• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

সর্বহারা শ্রেণির মহান নেতা জোসেফ স্তালিন

মনজুরুল হক

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ৫ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ১৫:১৭, ৫ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
সর্বহারা শ্রেণির মহান নেতা জোসেফ স্তালিন

জোসেফ স্তালিন। যে মহান মানুষটির জন্য হিটলার বিশ্বজয় করে সমগ্র মানব জাতিকে দাস বানাতে পারেনি। যে চার্চিল, রুজভেল্টরা হিটলারকে বাগে আনতে না পেরে বাধ্য হয়ে স্তালিনের শরণাপন্ন হয়, সেই তারাই যুগ যুগ ধরে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে চলেছে স্তালিনের কুৎসা রটানোর জন্য। তাঁকে ‘খুনি’ প্রমাণের জন্য! কমিউনিজমের প্রতি, কমিউনিস্টদের অস্তিত্বের প্রতি এতটাই ঘৃণা তাদের! সেই মহান নেতা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সুপ্রিম কমাণ্ডার, মহামতি লেনিনের অসমাপ্ত সোভিয়েত-এর চূড়ান্ত রূপদানকারী মহান কমিউনিস্ট শিক্ষক কমরেড জোসেফ বিসারিওনিস ডিজারি যুগাশভিলি স্তালিন আজকের এই দিনটিতে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর ৭০তম মৃত্যুদিন। এদিনে টুপি-খোলা সেলুট কমরেড।

 

স্তালিনের নাম উঠলেই পশ্চিমা মিডিয়ার মরফিন আসক্ত ব্রেনে ভেসে ওঠে—স্তালিন ‘গুলাগ’-এ লক্ষ লক্ষ মানুষ ‘মেরেছিলেন’। ব্যাস! তাঁর সকল কৃতিত্ব পাশে ঠেলে তাঁকে ‘ঠান্ডা মাথার খুনি’ সাব্যস্ত করে বসেন এরা। ইতিহাসের ভুল পাঠ নেওয়া এইসব লোকজনের সঙ্গে তর্ক চলে না। তার পরও প্রতি বছর তার জন্মদিন—মৃত্যুদিনে সেই প্রশ্নটাই উঠে আসে। না বলে উপায় থাকে না। 

স্তালিনের মৃত্যু নিয়ে কী ঘটেছিল?
১৯৫৩ সালের ৫ মার্চ মস্কোর কাছে রাষ্ট্রীয় খামার বাড়িতে সোভিয়েত ইউনিয়নের তথা বিশ্ব কমিউনিস্ট পরিবারের নেতা জোসেফ স্তালিন মারা যান। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, ৭৪ বছর বয়সী স্তালিনের মৃত্যুর কারণ ছিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, কিন্তু খুব শিগগিরই তার মৃত্যুর সাথে সোভিয়েত সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের জড়িত থাকার গুজব ছড়িয়ে পড়তে থাকে, পরবর্তীকালে নবনিযুক্ত শাসক কর্তৃপক্ষ খোলাখুলি ঘোষণা করে, যে ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের ইনটেলিজেন্স দফতরের তৎকালীন চীফ লাভ্রেন্তি বেরিয়ার চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন স্তালিন’, আসলে কী ঘটেছিল?

২৮ ফেব্রুয়ারি স্তালিন তাঁর খামার বাড়িতে বেরিয়া ও নিকিতা ক্রুশ্চভ কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর কয়েকজন সদস্যকে জড়ো করেছিলেন। কী নিয়ে সেখানে কথাবার্তা হয়েছিল জানা না গেলেও, এটুকু জানা গেছে যে-কথাবার্তা চলেছিল ভোর ৪টা পর্যন্ত, তারপরে যে যার গন্তব্যে রওনা দেন আর স্তালিন যান শয্যাকক্ষে, ১ মার্চ দুপুরের পর স্তালিনের প্রহরীরা উদ্বিগ্ন হতে শুরু করে। স্তালিন তাঁর রুম থেকে বেরোননি বা কাউকে ডেকেও পাঠাননি। না ডাকলে কারও স্তালিনের কাছে যাওয়ার নিয়ম ছিল না। রাত ১১টার সময় একজন দেহরক্ষী স্তালিনের কাছে গিয়ে তাঁকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে। তখনও তাঁর দেহে প্রাণ ছিল কিন্তু বাকশক্তি লোপ পেয়েছিল, সন্ত্রস্ত প্রহরীরা তাঁকে ডিভানে শুইয়ে বেরিয়াকে ফোন করতে শুরু করল, বেরিয়ার অনুমতি ছাড়া স্তালিনের জন্য ডাক্তারদের কল করা নিষিদ্ধ ছিলো। বেরিয়াকে দীর্ঘক্ষণ ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, যেটা রহস্যময়! অবশেষে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা দফতরের প্রধানকে খুঁজে পাওয়া গেল, তিনি গটগট করে ঢুকলেন সেই ঘরে, যেখানে অচৈতন্য অবস্থায় শায়ীত ছিলেন স্তালিন।

পরে কয়েকজন সাক্ষ্য দিয়েছিল—স্তালিনকে অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে বেরিয়া ডাক্তারকে কল করতে নিষেধ করেছিলেন। আধাপঙ্গু স্তালিন পড়ে ছিলেন কোনো ডাক্তারি সাহায্য ছাড়া! শুধুমাত্র ২ মার্চ বেরিয়া ডাক্তারদের কল করার নির্দেশ দেন। পলিটব্যুরোর সদস্যরা এসে ভাবলেশহীন, কিন্তু জীবিত স্তালিনের দেহের চারপাশে সমবেত হলেন, ডাক্তাররা তাড়াহুড়ো করতে লাগলেন। বেরিয়া মাঝেমধ্যেই এসে চিকিৎসার কথা না বলে ডাক্তারদের উপর হম্বিতম্বি করছিলেন।

সেদিন বেরিয়া এমন আচরণ করছিলেন, স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল ‘মালিকের’ মৃত্যুর পর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ব্যাপারে তার আর তর সইছিল না! ঘনঘন মুমূর্ষু স্তালিনের কাছে এসে দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁর মুখের দিকে চেয়ে থাকছিলেন, যেন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন স্তালিনের শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করার…বারবার বলছিলেন-‘কমরেড স্তালিন, আপনি আমাদের কিছু অন্তত বলুন!’ কিন্ত স্তালিনের আর কিছু বলার মতো অবস্থা ছিল না। স্তালিনের কন্যা স্ভেতলানা আলুলায়েভা তার পিতার জীবনের অন্তিম মুহূর্তগুলোর স্মরণ করেছিলেন—‘মৃত্যুর ঠিক পূর্বক্ষণে স্তালিন হঠাৎ চোখ মেললেন, তাকালেন তাঁকে ঘিরে থাকা মুখগুলোর দিকে, তারপর বাঁ হাতটা তুললেন, উপরের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করলেন, নাকি কোনো সঙ্কেত দিলেন! যাই হোক, তার কয়েক মুহূর্ত পরেই স্তালিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

বেরিয়ার পক্ষে ক্ষমতা দখল করা সম্ভব হয়নি। ১৯৫৩ সালেরই ২৬ জুন তাকে গ্রেফতার করা হয় ও গুলি করে হত্যা করা হয়। কেজিবিতে তার ঘনিষ্ঠ সহকারীদেরও খতম করা হয়। দেশের শাসন ক্ষমতায় স্তালিনের উত্তরসূরি হন নিকিতা ক্রুশ্চভ । তিনিই বিপজ্জনক প্রতিদ্বন্দ্বীকে সমূলে উৎপাটন করার পরে বেরিয়া ও তার ঘনিষ্ঠদের স্তালিনের বিরুদ্ধে চক্রান্তের জন্য দোষারোপ করেছিলেন, এবং ক্ষমতা দখলের পর পরই সোভিয়েত ইউনিয়নের কবর খুঁড়তে শুরু করেছিলেন। ‘ডিকটেটরশিপ অব প্রলেতারিয়েত’ বাতিল করে ‘স্টেট ফর এভরিবডি’ ঘোষণা করে সমাজতন্ত্রের কফিনে পেরেক ঠুকেছিলেন।

আজকে CIA কে স্বীকার করতে হয়েছে যে 'স্তালিনবিরোধী প্রচার ছিল অপপ্রচার এবং মিথ্যা।' ইতালীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ঐতিহাসিক মাইকেল প্যারেন্টি সোভিয়েত আর্কাইভ এবং সি আই এ–র তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে সোভিয়েত লেবার ক্যাম্প (শ্রম শিবির) কোনওভাবেই নাৎসিদের মতো ডেথ ক্যাম্প ছিল না। কোনও গণনিধন ব্যবস্থা, গ্যাস চেম্বার ইত্যাদি যা নাৎসিরা গোটা ইউরোপে তৈরি করেছিল, এখানে সেরকম কোনও ব্যাপারই ছিল না। গুলাগের অধিকাংশ বাসিন্দাই তাদের মেয়াদ শেষের পর সশরীরে ছাড়া পেয়েছে, অথবা ক্ষমা প্রদর্শনের কারণে মেয়াদের আগেই মুক্তি পেয়েছে। সিআইএ–র রিপোর্টে আছে প্রতি বছরে এই ক্যাম্পগুলি থেকে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ কয়েদি মুক্তি পেত। বিস্ময়কর হল তাদেরই জানা সত্যের ঠিক বিপরীত কথা তারা তাদের বিশ্বময় নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন প্রচার করে গেছে এবং সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে একটা 'দানবীয় সমাজ' হিসাবে প্রচার চালিয়ে গেছে।

সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিতদের গুলাগের মৃত্যুর যে সংখ্যা দেখিয়ে তাকে ‘অনাহারে মৃত্যু’ বা ‘হত্যা’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে তা যে ইচ্ছাকৃত তথ্যবিকৃতি তা মাইকেল প্যারেন্টি দেখিয়েছেন। ১৯৩৪–১৯৫৩ পর্যন্ত এই কুড়ি বছরে যত মৃত্যু গুলাগে হয়েছিল তার অর্ধেকেরও বেশি হয়েছিল ১৯৪১–১৯৪৫ – এই চার বছরে। ১৯৪৪ সালে গুলাগ ক্যাম্পে মৃত্যুর হার ছিল প্রতি হাজারে ৯২ জন। বাস্তব সত্য হচ্ছে, এই সময়কালে রাশিয়ার সাধারণ মানুষের মৃত্যুর হার ছিল এরও অনেক বেশি। এই সময় গোটা দেশে ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল যুদ্ধে কিংবা অনাহারে। এই সময় গুরুতর অপরাধে অপরাধীদের বাদ দিয়ে ইচ্ছুক কয়েদিদের অধিকাংশকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল যুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য।

রুশ সরকার যে জেলখানার পরিবেশ উন্নত করেছিল তার প্রমাণ আছে এই দুই নথিতেই। যুদ্ধের সময় গুলাগের মৃত্যুর হার যেখানে ছিল প্রতি হাজারে ৯২ জন, ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেই তা নেমে আসে মাত্র ৩–এ। এরকম অসংখ্য তথ্য সিআইএ তথা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মিথ্যাচারী কুৎসিত প্রতিষ্ঠানটিকে এনে দিয়েছে দিনের আলোয়৷

এই ছোট্ট হিসাবটা দেখা যেতে পারে: 
জানুয়ারি ১৯৪১ সালে সোভিয়েতের লোক সংখ্যা- ১৯,৬৭,১৬,০০০। 
জানুয়ারি ১৯৪৬ সালে সোভিয়েতের লোক সংখ্যা- ১৭,০৫,৪৮,০০০।
তার মানে বিশ্বযুদ্ধে নিহত হয়েছিল ২ কোটি ৬১ লাখ ৬৮ হাজার সোভিয়েত নাগরিক!
এবার ১৯৪৬ সালে যেখানে লোক সংখ্যা- ১৭,০৫,৪৮,০০০। সেখানে ১৯৫১ সালে (যে সময়ে স্তালিনের বিরুদ্ধে কোটি কোটি মানুষ হত্যার অভিযোগ) লোক সংখ্যা- ১৮,২৩,২১,০০০। অর্থাৎ এই ৫ বছরে লোক সংখ্যা বেড়েছে- ১,১৭,৭৩,০০০। তাহলে কোটি কোটি কোথা থেকে আসল?

সম্মিলিত এই মিথ্যা প্রচারের চিত্রনাট্য প্রস্তুত হয়েছিল গত শতাব্দীর পাঁচের দশকের গোঁড়ার দিকে। ফ্যাসিস্ট হিটলারের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটেছে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার হাতে। সারা ইউরোপে লক্ষ–কোটি মানুষের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার, গণহত্যার, তথা আউসভিৎস, ব্রাভেন বুর্ক, মাথাউসেনের মত অসংখ্য কুখ্যাত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যার কথা তখন বিশ্বের মানুষ জেনেছে। চরম ক্ষয়ক্ষতি, অসংখ্য জীবনহানিসহ ধ্বংসস্তূপ থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন তার সমাজতান্ত্রিক শক্তিতে গড়ে তুলছে সমস্ত দিক থেকে উন্নত সমৃদ্ধ এক নতুন দেশ। 

পূর্ব ইউরোপে, চীনে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। পৃথিবীর প্রতিটি পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী দেশে সমাজতন্ত্রের দাবি জোরালো হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার দোসররা যেকোনও উপায়ে সমাজতন্ত্রের প্রতি মানুষের তীব্র আকর্ষণের প্রবণতাকে ঠেকাতে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেতরের কমিউনিস্ট পার্টি ও সোভিয়েত রাষ্ট্রের নানা স্তরে দালাল জুটিয়ে নেয়। মহান স্ট্যালিনের আকস্মিক মৃত্যু এদের সুযোগ করে দেয় সমস্ত কিছুকে ওলট পালট করে দেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে। সেই থেকেই চলে আসছে মিথ্যার গোয়েবলসীয় প্রচার। হিটলার থেকে কনকোয়েস্ট হয়ে আমাদের দেশের নাট্য পরিচালক থেকে পক্ককেশের স্বঘোষিত কমিউনিস্ট হয়ে রাম-শ্যাম-যদু-মধু-এলি-গেলি-গাঙ্গু তেলি, বৈঠকী মার্কসিস্ট জমিদার নন্দন কিংবা আওলাদে প্রগতিশীলরা স্তালিনের নামে কুৎসা না গাইলে ভাতের লোকমা গলায় আটকে যায়!  

কেন হে বাপু, এখন তো সোভিয়েত আমলের সমস্ত গোপন নথিপত্রই ঘেঁটে খুব সহজেই বের করা সম্ভব, ঠিক কতজন সেদিন সোভিয়েত ইউনিয়নে বন্দী ছিলেন, কে কত বছর সেখানে বন্দিশালায় কাটিয়েছেন, কতজন বন্দী অবস্থায় মারা গেছেন, বা ঠিক কতজনকে সেদিন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল? কেন সেসব ডাটা বের করতে পারলেন না? আপনাদের মহাগুরু হিটলার থেকে হার্স্ট, কনকোয়েস্ট থেকে সোলঝেনিৎসিন, কেউই পারেননি।

তারপরও সভ্যতা ও মানবতাবিরোধীদের কীর্তিকলাপের নথিপত্র প্রকাশিত হওয়ার পর সিআইএ স্বীকার করেছে-তারা যা করেছে সব রাষ্ট্রীয় বিপুল অংকের বাজেট নিয়ে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা।

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এই স্তালিনবিরোধীতা এতটাই ঘৃণ্য এবং বালসুলভ যে তাদেরকে কমিউনিস্ট দূরের কথা প্রগতিশীল বলতেও ঘেন্না হয়। বিশেষ করে তধাকথিত মুক্তমনারা স্তালিনের নামে কুৎসা করেই বিশ্বমুক্তি ঘটানোর ‘বিপ্লব’ করতে নেমে পড়েন। এক্ষেত্রে তারা ডানপন্থী, ধর্মীয় মৌলবাদী, মডারেটদের মত বুর্জোয়াদের চেয়েও এক কাঠি সরেস। স্তালিনের নামে এক লোকমা ভাত বেশী মাখেন। 

এদের আব্দার অনেকটা এরকম—
* স্তালিন কেন গৌতম বুদ্ধ হলেন না? তাকে বুদ্ধ হতে হতো।
* অন্যেরা চেঙ্গিস খান হতে পারবে কিন্তু স্তালিন পারবে না।
* হিটলার, মুসোলিনি, রুজভেল্ট, চার্চিল যুদ্ধের সেনাপতি হতে পারবে, নিষ্ঠুর হতে পারবে, যুদ্ধ জয়ের পর জার্মান সৈন্যদের হত্যা করতে পারবে, জার্মানিকে দুই ভাগ করে ফেলতে পরবে... শুধু স্তালিনই এসব করতে পারবে না। 

* জারের বশংবদ, পুজিঁবাদের দালাল, ফরাসী, ইতালীয়, ব্রিটিশ ষড়যন্ত্রকারী হাজার হাজার কসাকরা সোভিয়েত ধ্বংস করে দিতে পারবে। জারের পুনরুত্থান ঘটাতে পারবে। কমিউনিস্টবিরোধী মেনশেভিকদের হাতে হাত মিলিয়ে ইউক্রেনে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়ে স্তালিনের নামে চালিয়ে দিতে পারবে... শুধু স্তালিন তাদের হাত থেকে সোভিয়েতকে মুক্ত করার জন্য কঠোর হতে পারবে না!

সর্বশেষ তথ্য হলো খোদ প্রাক্তন সোভিয়েত বা বর্তমান রাশিয়ায় এখন এত বছর পর কথিত 'নিষ্ঠুরতার' পরও স্তালিন জনপ্রিয়তার দিক থেকে লেনিনেরও উপরে!\

ছোট করে শেষ করি এটুকু বলে—তাঁকে যারা ‘স্বজনপ্রীতির’ দায় দেন তাদের জানা দরকার—বিশ্ব যুদ্ধে তাঁর প্রিয় পুত্রকে বন্দী করে জার্মানরা। বন্দী বিনিময় করতে চায় তাদের ফিল্ড মার্শাল ফ্রেডরিখ পউলাসের সাথে। তিনি রাজি হননি! এই একটি ঘটনাই প্রমাণ করে দেয় স্তালিনের কাছে দেশ আর নিজের সন্তানের মধ্যে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ? লাল ফৌজের সর্বাধিনায়ক স্তালিন বললেন: I will not trade a Marshal for a Lieutenant! তারা অবশ্য কল্পনাও করতে পারেননি যে দেশের জন্য স্তালিন উৎসর্গ করে দেবেন নিজের ছেলেকেই!

(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার বাংলাভিশন নিবে না।)

মন্তব্য করুন: