হাদির চিকিৎসায় ১৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড ও ১১টি সিদ্ধান্ত জানালো এভারকেয়ার
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ১৫ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানান এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউ অ্যান্ড এইচডিইউ বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. জাফর ইকবাল।
সেখানে হাদির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন- প্রাইমারী কনসালটেন্ট ডা: আলিউজ্জামান ও আইসিইউ কনসালটেন্ট ডা. জাফর ইকবাল।
এছাড়া মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিক্যাল বোর্ড মেম্বারস হিসেবে রয়েছেন- ডা: সেলিম মোহাম্মদ জাহাংগীর-সিনিয়র কনসালটেন্ট, নিউরো এনাস্থেসিয়া ও আইসিইউ। ডা: জিল্লুর রহমান -সিনিয়র কনসালটেন্ট, নিউওরোসার্জারী, ডা, এ কিউ এম রেজা- সিনিয়র কনসালটেন্ট, কার্ডিওলজি, ডা: মাসুম কামাল খান- সিনিয়র কনসালটেন্ট, নেফ্রোলজি, ডা: জিয়াউল হক-সিনিয়র কনসালটেন্ট- রেসপিরেটোরী মেডিসিন, ডা: খন্দকার মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র কনসালটেন্ট- নিউরোমেডিসিন, ডা: এস এম হাসান শাহরিয়ার, সিনিয়র কনসালটেন্ট - নিউরোমেডিসিন। ডা: জুলফিকার হায়দার- সিনিয়র কনসালটেন্ট, কার্ডিওথোরাসিক সার্জন। ডা: শাহিনুর রহমান- সিনিয়র কনসালটেন্ট, বক্ষব্যাধী সার্জন। ডা: আতিয়ার রহমান - সিনিয়র কনসালটেন্ট- অর্থোপেডিক্স। ডা: একরাম উদ দ্দৌলা- সিনিয়র কনসালটেন্ট- নাক কান ও গলা, ডা: কাজী স্মিতা হক- কনসালটেন্ট, হেমাটোলজি এবং সার্বিক তত্বাবধান- ডা: আরিফ মাহমুদ, ডি এম এস- এভারকেয়ার।
ওসমান হাদিকে গতকাল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে অপারেশনের পরে এভারকেয়ার হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট স্থানান্তর করা হয় অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসার জন্য।
অবজারভেশন ও সিদ্ধান্ত সমুহ-
১. ব্রেনে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেহেতু অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে সেহেতু এখন কনজার্ভেটিভ ভাবেই ম্যানেজ করতে হবে। ব্রেন প্রটেকশন প্রটোকল ফলো করে অন্যান্য সমস্থ সাপোর্ট চালিয়ে যেতে হবে। যদি একটু স্টাবল হয় তাহলে ব্রেনের রিপিট সিটি স্ক্যান করানো যেতে পারে।
২. ফুসফুসে ইনজুরি আছে ও চেস্ট ড্রেইন টিউবে যেহেতু অল্প ব্লাড আসছে সেহেতু সেটা কন্টিনিউ করতে হবে। "ফুসফুসে সংক্রমণ" ও "এ আর ডি এস" যাতে ডেভলপ না করে সেদিকে খেয়াল রেখে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট চালায়া যেতে হবে।
৩. কিডনির কার্যক্ষমতা ফেরত এসেছে, সেটাকে ধরে রাখার জন্য ফ্লুইড ব্যালেন্স যেভাবে ঠিক রাখা হচ্ছে সেভাবেই কন্টিনিউ করতে হবে।
৪. শরীরে রক্ত জমাট বাধা ও রক্ত ক্ষরন হওয়ার মদ্ধ্যে যে অসামঞ্জস্যতা দেখা দিয়েছিলো (ডি আই সি) সেটা অনেকটাই ঠিক হয়ে আসছে। এটাকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করে রক্ত ও রক্তের বিভিন্ন উপাদান ট্রানফিউস করতে হবে।
৫. ব্রেন স্টেমে ইঞ্জুরির কারনে ব্লাড প্রেশার ও হার্ট বিট উঠানামা করছে। ব্লাড প্রেশারের জন্য সাপোর্ট যেভাবে দেয়া আছে সেটা সেভাবেই চলবে। যদি হার্ট রেট কমে যায় তাহলে টেম্পোরারি পেস মেকার লাগানোর জন্য টিম সার্বক্ষণিক রেডি আছে, সেটা লাগানো হবে।
৬. ঢাকা মেডিকেল কলেজ এর ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে, রেডিওলজি, আইসিইউ, এনাসথেসিয়া, ইউরো সার্জারীসহ ও অন্যান্য ডিসিপ্লিনের চিকিৎসকগণ ও সাপোর্টিভ স্টাফগণ যে হিরোইক কাজ করেছেন তার জন্য এই মেডিকেল বোর্ড সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।
৭. বর্তমানে তার সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত আশংকাজনক।
৮. মেডিক্যাল বোর্ড এই সামারিটা রোগীর ভাই ও তার আপনজনকে ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন। তারা চাইলে মিডিয়ার মাধ্যমে তার আপডেট দেশবাসীকে জানাতে পারেন। মেডিকেল টিমের পক্ষ থেকে আমাদের সকলের প্রিয় শরীফ ওসমান হাদির জন্য বিনীতভাবে দোয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
৯. অযথা কেউ হাসপাতালে এসে ভীড় করবেন না। কোন ভিজিটর এখানে এলাউড না।
১০. আমরা আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি কোন অনুমান বা ভুল তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখুন। রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সকলে সহযোগিতা করুন।
১১. আমাদের মেডিকেল টিম সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার সঙ্গে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য মেডিকেল বোর্ড ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে দোয়া করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: