মহিষের মাংসের সম্ভাবনা, সমস্যা ও করণীয়

মহিষ ফ্যাটেনিং
পৃথিবীতে বর্তমানে ১৯৪.২৯ মিলিয়ন মহিষ রয়েছে। যার মধ্যে ৯২.৫২ শতাংশ (১৭৯.৭৫ মিলিয়ন) রয়েছে এশিয়াতে। এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ৭৪.৮০ শতাংশ মহিষ রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়, ১২.৮০ শতাংশ পূর্ব এশিয়াতে এবং মাত্র ৮.৪০ শতাংশ পাওয়া যায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়।
এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ভারত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মহিষ উৎপাদনকারী দেশ। যেখানে বিশ্বের মোট ৫৮.১১ শতাংশ (১১২.৯১ মিলিয়ন) মহিষ রয়েছে। ভারতের পরই পাকিস্তানের অবস্থান, যেখানে বিশ্বের মোট মহিষের ১৬.৮৩ ভাগ (৩২.৭০মিলিয়ন) রয়েছে। মহিষের সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশে অবস্থা খুবই রুগ্ন। বর্তমানে বাংলাদেশে মহিষ রয়েছে মাত্র ১.৫ মিলিয়ন, যা বিশ্বের মোট মহিষের মাত্র ০.৭৭ ভাগ।
বর্তমান বিশ্বে মোট ৭২টি মহিষের জাত রয়েছে, এর মধ্যে ৫৭টি জাতই এশিয়ায় (মোট জাতের মধ্যে ৭৯.১৬%)। এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ভারতেই রয়েছে ২০টি মহিষের জাত (মোট এশিয়ান জাতের মধ্যে ৩৫.০৮%, এর মধ্যে মুররাহ এবং নিলি-রাভী সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় )। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবস্থা খুবই করুণ, কেননা বাংলাদেশে কোন নিদিষ্ট মাংসল অথবা দুধালো জাতের মহিষ নেই। আমাদের দেশের অধিকাংশ মহিষই নন-ডেসক্রিপটিভ (Non descriptive deshi) দেশি জাতের। কিছু ক্রসজাতের মহিষ (নিলি-রাভী, মুররাহ, জাফরাবাদী ক্রস) দেশের সীমান্তবতী এলাকাতে পাওয়া যায়। এশিয়াতে রিভারিয়ান টাইপ (Reverine type/River Buffalo) এবং সোয়াম্প টাইপ (Swamp Buffalo) উভয় ধরণেরই মহিষ পাওয়া যায়, তবে এশিয়াতে সবচেয়ে বেশি রিভার টাইপ মহিষ পাওয়া যায়।
রিভার মহিষের দুধ উৎপাদন ক্ষমতা সাধারণত সোয়াম টাইপের মহিষ অপেক্ষা বেশি হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে বাংলাদেশেও দুই ধরণের মহিষ পাওয়া যায়। বেশির ভাগ মহিষ রিভা্রিন টাইপের (reverine type) যা নদী মহিষ (River Buffalo) নামে পরিচিতি (প্রায় ৯৫%)। নদী মহিষকে আবার জলা মহিষও (water buffalo) বলা হয়ে থাক। বাংলাদেশে মোট মহিষের মধ্যে ৪০% (৬লক্ষ) উপকূলীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়, এর মধ্যে ভোলা জেলাতে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৬% (প্রায় ৯০,০০০) মহিষ রয়েছে।
মহিষের মাংসের সম্ভাবনা:
এফএও (FAO)-২০২০ তথ্যানুসারে ২০১৯ সালে বিশ্বে মোট মহিষের মাংস উৎপাদন হয়েছে ৪.২ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এর মধ্যে এককভাবে ভারতে উৎপাদন হয়েছে ১.৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন (মোট উৎপাদনের ৩৮.০৯%) এবং পাকিস্তানের উৎপাদন হয়েছে ১.১ মিলিয়ন মেট্রিক টন (২৬.১৯%)। যেখানে বাংলাদেশে উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৬৯৬৬ মেট্রিক টন (মাত্র ০.১৬%)।
ডিএলএস (DLS)-২০২০ তথ্যানুযায়ী কাগজ-কলমে বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭২.৯৭ লাখ মেট্রিক টন মাংসের চাহিদা বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৭৬.৭৪ লাখ মেট্রিক টন। দৈনিক জনপ্রতি ১২০ গ্রাম মাংসের চাহিদার বিপরীতে প্রাপ্তি ১২৬.২০ গ্রাম করলেও গত অর্থবছরে ১১,০০০-১২,০০০ মেট্রিক টন মহিষের মাংস ভারত থেকে আমদানী করা হয়েছে, যা ২০১৬ সালে ছিল মাত্র ২০টন (সূত্র: হালাল মিট ইম্পোটারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ)। বর্তমানে আমদানিকৃত মহিষের মাংসের বাৎসরিক বাজারমূল্য প্রায় ৫০০কোটি টাকা। দেশে বর্তমানে ৪৫টি মাংস আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তি রয়েছে, যাদের মাধ্যমে আমদানীকৃত ফ্রোজেন মহিষের মাংস ঢাকাতে নিয়মিতভাবে অনলাইন মাকেটে বিক্রি হচ্ছে। তবে বেশির ভাগ আমাদনীকৃত মাংস গরুর মাংস হিসাবে ঢাকার বিভিন্ন রেসটুরেন্টে বিক্রি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে ঢাকার অধিকাংশ রেসটুরেন্টে গরুর কালাভুনা নামে জনপ্রিয় খাদ্যটি মুলত মহিষের মাংস দিয়ে তৈরী করে গরুর মাংস হিসাবে চালানো হয়ে থাকে। এই পরিসংখ্যানগুলো মহিষের মাংসের বাজার পরিধি (market volume/size) বিশেষ করে ফ্রোজেন/হিমায়িত মহিষের মাংসের বাজার বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ডিএলএস -২০২০ তথ্যানুযায়ী কাগজ-কলমে বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরে জন প্রতি মানুষের মাংসের চাহিদা ও যোগানের অনুপাত ১২০গ্রাম: ১২৬.২০ গ্রাম দেখানো হলেও জনপ্রতি যে পরিমান মাংস ভোক্তার খাচ্ছে তা তার চাহিদার তুলনায় খুবই কম। ওয়াল্ড ফুড অর্গাইজেশন (FAO) -এর তথ্য অনুযায়ী, মানবদেহের সুস্থতার জন্য প্রতি বছর মাথাপিছু কমপক্ষে ৪৮ কেজি মাংস খেতে হয়, যেখানে দেশের মানুষ গড়ে মাংস খাচ্ছে মাত্র ৪-৪.৫কেজি (মাত্র ৯.৩৭%) অর্থাৎ বিশ্বের মাথাপিছু মাংস ভোগের দিক থেকেও বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। এই পরিসংখ্যানটিও বাজারে মাংসের ঘাটতির (deficiency) ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মহিষের মাংস উৎপাদনকারী দেশ ভারতে ১ কেজি মহিষের মাংসের দাম ১৮০-২২০ ইন্ডিয়ান রুপি, যা বাংলাদেশী টাকায় ২০৫-২৫০ টাকা। যেখানে বাংলাদেশের ঢাকাতে মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০টাকা এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি মহিষ উৎপাদনকারী জেলা ভোলাতে ৪৫০-৫২০ টাকায় । ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রতি কেজি মহিষের মাংসের মূল্য (price gap) ২০০-২৫০ টাকা বেশি (প্রায় ১০০% বেশি) । এই পরিসংখ্যানটি মহিষের মাংস উৎপাদন ব্যবসা লাভজনক (profitable) তার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী গরুর মাংসের গড় দাম কেজি প্রতি ৪.৩৫ ডলার (বাংলাদেশী টাকায় ৩৩২ টাকার মতো), অথচ বাংলাদেশে সেটা ৫০০-৬০০ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় এ দেশে গরুর মাংসের দাম ৫০-৮০ ভাগ বেশি। অপরদিকে মহিষের মাংস কেজি প্রতি ৪৫০-৫২০ টাকা। এখানে গরুর মাংসের তুলনায় মহিষের মাংস কেজি ৫০-৮০টাকা কম। এই যে গরুর মাংসের তুলনায় কেজি প্রতি মহিষের মাংসের কম মূল্য এই সেক্টরটি সম্প্রসারণের জন্য একটি বুমেরাং হতে পারে।
গরুর তুলনায় মহিষের খাদ্যের প্রয়োজন বেশি হয় বলে প্রয়োজনীয় খাদ্যের যোগানের জন্য চারণভূমির দরকার হয়। দেশের সমতলীয় অঞ্চলে অনাবাদী জমির পরিমান হ্রাস পাওয়া মহিষের জন্য চারণ ভূমির সংকট দেখা দেয়া যায়। ফলে ধীরে ধীরে সমতলীয় অঞ্চলে মহিষের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে থাকে। অন্যদিকে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রক্ষপুত্রসহ অন্যান্য নদীর অববাহিকায় গড়ে উঠা চরাঞ্চল, কিছু হাওরঞ্চল এবং উপকূলীয় বিছিন্ন চরাঞ্চলে চারণভূমির আধিক্যসহ মহিষ পালনের অন্যান্য তুলনামূলক সুবিধা থাকায় মহিষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। বর্তমানে এসব অঞ্চলে মহিষ পালন একটি জনপ্রিয় ও আয়বর্ধক ব্যবসা হিসাবে গড়ে উঠেছে, যা এসব অঞ্চলকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের নিকট মহিষ পালনের ব্যবসাগুচ্ছ বা হাব হিসাবে পরিচিত করে তুলেছে।
বাংলাদেশের সব জেলাতে কম বেশি মহিষ লালন-পালন হলেও উপকূলীয় ২০টি জেলায় মোট মহিষের প্রায় ৮০% পালন হয়ে থাকে। এসব জেলায় মহিষের মাংসের উচ্চ চাহিদা ও জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং মূল্যও প্রায় গরুর মাংসের কাছাকাছি (প্রতি কেজি মহিষের মাংস বিক্রি হয়ে থাকে ৪৫০-৫২০টাকা)। এই পরিসংখ্যানগুলো স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত মহিষের মাংস উৎপাদনের সুযোগ ও চাহিদা উভয়ই রয়েছে যে তার ইঙ্গিত বহন করছে।
পুষ্টিগত বা গুণাগুণের দিক দিয়ে মহিষের মাংস গরুর মাংসের চেয়ে কোন অংশে কম নয় বরং অনেক ক্ষেত্রে ভালো। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগসহ (USDA) আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, মহিষের মাংস গরুর তুলনায় কিছুটা শক্ত, কিছুটা কালচে রং এবং স্বাদ প্রায় একই রকম হলেও গুণগত মানের দিক দিয়ে গরুর মাংসের তুলনায় মহিষের মাংস বেশি স্বাস্থ্যসম্মত। কেননা মহিষের মাংসে গরুর মাংসের চেয়ে অনেক কোলেস্টেরল ও চর্বি কম থাকে এবং তুলনামূলক প্রোটিন বেশি থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম মহিষের মাংসে কোলেস্টেরল থাকে মাত্র ৩৫মিলি গ্রাম, যেখানে গরুর মাংসে কোলেস্টেরল থাকে ৮০ মিলি গ্রাম এমনকি মুরগি মাংসেও মহিষের মাংসের চেয়ে বেশি কোলেস্টেরল থাকে (মুরগির মাংসে কোলেস্টেরল থাকে ৮০মিলি গ্রাম)। মহিষের মাংসে চর্বি থাকে মাত্র ২%, যেখানে গরুর মাংসে চর্বি থাকে ১৫-২০%। মহিষের মাংসে প্রোটিন থাকে ২৪% এর মতো যেখানে গরুর মাংসে প্রোটিন থাকে ২২%।
প্রতি ১০০গ্রাম মহিষের মাংসে ১৪০ ক্যালোরি শক্তি থাকে। গরুর মাংসের (২.৭২ মিলিগ্রাম) তুলনায় মহিষের মাংসে অনেক বেশি পরিমাণে আয়রণ (৩.৪২ মিলিগ্রাম) থাকে, যা গর্ভবতী মায়েদের দেহে আয়রণের ঘাটতি মেটাতে ভূমিকা রাখতে পারে। মহিষের মাংসে গরুর মাংসের (২.৫০ মিলিগ্রাম) তুলনায় বেশি ভিটামিন বি-১২ থাকে (মহিষের মাংসে ২.৮৬মিলিগ্রাম), যা শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য্য উপাদান।
এছাড়া, মহিষের মাংসে আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী উচ্চ মাত্রার ওমেগা-৩ পলিআনস্যাচ্যুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, যা রক্তের ট্রাইগ্লিসেরাইডের মাত্রা কমিয়ে আনে, ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
মহিষের মাংসের জনপ্রিয় না হওয়ার কারণ:
মানের দিক দিয়ে গরুর মাংসের তুলনায় অনেকাংশে মহিষের মাংস বেশি স্বাস্থ্যসম্মত এবং স্বাদ প্রায় একই রকম হলেও গরুর মাংসের ন্যয় আমাদের দেশে মহিষের মাংস ভোক্তাদের নিকট ততোটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে যে সকল মহিষ জবাই করা হতো তার অধিকাংশ মহিষই ছিল তাদের কর্মজীবন/উৎপাদনকাল শেষ করা বৃদ্ধ বয়সের মহিষ এবং শারীরিকভাবে হাড্ডিসার। বৃদ্ধ বয়সের হাড্ডিসার মহিষের মাংস সাধারণত শক্ত, গাড় কালো বর্ণের এবং মোটা আঁশযুক্ত হয়ে থাকে। এ ধরণের মাংসের কোমলতা অনেক কম হয় এবং মাংস থেকে এক ধরণের তীব্র গন্ধ আসতে পারে। এছাড়া এ ধরণের মাংসের ভিতরে অনেক সময় প্যারাসাইট দেখা যেতে পারে (ক্রেতার নিকট যা মাংসের পোকা নামে পরিচিত)। আঁশ মোটা ও শক্ত হওয়ার কারণে এ ধরণের মাংস খুব আঠালো হয়ে থাকে এবং চিবানো কঠিন হয়ে পড়ে।
এমনিতেই মহিষের মাংসে চর্বির পরিমাণ কম থাকে (মাত্র ২%) তার উপর যখন বয়স্ক ও হাড্ডিসার মহিষ জবাই করা হয়, তখন এ ধরণের মহিষ থেকে প্রাপ্ত মাংসে মার্বলিং অথাৎ মাংসের সাথে মিশে থাকা চর্বির পরিমাণ কম থাকে। আর এই মার্বলিং/ইন্ট্রামাসকুলার ফ্যাটই মূলত মাংসের সরসতা এবং স্বাদ এর জন্য দায়ী। যে মাংসে যত বেশি ইন্ট্রামাসকুলার ফ্যাট থাকবে সে মাংস ততো বেশি নরম ও সুস্বাদু হবে। গরুর মাংসে এই ইন্ট্রামাসকুলার ফ্যাটের পরিমান বেশি বলেই এ মাংসের সরসতা বেশি, নরম এবং বেশি সুস্বাদু হয়ে থাকে। গরুর ক্ষেত্রে ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি (৩-৪ মাসের মধ্যে উন্নতমানের খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে ২-২.৫ বছর বয়সের হাড্ডিসার গরুকে মোটাতজাকরণ) দ্রুত ও বৃহৎ আকারে সম্প্রসারণের কারণে মোটাতাজাকরণকৃত গরু থেকে উৎপাদিত মাংসে ফ্যাট ডিপোজিশন বেশি হয়ে ইন্ট্রামাসকুলার ফ্যাটের পরিমান বৃদ্ধি পায়, মাসল নরম হয় , মাংসের কমলতা বৃদ্ধি পায় এবং মাংসের ফাইবার চিকন হয়। ফলে এই ধরণের মাংস সহজে চিবানো যায় এবং প্রতিটি কামুড়ে অসাধারণ স্বাদ অনুভব হয়। মুলত বর্ণিত এসব কারণগুলোর জন্যই স্বভাবতই মহিষের মাংসের গুণাগুণ খারাপ ছিল বলেই মহিষের মাংস সম্পর্কে ভোক্তাদের মনে এক ধরণের নেতিবাচক ধারণা তৈরী হয়েছে, যা মহিষের মাংসের গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা উভয় অর্জনের প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করেছে।
মহিষের মাংসের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে করণীয়:
মহিষ ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি/প্রোগ্রাম হতে পারে কালো সোনার মাংসের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির অন্যতম ইন্টারভেনশান। কেননা গরুর মাংসের জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে বিফ ফ্যাটেনিং প্রযুক্তির দেশব্যাপী দ্রুত সম্প্রাসারণের ফলে সুস্বাদু গুণগতমানের মাংস ক্রেতারদের হাতের নাগালে পাওয়া। বিফ ফ্যাটেনিং প্রযুক্তির ন্যয় মহিষসমৃদ্ধ অঞ্চলে বড় আকারে মহিষ ফ্যাটেনিং প্রোগ্রাম (৩-৪ মাসের মধ্যে বিশেষ খাদ্য ব্যবস্থাপনায় ১৮-৩০ মাস বয়সের অপুষ্ট, দুর্বল, শীর্নকায় মহিষকে মোটাতাজাকরণ) সম্প্রসারণের মাধ্যমে সুস্বাদু মাংস সকল প্রকার ক্রেতাদের হাতের নাগালে আনতে হবে। অল্প বয়সের মহিষ ফ্যাটেনিং করলে মাংসে কিছুটা ফ্যাট ডিপোজিশন বেশি হয়ে ইন্ট্রামাসকুলার ফ্যাটের পরিমান বৃদ্ধি করবে, মাসল নরম হবে, মাংসের কমলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ফাইবার চিকন হবে। ফলে মাংসের স্বাদযোগ্য গুণাগুণ বৃদ্ধি পাবে, যা মহিষের মাংস সম্পকে আদিকাল থেকে চলে আসা নেতিবাচক ধারণা পরিবর্তন করে মাংসের গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা উভয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ভুমিকা রাখবে।
ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি শুধু মাংসের গুণাগুণ বৃদ্ধি করে না, প্রাণির বডি কন্ডিশন স্কোরও বৃদ্ধি করে থাকে। এই বডি কন্ডিশন স্কোর প্রাণির ডিপি কেমন হবে তা নির্দেশ করে থাকে। ভালোভাবে ফ্যাটেনিংকৃত প্রাণির বডি কন্ডিশন স্কোর সাধারণভাবে পালিত প্রাণির চেয়ে ভালো হয়ে থাকে। ইদের সময় ফ্যাটেনিংকৃত ভালো বডি কন্ডিশন স্কোরের গরুর ডিপি সাধারণত গড়ে ৫৬-৫৮% হয়ে থাকে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৬০% পর্যন্ত ডিপি পাওয়া যায়। এ উদাহরণ থেকে বলা যায়, মহিষ ফ্যাটেনিং এর মাধ্যমে মাংস গুণাগুণ বৃদ্ধির পাশাপাশি ৬-১০% পর্যন্ত ডিপি বৃদ্ধি করা সম্ভব (৫০-৫৫%), যেখানে সাধারণভাবে বাথানে পালিত মহিষের ডিপি হয়ে থাকে ৪৪-৫০%। ডিপি হচ্ছে একটি প্রাণি জবাই করার পর তার থেকে প্রাপ্ত খাওয়ার অযোগ্য অংশ (চামড়া, মাথা, পায়ের পাতা, রক্ত, নাড়ীভূরি) বাদে খাওয়াযোগ্য মোট অংশ (মাংস ও হাড়)।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণভাবে পালিত মহিষের ডেসিং পারেসেন্টেজ ৪৩-৪৪% হয়ে থাকে, যেখানে ৬৫-৭০% মাংস, ৫-১০% চর্বি এবং ২০-২৪% হাঁড় থাকে কিন্তু যখন এই ধরণের মহিষকে ফ্যাটেনিং করা হয় তখন তার ডেসিং পারসেন্টে বৃদ্ধি পেয়ে ৫১.৪% হয়ে থাকে, যেখানে ৬৬.৮% মাংস, ৯.৭% চর্বি এবং ২৩.৪% হাঁড় হতে পারে। সাধারণত মহিষের কারকাসে মাংস -পেশির অনুপাত গরুর চেয়ে ভালো হয়ে থাকে। গরুর কারকাসের তুলনায় মহিষের কারকাসে মাংস বেশি থাকে এবং হাঁড় ও চর্বি কম থাকে।
অল্প বয়সী কোমল মহিষের মাংস স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সকল শ্রেণির ক্রেতার নিকট সহজলভ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে ফ্রেশ এবং ফ্রোজেন উভয় ধরণের মহিষের মাংস উৎপাদন করে প্রথমত উপকূলীয় অঞ্চলে স্থানীয় চাহিদা পুরণের পাশাপাশি ঢাকার মাকেটে মহিষের মাংসের জন্য ইতোমধ্যে গড়ে উঠা ৪৫টি মহিষের মাংস আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের উন্নয়নকৃত চ্যানেলে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও ক্রেতাদের মাঝে ফ্রোজেন মাংসের গুনাগুন ও স্বাদের পাথক্য নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে এবং এখনও দেশে ফ্রেশ মাংসের ন্যয় ফ্রোজেন মাংসের গ্রহণযোগ্যতা অনেক কম, যদিও শহরের অধিকাংশ ক্রেতা ফ্রেশ মাংস কিনে ডিপ ফ্রিজে রেখে অনেক ধরে সংরক্ষণ করে খেয়ে থাকে। তথাপি ফ্রোজেন মাংস কেনার সময় অধিকাংশ ক্রেতা মনে করে ফ্রেশ মাংসের ন্যয় ফ্রোজেন মাংসের গুণাগুণ ও স্বাদ একই হবে না। এই মিসকনসেপ্ট এর জন্য ফ্রোজেন মিটের বাজার দেশে আশানুরূপ বড় হয়নি। অনেক মিট স্পেশালিষ্টরা বলেন জবাইয়ের পূবে, জবাইয়ের সময় এবং জবাইয়ের পর সঠিক ব্যবস্থাপনার উপর ফ্রোজেন মাংসের গুণাগুণ ও স্বাদ অনেকাংশে নির্ভর করে। জবাইয়ের পূবে, জবাইয়ের সময় এবং জবাইয়ের পর সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফ্রোজেন মাংসের গুণাগুণ ও স্বাদ, ফ্রেশ মাংসের ন্যয় অক্ষুণ রাখা সম্ভব।
মহিষের মাংস মহিষের মাংস হিসাবে ব্র্যান্ডিং করতে হবে গরুর মাংস হিসাবে নয়। এ ক্ষেত্রে মাকেট সেগমেন্ট করে যে সকল ক্রেতা একটু ফ্যাটি, নরম, মোলায়েম, সরস এবং সুস্বাদু মাংস পছন্দ করে তাদের কাছে ফ্যাটেনিং করা মহিষের ফ্রেশ ও ফ্রোজেন মাংস পৌচ্ছে দিতে হবে আর যে সকল ক্রেতা একটু স্বাস্থ্য সচেতন বিশেষ করে ফ্যাটি মাংস পছন্দ করে না (যদিও মহিষের মাংসে ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম মাত্র ২%) তাদের কাছে বাথানে পালিত মহিষের মাংস (গ্রাস ফেড মহিষের মাংস নামে-grass fed buffalo meat) পৌঁছে দিতে হবে। তবে উভয়ই ক্ষেত্রেই মাংসের জন্য পালিত মহিষের মাকেটিং বয়স ৩০ মাসের ঊর্ধ্বে যাওয়া যাবে না (১২-৩০মাসের মধ্যে বয়সের মহিষের মাংস ব্র্যান্ডিং করতে হবে)। মহিষের মাংসের বাজার সম্প্রসারণের জন্য অফ লাইন মাকেট অথাৎ বিদ্যমান বাজার ব্যবস্থাপনা/সিস্টেম এবং অনলাইন মাকেট উভয়ই মাকেটেই মহিষের মাংসের বাজার সম্প্রসারণ করতে হবে।
সরকারিভাবে দেশি মহিষের মাংসের দাম বেশি অজুহাত দেখিয়ে ভারত থেকে মাংস আমদানী বন্ধ করতে হবে। কেননা যে ক্রেতা আমদানীকৃত মহিষের মাংস ৪০০টাকায় কিনতে পারে সে ক্রেতা ৪৫০-৫০০টাকায় দেশি মহিষের মাংস কেনার সক্ষমতা রাখে (৫০০টাকার মধ্যে সুপার কোয়ালিটির মহিষের মাংস সরবরাহ করা সম্ভব)। এতে করে একদিকে দেশি মহিষের মাংসের বাজার সম্প্রসারিত হবে অন্যদিকে বছরে গড়ে ৫০০কোটির মতো মহিষের মাংস আমদানীতে ব্যবহৃত টাকা দেশেই থাকবে (গত বছরে ১২,০০০ টন মহিষের মাংস আমদানী করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা)।
বিভিন্ন প্রকার প্রচার-প্রসার, ক্যাম্পেইন, প্রদশনীর মাধ্যমে মহিষের মাংস দিয়ে তৈরী নানান বৈচিত্র্যময় ভ্যালু এডেড পণ্য যেমন-মিট সসেজ, মিটলফ, মিট বার্গার, মিট প্যাটিস, বাফেলো মিট গ্রিল, কন বাফেলো মিট, কিউর অ্যান্ড স্মোক বাফেলো মিট প্রোডাক্টস ইত্যাদির স্থানীয় ও জাতীয় পযায়ে বাজার সম্প্রসারণ করে এ জাতীয় পণ্যের নতুন ক্রেতা তৈরী করতে হবে।
সরকারি-বেসরকারিভাবে অল্প বয়সী কোমল মহিষের মাংস উৎপাদন এবং মাংস বাজারজাতকরণে ব্যাপক কমকাণ্ড গ্রহণ করে ক্রেতাদের হাতের নাগালে গুণগতমানের মহিষের মাংস নিয়ে আসতে হবে। এছাড়া উভয় উদ্যোগে ব্যাপক প্রচার-প্রসার, ক্যাম্পেইন, মিডিয়া কাভারেজের মাধ্যমে মহিষের মাংসের গুণাগুণ সর্ম্পকে ক্রেতার মনে বহুদিনের জমানো নেতিবাচক ধারণা পরিবর্তন করতে হবে। একই সাথে সাধারণ মানুষের মনে পুষ্টির ধারণাই চেঞ্জ করে দিতে হবে। পুষ্টির অভাব হলে শুধু শারীরিক সমস্যা হয় তা নয়, পুষ্টির অভাবে যে বুদ্ধিমান মানুষের জন্ম হয় না সেটা তাদের কাছে তুলে ধরতে হবে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে মানব ইতিহাস পযালোচনা করলে দেখা যায়, যে জাতি যত স্বাস্থ্যবান অর্থাৎ সঠিক পুষ্টিতে বেড়ে উঠেছে সে জাতি থেকে ততো বেশি জ্ঞানী, গুণি, বিজ্ঞানী, দাশনিক, নোবেল বিজয়ীর জন্ম হয়েছে এবং তারাই যুগে যুগে জ্ঞান ও বিজ্ঞানে পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং পৃথিবী তাদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, যা উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে সুস্পষ্ট বোঝা যায়।
সরকারের জাতীয় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন পলিসি-২০০৭ তে উল্লেখিত উন্নত মুররাহ জাতের মহিষ দিয়ে দেশি মহিষের জাত উন্নয়ন এবং উন্নত প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা অথাৎ সঠিক প্রজনন ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাসস্থান ব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অনুশীলনে খামারীদের শিক্ষিত এবং অভ্যস্তকরণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক কমকাণ্ড গ্রহণ করতে হবে।
পিকেএসএফ-এর অভিজ্ঞতা:
মহিষ উপ-খাতের উন্নয়নে পিকেএসএফ PACE প্রকল্পের আওতায় সহযোগী সংস্থাদের (জিজেইউএস, দ্বীপ, এসডিআই) মাধ্যমে বিগত ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন উপকরণ, সেবা, কারিগরি, প্রযুক্তি এবং বাজার সহায়তা প্রদানকারী সরকারি-বেসরকারি, প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ স্থাপন করে মহিষসমৃদ্ধ উপকূলীয় ৪টি জেলায় (পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম) প্রায় ১৮ হাজার মহিষ সেক্টরের সাথে জড়িত এক্টরদের নিয়ে ভ্যালু চেইন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। উপকূলীয় অঞ্চলে পটুয়াখালীর বাউফল, নোয়াখালীর হাতিয়া, চট্টগ্রামের সন্দীপসহ মহিষঘন ভোলা জেলার প্রায় সবগুলো উপজেলাতে মহিষ প্রধানত বাথানে পালন করা হয়ে থাকে (৮০% এর উপরে)। বছর শেষে একটি নিদিষ্ট সংখ্যক মহিষ বিক্রির উদ্দেশ্যেই মুলত বাথানে মহিষ পালন করা হয়ে থাকে এ অঞ্চলে। এসব মহিষ বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ই হচ্ছে এ অঞ্চলের মহিষ পালনকারীদের আয়ের প্রধান উৎস। দুধ থেকে প্রাপ্ত আয় হচ্ছে সেকেন্ডারী আয়, যা মুলত মহিষের ব্যবস্থাপনা ও মহিষ দেখভালের জন্য রাখা রাখালদের বেতন কাজেই ব্যবহার হয়ে থাকে।
পিকেএসএফ কর্তৃক বাস্তবায়িত ভ্যালু চেইন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গুণগতমানের মহিষের মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যে মহিষ ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মহিষ ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প হতে শতাধিক প্রদর্শণী এবং ফলাফল প্রদশনী করা হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে বিগত ২-৩ বছর ধরে বর্নিত উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে বিশেষ করে ভোলায় শতাধিক খামারী বাথান থেকে মহিষ বাড়িতে এনে মহিষ ফ্যাটেনিং করছে, যা খামারীদের মাঝে ব্যাপক সারা ফেলেছে। প্রকল্প হতে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, বর্তমানে এক ভোলা জেলাতেই প্রায় ২০০ শতাধিক খামারী মহিষ ফ্যাটেনিং করছে। ভোলায় বাথানে পালিত ১.৫-২.৫ বছর বয়সী ষাড় মহিষের ওজন সাধারণত গড়ে ২২০-২৫০কেজি হয়ে থাকে। প্রকল্পের আওতায় খামারীদের মাধ্যমে পরিচালিত মহিষ ফ্যাটেনিং কাযক্রমে দেখা যায়, বাথানে পালিত ২২০-২৩০কেজি ওজনের মহিষগুলো বাড়িতে ফ্যাটেনিং করানোর ফলে এদের গড়ে ওজন ২৮০-২৯০কেজি করে হয়েছে অর্থাৎ ৪ মাসের ব্যবধানে মহিষ প্রতি বাথানের তুলনায় গড়ে ৪০ কেজি করে বেশি ওজন পাওয়া গেছে, অন্যদিকে একই সময়ে বাথানে পালিত সম বয়সের ও সম ওজনের মহিষের ওজন গড়ে ২৫০ কেজি করে হয়েছে। এসব মহিষ স্থানীয়ভাবে জবাই করে মাংস বিক্রিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এইসব মহিষের মাংস ক্রয়কারী ক্রেতারা মাংসের গুণগতমান ও স্বাদ সর্ম্পকে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে। বর্তমানে নিয়মিতভাবে এইসব অঞ্চলে এইসব ফ্যাটেনিংকৃত মহিষ বিক্রি হচ্ছে। মহিষ ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি প্রদশনীর এই বাস্তবাধর্মী ফলাফল এ অঞ্চলে বড় পরিসরে মহিষ ফ্যাটেনিং প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে গুণগতমানের মাংস উৎপাদন করে স্থানীয় চাহিদা পুরণের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ের চাহিদা পুরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
পিকেএসএফ-এর ভবিষৎ পরিকল্পনা:
মহিষ উপ-খাতের উন্নয়নে পিকেএসএফ তার সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে উল্লিখিত ভ্যালু চেইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে এবং আগামীতে আরও ৩-৪বছর বাস্তবায়ন করবে। এ প্রকল্পগুলোর আওতায় আগামীতে মূলত স্থানীয় ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরীর মাধ্যমে নিরাপদ গুনগতমানের সুস্বাদু মহিষের ফ্রেশ ও ফ্রোজেন মাংস উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বিভিন্ন কাজ হতে নেওয়া হবে। এছাড়া মহিষের দুধের তৈরী নিরাপদ বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণেও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
লেখক: উপ-ব্যবস্থাপক, পিকেএসএফ।
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: