দুইয়ে দুইয়ে চার মিলানো

আরাভ খান
একটা ছেলে যার বাবা একজন দিনমুজুর; কোনও রকমে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পেরেছে। সে একটা খুনের সংগে জড়িয়ে গেলো।
তাও সাধারণ কোন খুন নয়, সরাসরি একজন পুলিশ অফিসারকে হত্যা করা লাগলো? অথচ, সেই হত্যাকান্ডে তার নিজের আদৌ কোন লাভ হয়েছিলো কি?
অতপর, সে পালিয়ে চলে গেলো কোলকাতায়। সেখানে গিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট করে চলে গেলো ইওরোপে। ওখান থেকে বছর খানেক আগে দুবাই এ এসে রেসিডেন্ট পারমিট নিয়ে রাতারাতি সেখানে ৫-পাঁচটি আলিশান এপার্টমেন্ট কিনে ফেললো। এরপর, সে বিশাল এক স্বর্ণের শোরূমের মালিক বনে গেলো।
সে অস্ট্রেলিয়া-আমেরিকা ভ্রমণ না করেও বেডরুম বা কোনও এক ট্রেনের কামড়ার ছবি দিয়ে দাবী জানালো যে সে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ করেছে।
এই ছেলে মাত্র ৬ মাস আগেও বাংলাদেশে এসে গোপালগঞ্জ বেড়িয়ে গেলো; ফেইসবুকে সেই ছবিও পোস্ট দিলো।
পুলিশ তখন কিছুই টের পেলো না!
কিন্তু এখন পুলিশ সব কিছু জেনে গেলো!
দারুন না গল্পটা?
কাঁচা গপ্পর মতো হয়ে গেলো না স্ক্রিপ্টটা?
এই ছেলের পেছনে কেউ একজন রয়েছে, যার রয়েছে অবৈধপথে উপার্জিত হাজার হাজার কোটি টাকা। সেই টাকা সে এই ছেলের সহয়তা নিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে।
এবং সেই লোকটি অবশ্যই সে সময়ে ক্ষমতা কেন্দ্রে থাকা কেউ বলেই প্রতীয়মান হয়। কেন?
১) যে পুলিশ অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিলো - সেটা নিয়ে আমরা কোন উচ্চবাচ্য দেখিনি কোনকালেও!
২) কার এতো ক্ষমতা আছে একজন হত্যা মামলার আসামীকে দেশ থেকে নিরাপদে পার করে দেবার?
৩) খুবই শক্ত ব্যাকবন না থাকলে কোলকাতা গিয়ে রাতারাতি ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করে ইওরোপে চলে যাওয়া সম্ভব নয়।
৪) দুবাই-এ এসে রাতারাতি ৫টি এপার্টমেন্টের মালিক বনে যাওয়া - এতো সোজা?
৫) দুবাই এর গোল্ড এর শো-রুম করতে কত টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন হয় সেটা বোঝার মতো বুদ্ধি অনেকেরই রয়েছে।
৬) নিজের কস্টের উপার্জিত টাকা খরচ করে বাংলাদেশ থেকে হিরো আলমদের মতো স্বঘোষিত হিরোদের দুবাই নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়; অন্যের অবৈধ আয়ের টাকা খরচা করতে কারো কস্ট হয় না। নিজের টাকা হলে আরাভ এইসব হিরোদের দুবাই উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারতো না।
৭) এই ছেলেকে প্রটেকশন দেয়া এবং এতো এতো টাকা পাচারের সঙ্গে সাবেক আইজিপির নাম চলে আসে।
এই প্রশ্নটি সামনে আসায় তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন, আরাভ খানের সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয় ওনার নাই।
যা দেখে আমার মনে যে প্রশ্নটি জেগে ছিলো, “ঠাকুর ঘরে কে রে?”
কিন্তু উত্তরটা এমন, “আমি কলা খাই না।”
(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার বাংলাভিশন নিবে না।)
মন্তব্য করুন: