বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ায় বিপাকে জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে দলটি। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ সংক্রান্ত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। চট্টগ্রামের জিইসি কনভেনশন হলে নির্বাচনি দায়িত্বশীল সম্মেলনে দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, আপনার (শাহজাহান চৌধুরী) এই বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে এবং বক্তব্যটি রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পেশাদারত্ব, নিরপেক্ষতা ও মূল স্পিরিট স্পষ্টভাবে ব্যাহত করেছে। জামায়াত মনে করে, প্রশাসন পূর্ণ পেশাদারত্বের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবে, এখানে দলের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে বিভিন্ন সময়ে শাহজাহান এমন সাংগঠনিক ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণকারী ও শৃঙ্খলাবিরোধী বক্তব্য রেখেছেন। ফলে তাকে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি জামায়াত আমিরও তাকে ডেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং সতর্ক করেছেন। এতদসত্ত্বেও তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এ বক্তব্য প্রকাশের পর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। দেশের কূটনৈতিক মহল থেকেও সরাসরি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে দেশ-বিদেশে দলের জনশক্তি এবং সাধারণ জনগণের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এই বক্তব্যের কারণে সংগঠনের ভাবমর্যাদা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি দলীয় গঠনতন্ত্র, নীতি, আদর্শ, শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের পরিপন্থি।
এ কারণে জামায়াত আমিরের নির্দেশে তাকে এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে যে—কেন তার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? তার লিখিত জবাব আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রদান করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘বস্তা বস্তা টাকা পার্শ্ববর্তী দেশ হিন্দুস্তান থেকে আমাদের দেশে ঢুকবে, আর অস্ত্র ঢুকবে। আমাদের আমিরে জামায়াত যদি থাকতেন, আমি বলতাম- নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়, প্রশাসনকে অবশ্যই, আমি ন্যাশনালি বলবো না, যার যার নির্বাচনি এলাকায়, প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেফতার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।’ তার এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে নানান আলোচনা-সমালোচনার শুরু হয়। স্থানীয় বিএনপি তার গ্রেফতার চেয়েছে। এমনকি পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পর্যন্ত এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিভি/পিএইচ




মন্তব্য করুন: