• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

আজ পবিত্র ১২ রবিউল আউয়াল

জন্মদিনে নবীজি রোজা রাখতেন, উৎসব করতেন না

নাসির উদ্দিন

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ৯ অক্টোবর ২০২২

আপডেট: ১২:৪৭, ৯ অক্টোবর ২০২২

ফন্ট সাইজ
জন্মদিনে নবীজি রোজা রাখতেন, উৎসব করতেন না

সংগৃহীত ছবি

দশম হিজরীতে রাসুল (সা) এক লাখ লোক নিয়ে মক্কায় হজব্রত পালন করেন। মুসলমানদের উদ্দেশ্যে ঐতিহাসিক  ভাষণ দেন। এবং আল্লাহপাকের এই বাণী তিলাওয়াত করেন- “আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।”
বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পর হিজরী ১১ সালের সফর মাসে মুহাম্মদ (স) জ্বরে আক্রান্ত হন। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি এগারো দিন নামাজের ইমামতি করেন। অসুস্থতা তীব্র হওয়ার পর তিনি সকল স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আয়েশা (রাঃ) এর কামরায় অবস্থান করতে থাকেন। অবশেষে ১১ হিজরীর ১২ রবিউল আউয়াল সন্ধ্যায় তিনি মহান প্রতিপালকের সান্নিধ্যে চলে যান। 

 

মোহাম্মদ (সাঃ) এর মৃত্যুরও অনেক পরে থেকে মিলাদুন্নবীর প্রচলনে ঘটে। মহানবী (সাঃ) এর জীবদ্দশায় ও সাহাবিদের সময়কালেও এই ঈদে মিলাদুন্নবী নামে কোন কিছুই ছিল না। হিজরী ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে মিলাদুন্নবীর প্রচলন শুরু হয় মিশরে। এসবের মূল প্রর্বতক ছিলেন খলিফা আল মুয়িজ্জু লি-দীনিল্লাহ। এটি আনুষ্ঠানিক রূপ পায় হিজরি ৭ম শতাব্দীতে। তাই এটা বলা যায় রাসূল (সাঃ), সাহাবী গনদের সময়ে কোন ঈদে মিলাদুন্নবী বলতে কিছুই ছিল না। 

এই হিজরি ৭ম শতাব্দী ছিল ইসলাম পরবর্তী বর্বর যুগ। এই যুগে মুসলিমগণ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল আর তাদের মাঝে প্রায়ই গৃহযুদ্ধ লেগে থাকত। ঈদে মিলাদুন্নবীর স্বপক্ষে দলিলঃ এখন, যারা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেন ও এটিকে সমর্থন করেন তাদের দেওয়া কিছু যুক্তি হলো। আল্লাহ তায়ালা আল কোরআনে বলেন। “আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত প্রাপ্তিতে খুশি পালন কর, যা তোমাদের সমস্ত ধন দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়।” – (সূরা ইউনুস-৫৮)।
যেহেতু এই দিনে রাসুল সাঃ এর আগমন ও নবুয়ত প্রাপ্তি হয়েছে তাই আমরা চাইলেই এই দিনটাকে ঈদ হিসেবে পালন করতেই পারি। কিন্তু সমস্যা হলো এই একই দিনে আবার রাসূল সাঃ ওফাত বরন করেন। তাহলে যেদিন আমাদের রাসুল সাঃ মৃত্যু বরন করলেন সেইদিনে কিভাবে একজন মুসলিম হিসেবে আপনি আনন্দ উৎসব করতে পারেন? 

তাই এই দিনে আনন্দ মিছিল ও উৎসবের আয়োজন করা একেবারেই যুক্তিহীন। আমরা চাইলে অবশ্যই এইদিনে মহানবী হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর জন্ম ও মৃত্যুদিন হিসেবে ইবাদত বন্দেগি করতেই পারি, চাইলেই রোজাও রাখতে পারি, তাঁর জীবনি নিয়ে আলোচনা করতে পারি। এইসব বিষয় নিয়ে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু আমাদের উচিত না কোন বিষয় নিয়েই বাড়াবাড়ি করা। কেননা রাসূল সাঃ ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন।
মিলাদুন্নবীর অর্থ হলো- নবীজির জীবন সম্পর্কে আলোচনা করা। নবীজির সুন্নতকে মজবুত করে ধারণ। এ মাসে নবীজিকে নিয়ে আলোচনা করা মোস্তাহাব। সাহাবীরা বলেন, কেয়ামত পর্যন্ত যিনি নবীজির সুন্নতকে মজবুতভাবে আকড়ে ধরবেন এবং সে মোতাবেক আমল করবেন আল্লাহ তার জন্য রহমত এবং বরকতের সব দরজা খুলে দিবেন। 

এখন দেখা যায় অতিরঞ্জন। রবিউল আউয়াল মাসে যে যত বড় ডেক পাকাবে সে তত বড় সুন্নী। ইসলাম খানা-পিনার মধ্যে মজে আছে। কেউ মারা গেলে লাশ দাফন করার আগেই চুলায় ডেকসি বসানো হয়। পীর, আউলীয়া, মাজারসহ নানা দরবারের নামে চলে খানা। ইসলাম যদি খানা-পিনার মতো এত সহজ হতো, তাহলে তখন সাহবায়ে কেরাম পেটে পাথর বাঁধতেন না। আবু হুরায়রা (রা)বলেছেন, অনেক সময় না খেয়ে খেয়ে বেহুশ হয়ে পড়েছি। নবীজিকে নিজ চোখে দেখেন, না খেতে খেতে পেটে দুটি পাথর বাঁধতেন।

। মোহাম্মদ (সাঃ) প্রতি সোমবার রোজা রাখতেন । তাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে জবাবে তিনি বলেন, সোমবারে তিনি জন্ম গ্রহন করেছেন, এই দিনেই তিনি নবুয়ত প্রাপ্ত হয়েছেন এবং কোরআন শরীফ এই দিনেই তাঁর উপর নাজিল হয়েছে। আর সেই কারনেই শুকরিয়া স্বরুপ এই দিনে রোজা রাখতেন।এছাড়াও প্রতি সোমবার রোজা রাখার পেছনে আরেকটি কারন উল্লেখ করে রাসুল (সাঃ) বলেন –“ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা) ইরশাদ করেছেন: সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল উপস্থাপন করা হয় আল্লাহর কাছে। আর আঁমার আমল উপস্থাপন করার সময় রোযারত থাকাকে পছন্দ করছি।” এ জন্যে সোমবার রোজা রাখা সুন্নত। আরবের মধ্যে এই রোজার খুব প্রচলন আছে। আমাদের দেশেও অনেকে রোজা রাখেন। উৎসবের চাইতে এটি অনেক বড় ফজিলতের কাজ।  

নবীজি-সাহাবায়ে কেরাম কিভাবে সুন্নত পালন করতেন। কয়দিন পর কেউ হয়তো কেককাটা শুরু করবে। নাউজুবিল্লাহ। অনেকে আবার নবীজির দাঁড়ি, চুল মোবারক ইত্যাদি দেখিয়ে প্রতারণা করেন। নবীজির জিনিস কি এত সস্তা। যেখানে সেখানে পাওয়া যায়। নবীজির প্রত্যেকটি জিনিস তাঁর অভিভাবক আল্লাহপাক হেফাজত করেছেন। 
ইসলাম যদি এত সহজ হতো তাহলে সাহাবায়ে কেরাম খানা-পিনায় ইসলাম কায়েম করতেন। নবীজির সুন্নতের উপর চলা ইসলাম। নবীজির সুন্নতের উপর আমল করা প্রকৃত আশেকে রাসূল। ডেক পাকাইয়া খাওয়া ইসলামে নেই। এসব ইসলামের কলংক। আল্লাহপাকে আমাদের সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুন। আমিন

লেখক : চট্টগ্রাম ব্যুরো চীফ, বাংলাভিশন

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2