিত পশুগুলি এই কোরবানির জন্য উপযুক্ত কিনা।

ডা. আবির আহাম্মেদ

লেখক: প্রাণী চিকিৎসক, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: