জুলাই আন্দোলনে দৃষ্টি হারানো মুবিনকে দেখতে শরীয়তপুরে ডা. রফিকুল ইসলাম

১৮ জুলাই সরকার বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে দৃষ্টি হারানো মুবিনের পাশে দাড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার (৯ জুন) তার নির্দেশে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম শরীয়তপুরে মুবিনের গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে তিনি তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা এবং আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেন।
পেশায় একজন কম্পিউটার অপারেটর মুবিন। জুলাই আন্দোলনে দুই চোখের দৃষ্টি মারাত্মকভাবে হারাতে বসা কিশোর মুবিন। ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার মিছিলে যোগ দিতে গিয়ে পুলিশের ছোড়া গুলি তার বাম চোখের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান চোখের পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়া মুবিনকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে কুয়েত মৈত্রি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে এবং পরে বেসরকারি ভিশন আই হাসপাতালে তার একাধিক অপারেশন সম্পন্ন হয়।
পিতৃহারা মুবিন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ভিশন আই হাসপাতালে তার চিকিৎসায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান না থাকায় বর্তমানে তিনি স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ার বিষয়টি মুবিন ও তার মা মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেন।
বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে আসলে সোমবার তার নির্দেশে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম ছুটে যান মুবিনের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার শিধলকুড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে তিনি তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা এবং আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেন এবং উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে মুবিনকে আশ্বস্ত করেন।
সেখানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা নিয়ে সরকারের উদাসীনতা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রায়শই দেখা যায়, আহতরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আন্দোলন করছে। সরকারের উচিত এই বিষয়ে আরও মানবিক ও যত্নবান হওয়া।
তিনি আরও বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে জুলাই আন্দোলন হয়েছিল, যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে গত ১৬ বছর ধরে বিএনপির হাজারো নেতা-কর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন— সেই স্বপ্নকে ভঙ্গ করার হীন চক্রান্ত এখন দৃশ্যমান। শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করার প্রক্রিয়া চলছে। গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। অথচ এখন সেই নির্বাচন নিয়েও গড়িমসি করা হচ্ছে। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে ডিসেম্বরে নির্বাচন না দিয়ে এপ্রিল মাসে নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত দুরভিসন্ধিমূলক। এপ্রিল মাস বর্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়, তখন এসএসসি পরীক্ষা থাকে— এসব বিবেচনায় বাংলাদেশে নির্বাচন সাধারণত শীতকালে হয়। সুতরাং, এই ধরনের একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সরকার যদি ডিসেম্বরে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে, তা হবে শুভবুদ্ধির পরিচায়ক।
এসময় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: