এনসিপিতে আবারও ভাঙন, আসিফ-মাহফুজের বিচার চেয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূল এনসিপি
আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনপিসিতে। এবার তৃণমূল এনসিপি নামে রাজপথে সরব হয়েছে দলটির পদত্যাগকারীরা। সদ্য পদত্যাগী দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের দুর্নীতির তদন্ত ও বিচারের দাবিতে কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে আলোচনায় এসেছে তৃণমূল এনসিপি।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বাংলামোটরের রূপায়ন টাওয়ারের সামনে তৃণমূল এনসিপির ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টি থেকে (এনসিপি) স্থায়ীভাবে অব্যাহতি পাওয়া কেন্দ্রীয় সংগঠক মুনতাসির মাহমুদ। সেই থেকে নানান মহলে আলোচনায় আসে এনসিপির ভাঙনের বিষয়টি।
রাত ৯টার দিকে আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের দুর্নীতির তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বাংলামোটরে বিক্ষোভও করেছে তৃণমূল এনসিপি। মুনতাসিরের নেতৃত্বে এই মিছিলে এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে দেখা গেছে। এ সময় তারা আসিফ ও মাহফুজকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে তাদের বিচার দাবি করেন।
মিছিল শেষে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মোড়ে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মুনতাসির মাহমুদ বলেন, দুজন ছাত্র উপদেষ্টা জুলাইয়ের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সরকারে গেলেও তারা জুলাইয়ের প্রতিশ্রুতি রাখেনি। তারা সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে জুলাইয়ের সঙ্গে গাদ্দারি করেছে। সুতারাং আমাদের সুনির্দিষ্ট দাবি তারা উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে যত নিয়োগ হয়েছে, যে সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যেসব টেন্ডার দিয়েছে সেগুলোতে কারা কাজ পেয়েছে সেটা কিসের বিনিময়ে পেয়েছে তা জনসম্মখে প্রকাশ করতে হবে। তারা পদত্যাগ করে বলছে তাদের একাউন্টে টাকা নেই। কিন্তু জেন জি প্রজন্ম জানে দুর্নীতির টাকা কেউ একাউন্টে রাখে না। এই টাকা তারা কোথায় পাচার করেছে না বিটকয়েনে রেখেছ সেটা দুদককে তদন্ত করে বের করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তারা সরকারে বসে রাষ্ট্রে সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। ওসি-ডিসি তারাই বসিয়েছে। তারা যে সরকারের ক্ষমতায় ছিল এখন সেই সরকারের অধীনেই নির্বাচনের মাধ্যমে তারা আবার ক্ষমতায় বসবে, সেটা হতে পারে না। এটা অনৈতিক এবং এটা আমরা কোনোভাবেই মানি না। জুলাই অভ্যুত্থানের আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রতিশ্রুতি ছিল, যারা এই সরকারে থাকবে তারা কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তাদের এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। এটা ড. ইউনূসকে নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে তারা যাতে কোনোভাবে দেশ থেকে পালাতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
তৃণমূল এনসিপির বিষয়ে মুনতাসির বলেন, আমরা যারা এনসিপির গঠনে কাজ করেছিলাম, আমাদের লক্ষ্য ছিল জুলাই চেতনার আলোকে আমরা বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করবো। কিন্তু দুঃখজনক হলো-এনসিপি এখন হয়ে গেছে ইসলামবিরোধী, সমকামীদের। এখানে তাদেরই পাওয়ারফুল জায়গায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। যারা জুলাইকে ধারণ করে তাদের সব জায়গা থেকে মাইনাস করা হয়েছে। তিনজন ছাত্র উপদেষ্টা ৬টা কোরাম করে এসব করেছে। তাই আমরা তৃনমূল এনসিপি নামে নতুন একটি সংগঠন গড়ার চেষ্টা করছি।
এর আগে গেল ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি নামে আত্মপ্রকাশের সময় দলে অর্থনৈতিক অচ্ছতার অভিযোগ এনে বেরিয়ে যান এনসিপি গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা আলী আহসান জুনায়েদ ও রাফে সালমান রিফাতসহ তাদের অনুসারীদের একাংশ। পরে তারা ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেন।
বিভি/কেএস/টিটি




মন্তব্য করুন: