• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মানবাধিকার প্রতিবেদন: মার্কিন স্বার্থ নাকি বাংলাদেশের চিত্র

মো. অসীম চৌধুরী

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ২১ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
মানবাধিকার প্রতিবেদন: মার্কিন স্বার্থ নাকি বাংলাদেশের চিত্র

যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে বিবেচিত হয়নি। ওই নির্বাচনে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরানো, বিরোধী দলের প্রার্থীদের এজেন্ট এবং ভোটারদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়মের খবরে পর্যবেক্ষকেরা এ ধারণা পোষণ করেন।

‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে।


মার্কিন এই প্রতিবেদন ঘিরে নিজ নিজ বক্তব্য প্রদান করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। পাশাপাশি নাগরিকদের মতামতে ভিন্ন চিত্র উঠে এসেছে। 

'স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে এটা মার্কিন 'মোড়ল' নীতি। তারা এভাবেই কম শক্তিধর দেশগুলোর সরকারকে চাপে রাখছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধকে সামনে রেখে বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে রাখতে তারা এতোদিন পর মোক্ষম সময়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করলো। বর্তমান মার্কিন স্বার্থ হচ্ছে বাংলাদেশকে চাপ দিয়ে এ অঞ্চল থেকে রাশিয়াকে কোনঠাসা করা। যেহেতু তারা ভারত থেকে প্রত্যাশিত সাড়া পাইনি। 

সেগুনবাগিচা এলাকার সারওয়ার হোসেন (অবসরপ্রাপ্ত) সরকারি কর্মকর্তা তিনি জানালেন, সত্য বা মিথ্যা এ বিষয়ে বলতে চাচ্ছি না, তবে নির্বাচনের চার বছর পর এমন নিউজ সুখকর নয়। আমি এ ধরনের প্রচেষ্ঠাকে শুধুই মার্কিন স্বার্থ মনে করছি। তারা যদি বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তিত হয়েই থাকে, তবে এতো দেরিতে ও সামনে নির্বাচন এমন সময় এ মতামত কেন প্রকাশ করলো? প্রশ্ন রাখেন তিনি। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ জানিয়েছেন, 'যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের অভিযোগকে যুক্তি হিসেবে গ্রহণ করে তার ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করে তাহলে এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে। গত নির্বাচন দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হয়েছে, এটি প্রমাণিত।'

মার্কিন এই প্রতিবেদনের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গত নির্বাচন যে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি, এ নিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে কারও সন্দেহ নেই। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সত্য কথাই উঠে এসেছে। 

তাঁর মতে, আগামী নির্বাচনও ভালো হওয়ার পরিবেশ এখনো দেখা যাচ্ছে না। এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন। সে জন্য গত নির্বাচন নিয়ে এসব কথা এখন জোরালোভাবে সামনে আসছে।

উল্লেখ্য, প্রতিবেদনে বাংলাদেশ বিষয়ক অংশের শিরোনাম, ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস: বাংলাদেশ’। এতে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন, কারাগারের পরিস্থিতি, ধরপাকড়, আটক বা গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া ও কারাবন্দীদের সঙ্গে আচরণ, বিচারব্যবস্থা, মানবাধিকারকর্মী–নাগরিক সমাজ ও সরকার সমালোচকদের প্রতি হুমকি–হয়রানি–নির্যাতন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া গণমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ ও সংগঠন করার অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, ‘শরণার্থীদের’ সুরক্ষা, মৌলিক সেবাপ্রাপ্তির সুবিধা, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের স্বাধীনতা, দুর্নীতি, সরকারি কাজকর্মে স্বচ্ছতার ঘাটতি, বৈষম্য ও সামাজিক নির্যাতন, মানব পাচার, শ্রমিকদের অধিকারসহ নানা বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার  বাংলাভিশন নিবে না।)

মন্তব্য করুন: