• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক করলেই কঠোর শাস্তি, আসছে নতুন আইন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৫:৪৭, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক করলেই কঠোর শাস্তি, আসছে নতুন আইন

বিয়ে ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। বিয়ে না করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে দেশটির পার্লামেন্টে চলতি মাসে একটি আইন পাস হতে যাচ্ছে। আইনটি পাস হলে দেশটির নাগরিক এবং বিদেশিদের জন্যও তা একইভাবে প্রযোজ্য হবে। নাগরিকরা ব্যভিচারের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালে বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আইনটির খসড়া প্রস্তাব তৈরির সঙ্গে জড়িত একজন রাজনীতিবিদ বামবাং উরিয়ান্তো বলেছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই আইনটি পাস হতে পারে।

যারা বিবাহিত তাদের ক্ষেত্রে অভিযোগ দায়ের করার অধিকারী পক্ষ হল অপরাধীর স্বামী বা স্ত্রী। আর অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে তাদের অভিভাবকরা অভিযোগ করতে পারবেন।

নতুন এই আইনে প্রেসিডেন্ট কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমাননা এবং ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় আদর্শবিরোধী যেকোনো দৃষ্টিভঙ্গিকেও নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: 

 

ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি ইসলামি সংগঠন খসড়া আইনটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তবে বিরোধীরা বলছেন, আইনটি ১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর পতনের পর কার্যকর উদার সংস্কারগুলোর পরিপন্থী।

এই দণ্ডবিধির পূর্ববর্তী খসড়াটি ২০১৯ সালে পাস হওয়ার কথা ছিল। তবে এ নিয়ে তখন ইন্দোনেশিয়াজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল, এ ধরনের আইন নাগরিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে।

সরকার বলছে আইনটির খসড়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, আইনে খুব সামান্যই পরিবর্তন এসেছে। ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভপাত বাদে অন্য গর্ভপাতের ঘটনাকে অপরাধ বিবেচনা এবং ‘কালোজাদু’র জন্য কারাদণ্ডের বিধান বহাল থাকছে।

সবশেষ ২৪ নভেম্বর যে খসড়াটি তৈরি করা হয়েছে তার ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড হবে। অভিযোগ করার এখতিয়ার শুধু ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মতো সীমিতসংখ্যক মানুষের কাছে থাকবে।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে অবমাননার দায়ে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত সাজার বিধান রাখা হয়েছে। শুধু প্রেসিডেন্টই এ অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আন্দ্রিয়াস হারসোনো বলেছেন, এ আইন ইন্দোনেশিয়ার গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবে ইন্দোনেশিয়ার উপ–আইনমন্ত্রী দাবি করেছেন, নতুন আইন গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে না।

দেশটির ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এই আইনের ফলে বিদেশি বিনিয়োগ এবং পর্যটকদের  আগমন কমে যেতে পারে। এর ফলে বিশ্বে ইন্দোনেশিয়ার ভাবমূর্তি খারাপ হবে। অর্থনীতিতে ধস নেমে আসতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ার এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (এপিআইএনডিও) এর ডেপুটি চেয়ারপারসন শিন্তা উইডজাজা সুকামদানি বলেছেন, ‘ব্যবসায়িক ক্ষেত্রের জন্য, এই প্রথাগত আইনের প্রয়োগ আইনি অনিশ্চয়তা তৈরি করবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইন্দোনেশিয়ায় বিনিয়োগের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করবে। এতে তারা আমাদের দেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহও হারাতে পারে।’

এর আগে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করা হয়েছিল। সেখানে জুয়া খেলা, মদ্যপান, সমকামিতা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২০২১ সালে দুজন সমকামী পুরুষকের যৌন সম্পর্কের অপরাধে ৭৭টি করে বেত্রাঘাত করা হয়েছিল।

একই দিনে একজন নারী এবং পুরুষকে একে অপরের কাছাকাছি আসার অপরাধে ২০টি করে বেত্রাঘাত করা হয়েছিল এবং মাতাল হওয়ার জন্য দুজন পুরুষকে ৪০টি করে বেত্রাঘাত করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: 

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: