• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

হাদির হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে : ইশরাক হোসেন

প্রকাশিত: ১৯:৪২, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
হাদির হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে : ইশরাক হোসেন

ঢাকা-৬ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, হাদিকে যারা গুলি করেছে, সেই শুটাররা যদি দেশের বাইরে পালিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে কূটনৈতিকসহ সব ধরনের চ্যানেল ব্যবহার করে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর সুরিটোলায় রমনা রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয় সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সুবর্ণ জয়ন্তী ও ছাত্রছাত্রীদের মিলন মেলা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাস দিয়ে কখনো রাজনীতি টিকিয়ে রাখা যায় না। রাজনৈতিক অপ্রাসঙ্গিকতায় পড়েই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, যা তাদের রাজনীতির চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি ডেকে আনছে।

ইশরাক হোসেন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম মুখ, বিগত জুলাই অভ্যুত্থানের একজন অগ্রণী সৈনিক কয়েকদিন আগে ঢাকার একটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। নামাজ শেষে রিকশাযোগে বাসায় ফেরার পথে তাকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনা দেখার পর যেকোনো নাগরিকই ভাবতে পারেন আমি তো অনেক সময় একা নামাজ পড়ে বাসায় ফিরেছি, একা হেঁটে চলেছি। তাহলে কি এই পথগুলো এখন আমাদের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে?

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল, এই কথা আমরা গত ১৭ বছর ধরে বলে আসছি। তাদের অতীত কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে কোনোভাবেই তাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। তারা গণহত্যা চালিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। তাদের পলাতক, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নেত্রী দেশের বাইরে বসে জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রদের হত্যার নির্দেশনা দিচ্ছেন; এমন অডিও বার্তা আমরা পেয়েছি।

হাদির ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইশরাক হোসেন বলেন, এই ঘটনার বিষয়ে বর্তমান সরকার কিংবা ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, তাদের আন্তরিক প্রশাসনিক পদক্ষেপ আমরা দেখতে চাই। যদি শুটাররা দেশের বাইরে পালিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে কূটনৈতিক ও অন্যান্য চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আর যদি তারা দেশেই থাকে এবং এখনও গ্রেফতার না হয়, তাহলে স্পষ্টভাবে বলতে হবে, আওয়ামী প্রশাসনের কোনো সক্রিয় গোষ্ঠী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং তাদের পালাতে সহযোগিতা করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গত ১৭ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস প্রত্যক্ষ করেছে। এখন আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ায় তারা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগেরই কিছু বুদ্ধিজীবী এখন স্বীকার করছেন- এই সন্ত্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের শেষ কবর রচিত হয়েছে।

রাষ্ট্রের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখছি কিছু সন্ত্রাসীকে অর্থ ও নির্দেশনা দিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চলছে। রাষ্ট্র কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেটি আমাদের দেখতে হবে। সন্ত্রাসীরা কখনো রাষ্ট্রের চেয়ে বড় হতে পারে না।

পুলিশ ও প্রশাসনিক সংস্কারের প্রশ্ন তুলে বিএনপি নেতা বলেন, আমরা বহুবার বলেছি প্রশাসন ও পুলিশে আওয়ামী লীগের প্রভাব এখনো রয়ে গেছে। আপনারা কী সংস্কার করলেন?  

জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ক্রোধ জাগ্রত হতেই পারে, যার চিত্র আমরা গতকাল রাত থেকে দেখছি। কিন্তু, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। হাদি নিজেও বলেছেন ভাঙচুর বা আগ্রাসনের মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান হবে না। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, চিন্তা ও শিক্ষার মাধ্যমেই এই লড়াই এগিয়ে নিতে হবে।

শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের বিষয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, সুরিটোলা স্কুল ভবন পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এটিকে আরও উন্নত করে কলেজে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে আমি নিজে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী ইনশাআল্লাহ তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো।

তিনি জানান, নির্মাণকাজ চলাকালে শিক্ষার্থীদের মালিটোলা শহীদ জিয়া স্কুলে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে এবং এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে, যাতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের কোনো ভোগান্তি না হয়।

রমনা রেলওয়ে সংক্রান্ত একটি বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত না জানায় এই মুহূর্তে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে, যদি স্কুলের কোনো সম্পত্তি বিনিময়ের প্রশ্ন আসে, তাহলে সরকারের মাধ্যমে স্কুলের স্বার্থ রক্ষায় আমি জোরালো ভূমিকা রাখব।

তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি যতই অপচেষ্টা করুক, সন্ত্রাস দিয়ে রাজনীতি টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ব ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করব।

এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।

শাহবাগ থানার বিএনপি ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম স্বপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নবাবপুর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মামুন আহমেদ, রমনা রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিহির কুমার মজুমদার, শাহবাগ থানা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন মিন্টু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ নাজিবউল্লাহ নাজিব, পরিষদের সদস্য সচিব মতিন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াকুব জাহিদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2