• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনীতি: নতুন দিগন্তের আহ্বান, নাকি পুরোনো অনিশ্চয়তার পুনরাবৃত্তি?

অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিম 

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ১৬ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ১৫:২৬, ১৬ আগস্ট ২০২৫

ফন্ট সাইজ
বাংলাদেশের রাজনীতি: নতুন দিগন্তের আহ্বান, নাকি পুরোনো অনিশ্চয়তার পুনরাবৃত্তি?

অধ্যাপক ড. মোঃ ফজলুল করিম

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ সবচেয়ে বড় সংকট হলো—জাতির জন্য একটি সমন্বিত রূপরেখার অভাব। প্রতিটি রাজনৈতিক দল নিজেদের লক্ষ্য নিয়েই সীমাবদ্ধ থেকেছে; সবার জন্য একটি যৌথ ভিশন বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তারা উপস্থাপন করতে পারেনি।

৫ আগস্ট-পরবর্তী পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে বিএনপির জন্য অনুকূল। আগামী নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া এক ধরনের অনিবার্য বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই বাস্তবতার ভেতরে আরেকটি গুরুতর প্রশ্ন রয়ে গেছে—অপ্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে বিএনপি কি নিজেদেরকে আরেকটি স্বৈরাচারী সরকারে পরিণত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে? এটি তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো বড় দুই দলের বাইরে কোনো কার্যকর তৃতীয় শক্তি তৈরি হয়নি। এমন কোনো ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বও দৃশ্যমান নয়, যিনি বিকল্প ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারেন বা নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে পারেন। বাস্তবতায়, নির্বাচন বাদ দিয়ে যদি ক্ষমতা দখলের প্রয়াস থাকে, সেটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রসঙ্গ। এ কারণেই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদৌ নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন ছিল জাতীয় ঐক্যের একটি রূপরেখা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত ছিল স্পষ্টভাবে জানানো—কীভাবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দেশ পরিচালিত হবে। কিন্তু তারা অস্পষ্ট সংকেত দিয়েছে; সহজ বিষয়গুলোকে জটিলভাবে উপস্থাপন করেছে। এর ফলে অনিশ্চয়তা কমার বদলে বেড়েছে। সুতরাং, শুধু নির্বাচন আয়োজন করলেই দ্বন্দ্বের সমাধান হবে না।

আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাস বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ের মধ্যেই দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাবে তা পরিষ্কার হয়ে উঠবে। তবে ইতিমধ্যেই বোঝা যাচ্ছে—রাজনৈতিক দলগুলো কেবল ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতিতেই আবদ্ধ। নতুনভাবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার যে ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি হয়েছিল, তা পুরোনো দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই দেখা হচ্ছে। এর পরিণতিতে আগামী দিনের বাংলাদেশ হয়তো আরও বেশি ডানপন্থী ধারার দিকে ঝুঁকে পড়বে। আর যে সংগ্রামকে সমাপ্ত মনে করা হচ্ছিল, সেটি নতুন রূপে ফিরে আসতেও পারে।

লেখক: অধ্যাপক, বিজিই বিভাগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার বাংলাভিশন নিবে না।)

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2