“স্বৈরাচারীর উত্থান ঠেকাতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়ন অপরিহার্য”

“জুলাই ঘোষণাপত্র ও সাতক্ষীরার নাগরিকদের ভাবনা” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)-এর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
দেশে স্থায়ী গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন না হলে দেশে পুনরায় স্বৈরাচারের উত্থান ঘটতে পারে, যা হবে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা। দেশে আর যাতে কোন স্বৈরাচারীর যেন জন্ম না হয়, তা নিশ্চিত করতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়ন অপরিহার্য। এই ঘোষণাপত্রই দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও কাঙ্খিত সিস্টেম পরিবর্তনের মূল ভিত্তি।
বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের আমলে সাতক্ষীরায় সবচেয়ে বেশি হত্যা, গুম ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে নির্যাতন করে ক্ষমতা ধরে রাখার সেই লোভ লালসাকে রুখে দিয়েছে জুলাই আন্দোলন। অবিলম্বে শেখ হাসিনাসহ ওই সরকারের আমলের সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবী জানিয়ে বক্তারা আরো বলেন, শহীদদের পরিবারগুলো বিচার দেখেই শান্তি পাবে। বিচার বিলম্বিত হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জুলাই আন্দোলনের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, এই আন্দোলন কোনো নির্দিষ্ট দল বা গোষ্ঠীর ছিল না, এটি ছিল ভ্যানচালক থেকে শুরু করে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মুক্তির আন্দোলন। জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেই সাধারণ মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন চাই না, আমরা চাই সিস্টেমের পরিবর্তন। সেমিনারে বক্তারা নাগরিক অধিকার, রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বক্তারা সবাই সাতক্ষীরার ভবিষ্যৎ উন্নয়ন, সুশাসন ও সমাজে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আপ বাংলাদেশ'র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসমা উল হুসনা'র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি ওমর ফারুক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হাসানুর রহমান হাসান, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) জেলা আহ্বায়ক আবদুল কাদের, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মনজুরুল আলম বাপ্পি, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ ইমরান হোসেন, বৈষম্যবিরোধী কওমী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মাকছুদুর রহমান জুনায়েদ, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম, স্কুল অব এক্সিলেন্স চেয়ারম্যান সাইফুর রহমান সাইফ, শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ আনাস বিল্লাহর বড় ভাই আরিফুজ্জামান এবং আহতদের পক্ষে জিল্লুর রহমান। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, আপ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ রানা।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: